টেস্ট ক্রিকেট থেকে আমিরের অবসরে বিস্মিত নন পাকিস্তান কোচ
দিন চারেক আগে মাত্র ২৭ বছর বয়সে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন পাকিস্তানের তারকা বোলার মোহাম্মদ আমির। এরপর থেকেই নানা ধরণের আলোচনা-সমালোচনা হয়ে আসছে তাকে নিয়ে। ওয়াসিম আকরাম-শোয়েব আক্তার হতে শুরু করে পাকিস্তানের সাবেক অনেক তারকার রোষানলে পড়েছেন তিনি। তবে বিষয়টি স্বাভাবিক ভাবেই নিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধান কোচ মিকি আর্থার।
গত এক বছরেই নাকি টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের চিন্তা করছেন আমির। তাই তার অবসর নেওয়া 'বিস্ময়কর কিছু নয়' আর্থারের জন্য। অনেক দিন থেকেই কাজের চাপে ক্লান্ত ছিলেন আমির। যার কারণে নিজের সেরাটা দিতে পারছিলেন এ পেসার। টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ায় সীমিত ওভারের ক্রিকেটে আরও উজ্জীবিত পারফরম্যান্স করতে পারবেন বলে মনে করেন আর্থার।
ক্রিকেটভিত্তিক ওয়াবসাইট ক্রিকইনফোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আর্থার বলেছেন, 'অনেক দিন থেকেই আমির এ নিয়ে চিন্তা করছিল। আমার সঙ্গে মাঝেমধ্যে এ নিয়ে কথাও বলেছে। তার টেস্ট ক্যারিয়ার তার শরীরে বাড়তি ধকল ছিল। এখানে ম্যানেজমেন্টের কিছু ছিল না, এখানে খেলার ইচ্ছার ব্যাপার ছিল এবং শরীরে কি প্রভাব ভেলে তার উপর। আমার মনে হয় আমির দারুণ একজন বোলার। সে তাই করেছে যা তার কাছে সেরা মনে হয়েছে।'
২০০৯ সালে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল আমিরের। গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথমবার সাদা পোশাকে মাঠে নেমেছিলেন তিনি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে জোহানেসবার্গে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট ম্যাচটি খেলেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। ৩৬ টেস্টে ৩০.৪৭ গড়ে ১১৯ উইকেট নিয়েছেন আমির। ক্যারিয়ারের প্রায় পুরোটাই অ্যাওয়ে ম্যাচে টেস্ট খেলতে হয়েছে আমিরকে। মাত্র ৪টা টেস্ট নিজেদের মাঠে খেলতে পেরেছেন তিনি। তাও দুবাইয়ের মাঠে। অ্যাওয়ে ম্যাচের ধকলও কাটিয়ে উঠতে পারছিলেন না আমির। এটাও তার অবসরের অন্যতম কারণ বলে জানালেন পাকিস্তানি কোচ।
আর্থারের মতে, আমিরের মূল ক্ষতিটা হয়েছে নিষেধাজ্ঞায় থাকা পাঁচ বছরে। ২০১০ সালে লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে নিষিদ্ধ হন তিনি। বয়স কম থাকায় তাকে যেতে হয়েছিল সংশোধন কেন্দ্রেও। শাস্তির মেয়াদ শেষে ২০১৬ সালের জুলাইতে ফের টেস্ট ক্রিকেটে ফেরেন তিনি। স্পট ফিক্সিংয়ের আগ পর্যন্ত ১৪ টেস্টে ২৯.০৯ গড়ে ৫১ উইকেট নিয়েছিলেন আমির। ফেরার পর ২২ টেস্টে ৩১.৫১ গড়ে তার উইকেটসংখ্যা ৬৮টি।
নিষিদ্ধ সেই পাঁচ বছর নিয়ে আর্থার বলেন, 'সে পাঁচ বছর খেলা থেকে বাইরে ছিল। আমাদের এটা ভুলে গেলে চলবে না। সে পাঁচ বছরে সে কিছুই করে নাই। সারাদিন ব্যাপী ক্রিকেট খেলার কঠোরতা তাই তার শরীর নিতে পারছে না। তবে সে পাঁচ বছরে সে নিজের যত্ন নিতে পারত। তারই এটা বোঝা উচিত ছিল। কিন্তু আমি বুঝতে পাড়ি তার জীবন তখন কেমন ছিল। সেটা কঠিন সময় ছিল। আমি সবই বুঝি। তার জন্য আমার মনে কোমল একটা জায়গা আছে। একজন ক্রিকেটার ও মানুষ হিসেবে আমি সবসময় তার তারিফ করি।'
তবে আমির টেস্ট ক্রিকেট খেললে খুব খুশি হতেন আর্থার, 'সে টেস্ট না খেলায় অবশ্যই আমি হতাশ। খেললে আমি খুব খুশি হতাম কিন্তু তার মন এবং শরীর এ সংস্করণে নেই।'
Comments