‘আবার ক্রিকেটে ফেরা হবে কি-না, জানতাম না’
১৬ মাস পর সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ফিরেই ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংস খেলেছেন স্টিভেন স্মিথ। তার চোখ ধাঁধানো ব্যাটিং অস্ট্রেলিয়াকে যেমন বিপদ থেকে উদ্ধার করেছে, তেমনি ক্রিকেটপ্রেমীদের দিয়েছে নিখাঁদ বিনোদন। ক্যারিয়ারের কালো অধ্যায় পেরিয়ে প্রত্যাবর্তনের গল্পটা এর চেয়ে ভালো কি আর হতে পারত? ১৪৪ রানের স্মরণীয় ইনিংসটি খেলার পর স্মিথ অবশ্য স্বীকার করতে পিছপা হননি যে, বল টেম্পারিংয়ের ঘটনার পর তিনি সংশয়ে পড়ে গিয়েছিলেন। তার মনের মধ্যে এই দুশ্চিন্তা উঁকি দিয়েছিল যে, আর হয়তো ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন না।
২০১৮ সালের মার্চে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কেপটাউন টেস্টে বল টেম্পারিংয়ের অভিযোগ আনা হয় স্মিথের বিরুদ্ধে। এরপর দোষী প্রমাণিত হন তিনি। পান এক বছরের নিষেধাজ্ঞা। শাস্তি চলাকালে চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) খেলতে গিয়ে পড়েন কনুইয়ের চোটে। করাতে হয় অস্ত্রোপচার। এরপরের সময়টাই সবচেয়ে কঠিন ছিল স্মিথের জন্য। জীবনে প্রথম ও ওই একবারই তিনি ক্রিকেট খেলার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে শুরু করেছিলেন। তবে সৌভাগ্যজনকভাবে ক্রিকেটে ফেরা-না ফেরা নিয়ে তার শঙ্কাটা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষে ইংল্যান্ডের মাটিতে বিশ্বকাপ আসরে গায়ে চড়ান অস্ট্রেলিয়ার রঙিন পোশাক। আর ইংলিশদের বিপক্ষেই মর্যাদার অ্যাশেজ সিরিজ দিয়ে ফিরেছেন টেস্ট আঙিনায়।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) এজবাস্টনে সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম দিনে এক পর্যায়ে ১২২ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল অসিরা। সেখান থেকে পিটার সিডল ও নাথান লায়নের সঙ্গে দুটি জুটি গড়ে দলকে ২৮৪ রান পর্যন্ত টেনে নিয়ে যান তিনি। ২১৯ বল মোকাবেলায় করেন ১৪৪ রান। ইনিংসটিকে সাজান ১৬ চার ও ২ ছক্কা দিয়ে।
প্রথম দিনের খেলা শেষে স্মিথ বলেছেন, ‘(বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত) গেল ১৫ মাসে বেশ কয়েকবার এমন হয়েছে যে, আমি জানতাম না আবার কখনও ক্রিকেটে ফিরতে পারব কি-না। এক সময় তো আমি খেলাটার প্রতি কিছুটা ভালোবাসাও হারিয়ে ফেলেছিলাম। বিশেষ করে যখন আমার কনুইয়ের অস্ত্রোপচার হয়েছিল। এটা খুবই অদ্ভুত বিষয় ছিল। তবে যেদিন আমার কনুইয়ের বন্ধনী খুলে ফেলা হলো, আমি আবার ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা ফিরে পেলাম। আমি জানি না এটা কী ছিল। এটা ছিল একটার তাড়নার মতো যে, আমি খেলতে চাই, আমি অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলতে চাই, আর হয়তো আমি মানুষকে গর্বিত করতে চাই এবং যা ভালোবাসি তা-ই করতে চাই।’
তিনি যোগ করেন, ‘ভাগ্যক্রমে ভালোবাসাটা ফিরে এসেছে আর এই অবস্থানে আসতে পেরে আমি কৃতজ্ঞ। আবারও অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলছি এবং যা ভালো লাগে তা করছি।’
Comments