কে হচ্ছেন বাংলাদেশের কোচ?
বাংলাদেশের কোচ হতে দক্ষিণ আফ্রিকান রাসেল ডমিঙ্গো সাক্ষাৎকার দিয়ে গেছেন। বিসিবি জানিয়েছে, তাদের হাতে আছে এমন হাইপ্রোফাইল আরও দুজন। সর্বোচ্চ পর্যায়ে কোচিংয়ের অভিজ্ঞতা থাকা এমন তিনজন থেকেই জাতীয় দলের জন্য কোচ বেছে নেওয়া হবে। বাকি দুজন কে? আলোচনায় আছে কয়েকটি নাম।
বুধবার (৭ অগাস্ট) বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপনের বেক্সিমকো কার্যালয়ে গিয়ে নিজের কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক কোচ রাসেল। তবে জানা গেছে, কেবল প্রধান কোচ নয়, রাসেল বিবেচনায় আছেন এইচপি (হাইপারফরম্যান্স) দলের দায়িত্ব নেওয়ার জন্যও। প্রধান কোচ হিসেবে তাকে না নিলেও অন্য পদে তাই নিয়োগ পেতে পারেন তিনি।
বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস সভা শেষে জানান, রাসেলের উপস্থাপনায় তারা খুশি। তবে কোন ধাপের কোচের জন্য তিনি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তা খোলাসা করেননি, ‘উনি (রাসেল) বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে কী চিন্তা করেন, এ বিষয়ে তার ভাবনা পরিবেশন করেছেন। কিভাবে উনি কাজ করতে পারবেন, পারফরম্যান্স কীভাবে হবে- সবকিছু নিয়ে উনার সঙ্গে কথা হয়েছে। উনি খুবই পেশাদার কোচ। দক্ষিণ আফ্রিকায় দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন। সব মিলিয়ে তিনি যোগ্যতাসম্পন্ন।’
বিসিবির এই পরিচালক জানান, তাদের হাতে আছেন আরও দুজন, যারা শীঘ্রই সাক্ষাৎকার দেবেন, নিজেদের কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করবেন, ‘এটাই শেষ নয়। আরও কয়েকজন আছে। তাদের সঙ্গেও আমরা কথা বলব। আমাদের হাতে তিনজনের নাম আছে। আরও দুজন বাকি। এই তিনজনের মধ্য থেকেই আমরা কাউকে বেছে নেব।'
রাসেল ছাড়া বাকি দুজন কে? সম্প্রতি শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বরখাস্ত করেছে চণ্ডিকা হাথুরুসিংহেকে। বাংলাদেশের সাবেক এই কোচ নানান বিতর্কে জড়িয়েছেন নিজ দেশে, তার বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়াও তিক্ততার মধ্য দিয়ে। এতকিছুর পরও বিসিবির সংক্ষিপ্ত তালিকায় তার নামও আছে আলোচনায়।
বিসিবির দায়িত্বশীল সূত্রের খবর, বেকার হয়ে পড়ায় বাংলাদেশের কোচের পদে না-কি ফিরতে ভীষণ আগ্রহী হাথুরুসিংহে নিজেও। বিসিবির ভেতর অবশ্য এই নিয়ে আছে দোলাচল, আছে মতদ্বৈধ। বোর্ডের উচ্চ পর্যায়ের কয়েকজন পরিচালক একমত হলেই তবে সাক্ষাৎকার দিতে পারেন হাথুরুসিংহে।
আরও যে দুজনের নাম আসছে আলোচনায়, তাদের একসময় কোচ হিসেবে পেতে মরিয়া ছিল বিসিবি। হাথুরুসিংহে চলে যাওয়ার পর ইংলিশ কোচ পল ফার্ব্রেসের সঙ্গে কথা প্রায় পাকাপাকিই করে ফেলেছিল বোর্ড। কিন্তু পারিবারিক কারণে ‘না’ বলে দেন তিনি। পরে উপায়ান্তর না দেখে স্টিভ রোডসকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
জানা গেছে, এই ইংলিশ কোচের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ হচ্ছে বিসিবির। বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে বসবাসের ব্যাপারে ছাড় দিলে তবেই ইতিবাচক কিছু হতে পারে তার ব্যাপারে। উপমহাদেশের সংস্কৃতিতে অবশ্য কাজের অভিজ্ঞতা আছে ফার্ব্রেসের। শ্রীলঙ্কাকে ২০১৪ সালের টি-টোয়েন্টি আর এশিয়া কাপ জিতিয়েছিলেন তিনিই।
আরেকজনের নাম আসছে জোর আলোচনায়। যিনিও নিজে পারিবারিক কারণে সফল আন্তর্জাতিক কোচিং ক্যারিয়ার ছেড়ে দেন। নিউজিল্যান্ডের সাবেক কোচ মাইক হেসনকে বলা হয় কিউইদের সবচেয়ে সফল কোচ। কিন্তু পরিবারকে সময় দিতে ২০১৫ বিশ্বকাপের পর আন্তর্জাতিক কোচিং ছেড়ে দেন তিনি। এরপর আইপিএলের দল কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে কাজ করেছেন। দুই বছরের সেই চুক্তিও শেষ তার। ফাঁকা হয়ে পড়া হাইপ্রোফাইল এই কোচকে পেতে বিসিবির আগ্রহই বেশি। তবে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের তুমুল খ্যাতি-প্রচারের হাতছানিতে তিনি পূর্ণ মেয়াদে কোচ হতে রাজি হবেন কি-না তার ওপরও নির্ভর করছে অনেক কিছু।
এছাড়াও সম্প্রতি পাকিস্তানের প্রধান কোচের পদ হারানো মিকি আর্থারও খুঁজছেন নতুন ঠিকানা। তবে তার সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ।
তবে সিদ্ধান্ত যেমনই হোক, আগামী ১০-১২ দিনের ভেতর সবকিছু চূড়ান্ত করার কথা জানিয়েছে বিসিবি। আসছে সেপ্টেম্বরে আফগানিস্তান ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নতুন কোচের অধীনেই বাংলাদেশের খেলতে নামার সম্ভাবনা প্রবল।
Comments