ঈদ শেষে কাজে যোগ দিতে গিয়ে দেখা গেল কারখানা বন্ধের নোটিশ

গাজীপুরের শ্রীপুরে তৈরি পোশাক কারখানা ক্যাসিওপিয়া ড্রেস লিমিটেড মঙ্গলবার আকস্মিকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

কারখানা এলাকার লোকজন জানান, ঈদ ছুটি শেষে শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিতে এসে কারখানার প্রধান ফটকে বন্ধের বিজ্ঞপ্তি দেখে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তারা বাৎসরিক ও অর্জিত ছুটির বকেয়া দাবি করতে থাকে। শিল্প পুলিশ তাদেরকে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছে।

শ্রমিকেরা জানায়, কারখানা কর্তৃপক্ষ দুই বছরের অর্জিত ও বার্ষিক ছুটি বকেয়া রেখেছে। আন্দোলনের মুখে গত দুই মাস আগে এক বছরের অর্জিত ছুটির বকেয়া পরিশোধ করে। এখনও এক বছরের অর্জিত ও বার্ষিক ছুটির ভাতা বকেয়া রয়েছে। আগামী ২৯ আগস্ট ওই বকেয়া ভাতা পরিশোধের কথা রয়েছে।

গত ১০ আগস্ট ঈদের ছুটি শুরু হয় এই কারখানায়। কারখানার শ্রমিক ওয়াসীম, এমদাদুল, মনোয়ারাসহ অন্যরা জানায়, ছুটি কাটিয়ে ২০ আগস্ট মঙ্গলবার সকাল আটটায় কাজে যোগ দিতে এসে কারখানা চত্বরে সশস্ত্র পুলিশ সদস্যদের দেখা যায়। প্রধান ফটকে কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের বিজ্ঞপ্তি সাঁটানো রয়েছে। কোনো পূর্ব নোটিশ ও বকেয়া পরিশোধ না করেই নিয়মিত উৎপাদনে থাকা কারখানাটি হঠাৎ ছুটি ঘোষণা করায় বিস্মিত হয়েছি।

শ্রমিকেরা জানায়, কর্তৃপক্ষ শিল্প পুলিশের উপস্থিতিতে বিকেল ৩টায় বকেয়া ভাতা পরিশোধ করার আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু বিকেল ৫টায় আশ্বাস অনুযায়ী বকেয়া না পাওয়ায় তাদের ফিরে যেতে হয়েছে।

কারখানার প্রশাসনিক ব্যবস্থাপক রিপন হালদার জানান, কাজের অর্ডার সংগ্রহ করতে না পেরে কর্তৃপক্ষ নিরুপায় হয়ে কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করেছে। তবে শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের পাওনা যথাসময়ে পরিশোধ করা হবে।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক চন্দন কুমার চক্রবর্তী জানান, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কারখানা এলাকায় সকাল থেকেই শিল্প পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের সকল প্রকার পাওনা পরিশোধ করবেন।

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ প্রসঙ্গে

"প্রকাশিত সংবাদে শ্রমিকদের বকেয়া প্রাপ্য পরিশোধ না করেই কারখানাটি বন্ধ করা হয় বলা হয়েছে যা একেবারেই ভিত্তিহীন। প্রকাশিত অসংবাদে শ্রমিকদের এক বৎসরের অর্জিত ছুটি ও ভাতা বকেয়া রয়েছে মর্মে উল্লেখ করা হয় যাহা সঠিক নয়। বর্তমানে উল্লেখিত ক্যাসিওপিয়া ড্রেস লি. মাওনা শ্রীপুর, গাজীপুর এ কোনো কাজের অর্ডার না থাকায় কর্তৃপক্ষ বিজিএমইএ'র সঙ্গে আলোচনাক্রমে কারখানাটি বন্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং শ্রম আইন ২০০৬ এর ২৮ ক ধারা এবং শ্রম বিধিমালা ২০১৫ এর ৩২ বিধি অনুযায়ী গতকাল ২০ আগস্ট তারিখে বন্ধের নোটিশ প্রদান করেন। কারখানা বন্ধের প্রেক্ষিতে বিধি মোতাবেক শ্রমিক কর্মচারীদের ন্যায্য পাওনা সঙ্গে সঙ্গে পরিশোধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বিষয়টি বিজিএমইএ, কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন, শ্রমিক প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অবহিত করা হয়। কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করতে সম্মত থাকায় নোটিশ প্রদানের পর সংবাদে উল্লিখিত শ্রমিকদের "বিক্ষুব্ধ" হওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিক কর্মচারী উভয়েই বিজিএমইএ'র অফিসে একটি বৈঠকের মাধ্যমে ঐকমত্যের ভিত্তিতে তাদের পাওনা নির্ধারণের বিষয়ে একমত পোষণ করেন। তার প্রেক্ষিতে একই দিন বিকেল ৩টায় বিজিএমইএ'র উত্তরা অফিসে সমঝোতা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিজিএমইএ, কারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর, শ্রমিক প্রতিনিধি (২০ জন) ও কারখানা কর্তৃপক্ষ উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি গাজীপুর জেলা পুলিশ ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশকে অবহিত করা হয়।

সভায় পাওনা পরিশোধের ব্যাপারে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সে অনুসারে বিকেল ৫টা থেকে কারখানা চত্বরে ও বিজিএমইএ অফিসে শ্রমিক কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধ করা হয়।"

Comments

The Daily Star  | English
bangladesh bank buys dollar

BB buys $313m more from 22 banks

The cut-off rate was Tk 121.5 per US dollar

4h ago