চাতাল শ্রমিকদের বঞ্চনার জীবন

Chatal workers
লালমনিরহাট সদর উপজেলার উত্তর সাপ্টানা গ্রামে ধান শুকাচ্ছেন চাতাল শ্রমিকরা। ছবি: স্টার

তপ্ত রোদে মানুষ যখন বাইরে যেতে ভয় পান বা ছায়ায় বসে বিশ্রাম নেন। তখনই একদল শ্রমিককে খালি পায়ে ইট-পাথরের চাতালে ধান শুকাতে দেখা যায়। এরা হলেন চাতাল শ্রমিক। প্রচণ্ড রোদ মাথায় নিয়ে দিনভর শ্রম দিতে হয় তাদের। কিন্তু, আয়-রোজগার যা হয় তা দিয়ে সংসার চালানো কষ্টকর।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার উত্তর সাপ্টানা গ্রামের চাতাল শ্রমিক নুর ইসলাম (৬৮) জানান, পরিশ্রমে ঘাম ঝরে শরীর থেকে। ভিজে যায় জামা-লুঙ্গি। গামছা দিয়ে মুখ মুছতে হয় বার বার।

শরীরের ঘাম শরীরে মিলে যায়। ক্লান্ত-শ্রান্ত তবুও ধান শুকাতে ব্যস্ত চাতাল শ্রমিকরা। “কখনো কখনো শরীর জিরাতে চলে যাই গাছতলায়। এতো শ্রম দিয়ে দিন শেষে আসে মাত্র চারশো টাকা,” জানান চাতাল শ্রমিক ইউসুফ আলী (৪৮)।

চাতাল শ্রমিক আজাহার আলী (৫৫) জানান, চাতাল শ্রমিকদের আসতে হয় ভোরবেলা। বাড়িতে ফিরতে হয় রাত ৯টা বা ১০টার দিকে। ভোরে ধান সিদ্ধ করা হয়। সকাল থেকে ধান শুকানো আর সন্ধ্যায় ধান ঘরে তোলা ও মাপযোগ করার কাজ করতে হয়। জেলার ৫০০টি ধান চাতালের প্রত্যেকটিতে ৫ থেকে ১২ জন করে শ্রমিক রয়েছেন। সবকটি চাতালের দৃশ্যই এমন বলে জানালেন তিনি।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার নয়ারহাট এলাকায় চাতাল মালিক আব্দার হোসেন জানান, আসলে কাজের চেয়ে শ্রমিকের সংখ্যা বেশি হওয়ায় তারা স্বল্পমূল্যে শ্রমিক পাচ্ছেন। শ্রম অনুযায়ী চাতাল শ্রমিকরা পারিশ্রমিক পান না এটা সঠিক। কিন্তু, চাতাল মালিকরাও খুব ভালো ব্যবসা করতে পারছেন না। “অন্যান্য চাতাল মালিকের সঙ্গে কথা বলে চেষ্টা করবো কীভাবে চাতাল শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানো যায়,” এমন প্রতিশ্রুতি দিলেন তিনি।

ঘর্মাক্ত শ্রমের চাতাল শ্রমিকরা চিরকালই ন্যায্য মজুরি বঞ্চিত। শ্রম অনুযায়ী পারিশ্রমিকের দাবি করে আসছেন তারা। কিন্তু, আজো মিলেনি ন্যায্য মজুরির ইতিবাচক কোনো সাড়া।

এস দিলীপ রায়, দ্য ডেইলি স্টারের লালমনিরহাট সংবাদদাতা

Comments

The Daily Star  | English

‘Use firearms in self-defence’

After a police officer was attacked during a raid in the port city, Chattogram police chief Hasib Aziz told officers to be ready to use arms for self-defence.

22m ago