স্টোকসের ‘বিধ্বংসী’ ইনিংসে ‘টুপি খোলা অভিবাদন’
টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ইনিংস খেলেছেন বেন স্টোকস। ২১৯ বলে অপরাজিত ১৩৫ রান করে দলকে পাইয়ে দিয়েছেন ১ উইকেটের নাটকীয় জয়। তার বীরত্বে ৩৫৯ রান তাড়া করে জিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অ্যাশেজ সিরিজে ১-১ ব্যবধানে সমতায় ফিরেছে ইংল্যান্ড। আর অনবদ্য ইনিংস খেলা স্টোকস ভেসে যাচ্ছেন প্রশংসার জোয়ারে, যেখানে যোগ দিয়েছেন দুই দলের অধিনায়কও।
হেডিংলি টেস্টের চতুর্থ দিনে রবিবার (২৫ অগাস্ট) শেষ উইকেটে ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ৭৩ রান। স্টোকস তখন ১৭৪ বলে ৬১ রানে ব্যাট করছিলেন। এমন সংগ্রামী ব্যাটিং তার নামের সঙ্গে মেলানো যদি কঠিন বলে মনে হয় তবে জেনে রাখতে পারেন, আগের দিনের ৫০ বলে ২ রান নিয়ে খেলতে নেমেছিলেন তিনি। আর ৬৭ বলে তার রান ছিল ৩। প্রথম বাউন্ডারির জন্য তাকে অপেক্ষা করতে হয় ৭৪তম বল পর্যন্ত! আর ৮০ বল শেষে তার রান ছিল ৭। এরপর স্টোকস করেন স্বভাবসুলভ ব্যাটিং। কিন্তু ২৮৬ রানে ইংল্যান্ডের নবম উইকেটের পতন হলে স্টোকসের লড়াইটা বিফল হবে, এমনটাই ধরে নিতে হচ্ছিল। তবে তিনি হারার আগেই হার মানবেন কেন?
স্টোকস মানেননি। গেল মাসে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ের চিত্রনাট্য তৈরি হয়েছিল যার হাতে, তিনি আরেকবার জ্বলে উঠলেন। দশম উইকেটে জ্যাক লিচকে নিয়ে গড়লেন অবিস্মরণীয় কীর্তি। যেখানে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৭৩ রান, সেখানে তিনি চোখ ধাঁধানো ব্যাটিং করায় ইংলিশরা পায় ৭৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি। তাও মাত্র ১০.১ ওভারে। সেখানে লিচের অবদান ১৭ বলে ১ রান, আর বাকি সবটা স্টোকসের (৪৪ বলে ৭৪ রান)! তাতে অসিদের বিস্ময়ের ঘোরে রেখে দ্বিতীয় ইনিংসে ৯ উইকেটে ৩৬২ রান করে জিতেছে ইংল্যান্ড। টেস্ট ক্রিকেটে তাদের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড এটি। আগের রেকর্ডটি হয়েছিল অ্যাশেজেই, ১৯২৮ সালে।
ম্যাচ শেষে স্টোকসের ইনিংসটিকে ‘বিধ্বংসী’ বলে উল্লেখ করেছেন ইংলিশ দলনেতা জো রুট। সতীর্থের বন্দনায় তিনি জানিয়েছেন, ‘তিনি (স্টোকস) দারুণ দক্ষতা, সাহস আর নিজের সামর্থ্যের ওপর বিশ্বাস দেখিয়েছেন। তিনি যে প্রশংসা পাচ্ছেন, তার তা প্রাপ্য।’
অসি অধিনায়ক টিম পেইন তো স্টোকসের ইনিংসের গায়ে ‘সেরা’ তকমাই জুড়ে দিয়েছেন, ‘কখনও কখনও আপনাকে টুপি খোলা অভিবাদন জানাতে হয়। বেন স্টোকস একটি অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলেছে। আমি এখন পর্যন্ত যত টেস্ট ইনিংস দেখেছি, তার মধ্যে এটাই সেরা। আর বাকিরাও সেটাই বলছে।’
Comments