আসামের নাগরিক তালিকা থেকে বাদ ১৯ লাখ
ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের চূড়ান্ত জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) থেকে বাদ পড়েছেন প্রায় ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন মানুষ।
আজ (৩১ আগস্ট) সকাল ১০টায় অনলাইনে ও এনআরসি সেবাকেন্দ্রে এই তালিকা প্রকাশ করা হয়। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, যাদের কাছে ইন্টারনেট নেই তারা তথ্য সেবা কেন্দ্রে গিয়ে এ তালিকা দেখতে পারবেন।
এনআরসি কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, চূড়ান্ত তালিকায় মোট আবেদনকারীদের মধ্যে ৩ কোটি ৩০ লাখের মধ্যে নাগরিক হিসেবে স্থান পেয়েছেন ৩ কোটি ১১ লাখ ২১ হাজার ৪ জন।
এদিকে, এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশকে কেন্দ্র করে গোটা আসাম রাজ্য জুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। গুয়াহাটিসহ বিভিন্ন স্থানে ৪ জনের বেশি মানুষের একসঙ্গে যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এর আগে, এনআরসির খসড়া তালিকা প্রকাশকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়েছিলো আসাম। সে বিষয়টি মাথায় রেখে ৬০ হাজার পুলিশ ও ২০ হাজার সিআরপিএফ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
এনআরসি নিয়ে কোনো গুজব বা বিভ্রান্তি না ছড়াতে বলেছে আসামের পুলিশ। জনগণের সুরক্ষাই তাদের কাছে অগ্রাধিকার বলে জানানো হয়েছে।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল রাজ্যের জনগণকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে তিনি এনআরসি নিয়ে রাজ্যবাসীকে অহেতুক ভীতিগ্রস্ত না হয়ে সর্বাবস্থায় শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেছেন, “যাদের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়বে তাদের বিদেশি বলে বিবেচনা করা হবে না। তারা ভারতীয় নাগরিক প্রমাণের সুযোগ পাবেন।”
দেশটির গণমাধ্যম বলছে, এনআরসির চূড়ান্ত তালিকায় নাম না থাকলেই নাগরিকরা বিদেশি বলে বিবেচিত হবেন না। এক্ষেত্রে শেষ রায় দেবেন আদালত। এক্ষেত্রে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আপিল করা যাবে। এজন্য আবেদনের সময়সীমা ৬০ থেকে বাড়িয়ে ১২০ দিন করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পর্যায়ক্রমে ১ হাজার সেবা কেন্দ্র খোলা হবে। আপাতত ১০০টি সেবা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এনআরসির চূড়ান্ত তালিকায় নাম না থাকলে কেউ ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের পর হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টেও আবেদন করতে পারেন। সেখান থেকে রায় ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত কাউকে ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো হবে না।
এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়া ব্যক্তিদের আইনি লড়াইয়ের জন্য কেন্দ্র সহায়তা করবে। এ ব্যাপারে শাসক বিজেপি ও কংগ্রেসসহ বহু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও এগিয়ে আসার কথা জানিয়েছে।
এর আগে, এনআরসির খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়েছিলো ৪২ লাখ মানুষ, যাদের অধিকাংশ বাংলাভাষী হিন্দু ও মুসলমান।
আরও পড়ুন:
Comments