তাজিয়া মিছিলে রক্তপাতে ডিএমপির নিষেধাজ্ঞা

পবিত্র আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া শোকমিছিলে পাইক অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। সেই সঙ্গে তাজিয়া মিছিলের নিরাপত্তার স্বার্থে ছুরি, তরবারি, বর্শা, বল্লমের মতো সব ধরনের অস্ত্র বহনের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
স্টার ফাইল ছবি

পবিত্র আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া শোকমিছিলে পাইক অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। সেই সঙ্গে তাজিয়া মিছিলের নিরাপত্তার স্বার্থে ছুরি, তরবারি, বর্শা, বল্লমের মতো সব ধরনের অস্ত্র বহনের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

কারবালার বিয়োগান্ত ঘটনা স্মরণ করে তাজিয়া মিছিলে ‘হায় হোসেন’ মাতম তুলে যারা দা, ছোরা, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি নিয়ে নিজেদের শরীর রক্তাক্ত করে তাদের পাইক বলা হয়। পাইকদের বাইরে রখার বিষয়টি তাজিয়া মিছিলের আয়োজক সংস্থা থেকে নিশ্চিত করতে বলেছে ডিএমপি।

আজ সকালে ডিএমপির সদর দপ্তরে এক সমন্বয় সভায় শিয়া নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া এসব কথা জানান।

সভায় জানা যায়, আগামী ০৭ সেপ্টেম্বর ৭ মহরম দুপুর ২ টায় আঞ্জুমানে হায়দারীর আয়োজনে হোসাইনী দালান ইমামবাড়া থেকে শোকমিছিলের মধ্যদিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পবিত্র আশুরা উদযাপন শুরু হবে। এছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে ১০ সেপ্টেম্বর আশুরা পালন শেষ হবে।

আশুরার শোকমিছিল আয়োজক কর্তৃপক্ষের প্রতি আরও একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার। এগুলোর মধ্যে রয়েছে-

১। শোক মিছিলের নির্ধারিত রুট ও সময়সীমা (নির্ধারিত সময়ে শুরু ও শেষ) মেনে চলতে হবে।

২। তাজিয়া শোক মিছিলে কোন পাইক যাতে অংশগ্রহণ করতে না পারে সে বিষয়টি আয়োজক সংস্থা নিশ্চিত করবেন।

৩। তাজিয়া শোক মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের নিশান এর উচ্চতা ১২ ফুট এর বেশি হবে না।

৪। তাজিয়া শোক মিছিল ও অন্যান্য অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে আয়োজক সংস্থা প্রতিটি সমবেত স্থানে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও মনিটরিং এর ব্যবস্থা করবেন।

৫। আয়োজক সংস্থা পর্যাপ্ত সংখ্যক আইডি কার্ডসহ স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ এবং যাচাই বাছাইয়ের জন্য ছবিসহ তালিকা সংশ্লিষ্ট উপ-পুলিশ কমিশনার এর অফিসে প্রেরণ করবেন।

৬। তাজিয়া শোক মিছিলে সকল প্রকার ধারালো অস্ত্র, ধাতব পদার্থ, দাহ্য পদার্থ, ব্যাগ, পোটলা, লাঠি, ছোরা, চাকু, তলোয়ার, বর্শা, বল্লম এবং আতশবাজির ব্যবহার নিষিদ্ধ। পোশাকের সঙ্গেও এগুলো ব্যবহার করা যাবে না।

৭। শোক মিছিল চলাকালীন মূল সড়কের আশপাশের গলি থেকে আগত লোকদের মিছিলে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। মিছিলে অংশগ্রহণ করতে হলে মিছিল শুরুর জায়গায় যেতে হবে।

৮। শোক মিছিল শুরুর জায়গায় প্রবেশের আগে সকলকে আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর ও হাত দিয়ে দেহ তল্লাশি করে ঢুকতে দিতে হবে। তল্লাশি ছাড়া কোনো অবস্থায় কাউকে মিছিলে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। সেক্ষেত্রে পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবী রাখতে হবে।

৯। শিয়া সম্প্রদায়ের প্রতিটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ইমামবাড়া ও শোক মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের সমবেত স্থান ও এর আশপাশের সমস্ত এলাকায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখতে হবে। সন্ধ্যার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করতে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

১০। শোক মিছিলে উচ্চমাত্রার শব্দ তৈরি করার ঢাক-ঢোল, বাদ্য যন্ত্র, পিএ সেট ব্যবহার করা যাবে না।

১১। শোক মিছিল চলাকালীন মিছিলের মধ্যে কোনো গ্যাপ সৃষ্টি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

১২। তাজিয়া মিছিলে পাঞ্জা মেলানোর সময় শক্তি প্রয়োগ করে ভীতিকর পরিস্থিতি ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা তৈরি করা যাবে না।

১৩। শোক মিছিল ও আশুরা কেন্দ্রিক অনুষ্ঠানে কাউকে চাদর গায়ে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

10h ago