চাপেই থাকল বাংলাদেশ
আগের দিন তাইজুল ইসলাম জানিয়েছিলেন ১০ রানেই আফগানদের শেষ ৫ উইকেট ফেলে দিতে চাইবেন তারা। তা পারা যায়নি। শেষ ৫ উইকেট নিয়ে আরও ৭১ রান যোগ করেছে রশিদ খানের দল। তবে প্রথম সেশনেই ওদের অলআউট করে দেওয়ায় থাকত পারত স্বস্তি, কিন্তু ব্যাট করতে নেমে সাদমান ইসলাম শুরুতেই ফিরে যাওয়ায় আপাতত হাঁসফাঁস অবস্থা বাংলাদেশের।
টার্নিং উইকেটে আড়াইশো রানই অনেক বড় মনে করা হচ্ছিল ম্যাচের শুরুতে। শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামে আফগানিস্তান প্রথম ইনিংসে করল ৩৪২ রান। সময়ের সঙ্গে ভাঙ্গতে থাকা উইকেটে এই রান নিয়ে খুশিই হওয়ার কথা তাদের। তাদের স্বস্তি বাড়িয়ে দ্বিতীয় দিনের লাঞ্চের আগে ৪ ওভার ব্যাট করে ১ উইকেট হারিয়ে ১ রান তুলেছে বাংলাদেশ।
আফগানদের বেশ ভালো রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে একদম প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ওপেনার সাদমান ইসলাম পেসার ইয়ামিন আহমেদজাইর বেরিয়ে যাওয়া বলে ব্যাট ছুঁইয়ে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। বাংলাদেশ কোনো পেসার না খেলালেও এই আফগান পেসার তার দুই ওভারে বেশ ভুগিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের।
আগের দিনের ৫ উইকেটে ২৭১ রান নিয়ে নেমে আর কতদূর যেতে পারে আফগানিস্তান তাই দেখার ছিল। সকালে বাকি সবার বিবর্ণ বোলিংয়ের মধ্যে কেবল ঝলমলে ছিলেন তাইজুল ইসলাম। ছিলেন বলেই রক্ষা। না হয় সকালের সেশনটাও অনায়াসে পার করে দিত আফগানরা।
তাইজুল শুরু থেকেই চাপে রাখেন আসগর আফগান, আফসার জাজাইকে। জায়গা না দিয়ে বারবার পরীক্ষায় ফেলতে থাকেন দুজনকেই। নব্বইয়ের ঘরে পৌঁছে যাওয়া আসগর তাইজুলের চাপেই অস্থির হয়ে উঠছিলেন। কিছুটা মেলে ধরতে স্লগ সুইপ করতে গিয়েছিলেন। টার্ন হতে থাকা বল ব্যাটে উপরের দিকে লেগে উঠে যায় আকাশে।
৯২ রানে শেষ হয় আসগরের দৌড়। আগের দিনের আরেক অপরাজিত ব্যাটসম্যান আফসার জাজাইকে তাইজুল ফিরিয়েছেন দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে। মিডল স্টাম্প বরাবর বল ফেলে টার্ন করিয়ে কেড়ে নিয়েছেন অফ স্টাম্প।
দুই সেট ব্যাটসম্যান দ্রুত ফিরলেও তিনশোর ভেতর আটকানো যায়নি আফগানদের। অধিনায়ক রশিদ খান আগ্রাসী ব্যাট চালিয়ে বাড়িয়ে নিয়েছেন মহাগুরুত্বপূর্ণ কিছু রান। অবশ্য তাতে অবদান আছে মেহেদী হাসান মিরাজেরও। প্রথম দিনের মতো এদিন সকালেও মলিন থাকলেন এই অফ স্পিনার। আগের দিন চাপ আলগা করা বল দিয়েছিলেন কম, এদিন ক্রিজে আসা রশিদকে আলগা বল উপহার দিয়ে থিতু হতে সহায়তাই করেন তিনি।
টেল এন্ডার ছাঁটতে এসে অধিনায়ক সাকিব ফেরান কাইস আহমেদকে। ইয়ামিন আহমেদজাইকেও ফেরান তিনি। তবে আফগান অধিনায়ক রশিদ আগ্রাসী মেজাজে খেলে তুলে নেন টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি। ৬১ বলে ৫১ করা রশিদকে আউট করে ইনিংস মুড়িয়ে দেন পুরোটা সময় মলিন থাকা মিরাজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
(দ্বিতীয় দিন লাঞ্চ পর্যন্ত)
আফগানিস্তান: ১১৭ ওভারে ৩৪২ (ইব্রাহিম ২১, ইহসানুল্লাহ ৯, রহমত ১০২, শহিদি ১৪, আসগর ৯২, নবি ০, আফসার ৪১, রশিদ ৫১, কাইস ৯, ইয়ামিন ০, জহির ০*; তাইজুল ৪/১১৬, সাকিব ২/৬৪, মিরাজ ১/৭৩, নাঈম ২/৪৩, মাহমুদউল্লাহ ১/৯, সৌম্য ০/২৬, মুমিনুল ০/৯, মোসাদ্দেক ০/১)
বাংলাদেশ: ৪ ওভারে ১/১ (সাদমান ০, সৌম্য ব্যাটিং ০*, লিটন ব্যাটিং ১*; ইয়ামিন ১/১, নবি ০/০)।
Comments