ভারতে চন্দ্রাভিযান রাজনীতি
চাঁদের মাটিতে নামার কয়েক সেকেন্ড আগেই নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে ভারতের পাঠানো মহাকাশ যান ‘চন্দ্রযান-২’ এর। শুক্রবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।
ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ইসরো) জানিয়েছে, একেবারে শেষ মুহূর্তে অবতরণকারী যান ‘বিক্রম’ এর সঙ্গে নিয়ন্ত্রণকক্ষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। প্রথমবারের মতো চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে এই রোবোটিক গবেষণা যানটির নামার কথা ছিলো।
ইসরো বলছে, “চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে ২ দশমিক ১ কিলোমিটার উচ্চতায় থাকা পর্যন্ত বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ ছিলো। তারপরে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।”
দেশটির মহাকাশ বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, এই মিশনটিকে এখনই ব্যর্থ বলা যাচ্ছে না। ল্যান্ডারটি আবার সংযুক্ত করা যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ল্যান্ডার ব্যর্থ হলেও ‘চন্দ্রযান-২’ এর কক্ষপথটি বেশ স্বাভাবিক রয়েছে এবং সেটি ক্রমাগত চাঁদকে প্রদক্ষিণ করছে। ৯৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে পরিচালিত ‘চন্দ্রযান-২’ মিশন এখনও শেষ হয়ে যায়নি।
আজ (৭ আগস্ট) সকাল আটটায় ইসরোর কার্যালয় থেকে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে বিজ্ঞানীদের উৎসাহিত করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, “আমি আপনাদের সঙ্গে আছি এবং সেই সঙ্গে পুরো দেশ আপনাদের সঙ্গে রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আপনারাই সেই লোক, যারা ভারতমাতাকে গর্বিত করার জন্যই বেঁচে থাকেন। আপনারাই তারা, যারা ভারতমাতাকে গর্বিত করার জন্য লড়াই করে চলেছেন। আপনারা ভারতমাতার প্রতি অনুরাগী, আপনারা নিজেদের সম্পূর্ণ জীবন তার পায়ে সঁপে দিয়েছেন। আপনাদের স্বপ্ন ভারতমাতার গর্ব।”
বেঙ্গালুরুর স্পেস সেন্টার থেকে বেরিয়ে আসার সময় ইসরো চেয়ারম্যান কে সিভান চন্দ্রায়ণকে বেশ কিছুক্ষণ জড়িয়ে ধরে থাকেন নরেন্দ্র মোদি। এসময় তাদের দুজনকেই বেশ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়তে দেখা যায়।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘‘যেনো দেশে এই প্রথম চন্দ্রযান উৎক্ষেপণ করা হলো। যেনো ওরা ক্ষমতায় আসার আগে এমন কোনো মিশন হয়নি। এটা অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের থেকে সবার নজর ঘুরিয়ে দেওয়ার রাজনীতি।”
আসামের নাগরিকপঞ্জিকে (এনআরসি) প্রতিহিংসার নামান্তর এবং দেশের নাজুক অর্থনীতি থেকে সকলের মন অন্য দিকে ঘুরিয়ে রাখার প্রয়াস চলছে উল্লেখ করে মমতা বলেন, “এই প্রতিহিংসার দ্বারা দেশের গণতন্ত্রের ভিত নড়িয়ে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।”
মমতাকে পাল্টা আক্রমণ করে বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্র বলেছেন, “মমতা হয়তো অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কথা বলছেন, তবে আসল ব্যাপারটি হলো ওর চিন্তা প্রক্রিয়াতেই বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।”
তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্যটি আসলে তার হতাশাকেই ফুটিয়ে তুলছে। সমগ্র ভারত যখন উদযাপন করছে, মমতা তখন গুমরে মরছেন! চন্দ্রাভিযানে কেনো রাজনীতিকে টেনে আনা হবে! কোনো কারণ তো নেই।”
Comments