গাজীপুরে বিস্ফোরণে আহত ১৮, তদন্ত কমিটি গঠন

গাজীপুরের বোর্ডবাজার এলাকায় চারতলা ভবনের নিচতলার একটি হোটেলে গ্যাস বিস্ফোরণে ১৮ জন আহত হয়েছেন। এতে পাশের রাঁধুনী রেস্টুরেন্ট এন্ড হোটেলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ঘটনায় পাঁচ-সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
Gazipur explosion
৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, গাজীপুরের বোর্ডবাজার এলাকায় বিস্ফোরণে ১৭ জন দগ্ধ হয়েছেন। ছবি: স্টার

গাজীপুরের বোর্ডবাজার এলাকায় চারতলা ভবনের নিচতলার একটি হোটেলে গ্যাস বিস্ফোরণে ১৮ জন আহত হয়েছেন। এতে পাশের রাঁধুনী রেস্টুরেন্ট এন্ড হোটেলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ঘটনায় পাঁচ-সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আজ ভোররাত ২টার দিকে বিস্ফোরণের এ ঘটনা ঘটে।

সূত্র জানায়, এ ঘটনায় একজন দগ্ধ হয়েছেন তবে তার নাম জানা যায়নি। অন্যান্যরা কংক্রিটের পলেস্তরা ও অন্যান্য কারণে আহত হয়েছেন।

আহতদের মধ্যে যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হলেন: রাশেদ (২২), তুহিন (২২), সুমন (২৬), আল আমীন (৩২), আরিফুল (১৮), জুবায়ের (১৯), নাজমুল (২২), জাহিদ (২৫), আলমগীর (২৭), মারুফ (২৩), মাসুদ (১৮), সুফিয়ান (২২), জাহাঙ্গীর (২৪) এবং শুক্কুর (১৯)।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, ঘটনার সময় বিকট শব্দে মনসুর সুপার মার্কেট ভবনের নীচতলায় কংক্রিটের খুঁটি ও ছাদের পলেস্তরা ভেঙ্গে পড়ায় সব ধরনের আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে যায়। বিস্ফোরণে ভবনের কংক্রিট ছিঁটকে এলে ১২০ ফুট প্রশস্ত মহাসড়কের ডিভাইডার ও আশপাশের স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কংক্রিট ছিঁটকে এলে মহাসড়কের অন্য পাশে বোর্ডবাজার কেন্দ্রীয় মসজিদের মিনারের মাইক ও জানালার গ্লাস ভেঙ্গে যায়। পাশের আল আমীন হার্ডওয়্যার, আইএফআইসি ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, প্যাসিফিক রেস্টুরেন্টের জানালার কাঁচ ও ভবনের পলেস্তরা খসে পড়েছে।

রাঁধুনী রেস্টুরেন্টের মালিক হাবিবুর রহমান ও তৃপ্তি হোটেলের মালিক রেজাউল ইসলাম জানান, তাদের গ্যাস সিলিন্ডার অবিস্ফোরিত অবস্থায় রয়েছে। তারা দাবি করেন, কোনো বিস্ফোরক পদার্থের কারণে এ ঘটনাটি ঘটেছে। ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে গুদাম রয়েছে, যেখানে তাদের প্রতিদিন যাতায়াত রয়েছে।

গাজীপুর দমকল বাহিনীর স্টেশন কর্মকর্তা জাকারিয়া খান জানান, খবর পেয়ে দমকল কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পঙ্গু হাসপাতালে পাঠান। রাঁধুনী রেস্টুরেন্ট ও তৃপ্তি হোটেল থেকেই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত না হলেও বিস্ফোরণটি গ্যাস থেকেই হয়েছে।

তিনি আরো জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে- গ্যাস জমা থাকার কারণে কোনো দাহ্য বস্তুর সংস্পর্শে বিস্ফোরণটি ঘটেছে। কিন্তু অতিরিক্ত কোনো দাহ্য বস্তু না থাকায় আগুন ছড়াতে পারেনি।

প্রত্যক্ষদর্শী রাঁধুনী রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপক সুমন মিয়া জানান, রাত ২টার দিকে বিকট শব্দে এক সেকেন্ডের মধ্যে সবকিছু ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন জানান, “হোটেল দুটির আন্ডারগ্রাউন্ড রয়েছে। আন্ডারগ্রাউন্ডের পাশে স্যুয়ারেজের লাইন রয়েছে। সেখান থেকেও সৃষ্ট গ্যাসের বিস্ফোরণ ঘটতে পারে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে আশঙ্কা করছি।”

গাজীপুর দমকল বাহিনীর সাবেক উপ-সহকারী পরিচালক ও বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ দমকল বাহিনীতে কর্মরত আক্তারুজ্জামান জানান, “ঘটনা শুনে ও টেলিভিশনে দেখে এবং আমার অভিজ্ঞতায় মনে হয়েছে, গ্যাস থেকেই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সিলিন্ডার বিস্ফোরণ না হলেও জমাট গ্যাসে আগুনের সংস্পর্শ পাওয়ায় এ বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।”

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম জানান, ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে পাঁচ-সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা হয়েছে।

Comments