ফের স্মিথের ব্যাটে ঝলক, বিপদে ইংল্যান্ড
পেসারদের কল্যাণে বিশাল লিড পাওয়ার পরও দলের বাকি ব্যাটসম্যানরা যখন সুবিধা আদায় করে নিতে পারছিলেন না, তখন আরেকবার ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠেন স্টিভ স্মিথ। তার কাঁধে চড়ে ইংল্যান্ডকে ৩৮৩ রানের বিশাল লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। লক্ষ্য তাড়ায় শেষ বিকালে উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়েছে স্বাগতিকরা। ম্যাচ বাঁচাতে হলে দারুণ কিছুই করে দেখাতে হবে ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দ্বিতীয় ইনিংসে ২ উইকেটে ১৮ রান নিয়ে ম্যানচেস্টার টেস্টের চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করেছে ইংল্যান্ড। উইকেটে আছেন জো ডেনলি ১০ ও জেসন রয় ৮ রানে। জয়ের জন্য শেষ দিনে তাদের দরকার আরও ৩৬৫ রান। সেটা প্রায় অসম্ভবের পর্যায়ে। তাদের লক্ষ্য থাকবে ড্র। আর জিততে অসিদের চাই ৮ উইকেট।
টেস্টের প্রথম তিন দিনই বাগড়া দিয়েছে বৃষ্টি। তবে এদিন ঠিকঠাকভাবেই খেলা গড়িয়েছে মাঠে। স্কোরকার্ড বলছে, ম্যাচে চালকের আসনে অস্ট্রেলিয়া। সেই সঙ্গে জেতার মতো পরিস্থিতিও তৈরি করে ফেলেছে তারা। এখন পর্যন্ত ইংল্যান্ডের পতন হওয়া ১২ উইকেটের সবগুলোই নিয়েছেন অসি পেসাররা। পঞ্চম দিনেও তাই গতি তারকাদের দিকে তাকিয়ে থাকবে দলটি। এই টেস্ট জিতলেই অ্যাশেজ ধরে রাখা নিশ্চিত হয়ে যাবে অসিদের।
আগের দিনের ৫ উইকেটে ২০০ রান নিয়ে খেলতে নামা ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস শেষ হয় ৩০১ রানে। একসময় ফলোঅনের শঙ্কায় পড়েছিল তারা। জস বাটলার ৪১ রানের ইনিংস খেললে সেই বিপাকে পড়া থেকে উদ্ধার পায় দলটি। অসিদের হয়ে জশ হ্যাজেলউড ৫৭ রানে ৪ ও মিচেল স্টার্ক ৮০ রানে ৩ উইকেট নেন।
১৯৬ রানের লিড পাওয়া অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৪ রানের মধ্যে হারায় ৪ উইকেট। টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো 'পেয়ার' (দুই ইনিংসে শূন্য রানে আউট) এর অভিজ্ঞতা নিতে হয় ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারকে। তিনি এলবিডব্লিউ হন স্টুয়ার্ট ব্রডের বলে। এই নিয়ে চলতি সিরিজে ছয়বার ব্রডের শিকার হন ওয়ার্নার।
আরেক ওপেনার মার্কাস হ্যারিসকেও ফেরান ব্রড। জোফরা আর্চার ছেঁটে ফেলেন মারনাস লাবুশেন ও ট্রাভিস হেডকে। ধুঁকতে থাকা অসিদের উদ্ধারে ফের ঝলক দেখান স্মিথ। পঞ্চম উইকেটে ম্যাথু ওয়েডকে নিয়ে যোগ করেন ১০৫ রান। জুটিতে ওয়েডের অবদান ৭২ বলে ২৭ রান, আর স্মিথের ৭৩ বলে ৭২!
রানের গতি বাড়িয়ে খেলা স্মিথ সাজঘরে ফেরেন ৯২ বলে ৮২ রান করে। এই নিয়ে অ্যাশেজ সিরিজে টানা নয় ইনিংসে পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস খেলেন তিনি। এরপর ওয়েড আউট হন ব্যক্তিগত ৩৪ রানে। অসিদের দলীয় সংগ্রহ যখন ৬ উইকেটে ১৮৬, তখনই ইনিংস ঘোষণা করেন অধিনায়ক টিম পেইন। ততক্ষণে লিড বেড়ে দাঁড়ায় ৩৮২ রান। ইংলিশদের হয়ে আর্চার ৪৫ রানে নেন ৩ উইকেট। ব্রড ২ উইকেট দখল করেন ৫৪ রান দিয়ে।
এরপর ৭ ওভার ব্যাটিংয়ের সুযোগ পায় ইংল্যান্ড। এর মধ্যেই আউট হন প্রথম ইনিংসের দুই হাফসেঞ্চুরিয়ান ররি বার্নস ও দলনেতা জো রুট। কেউই রানের খাতা খুলতে পারেননি। দুজনকেই ফেরান টেস্টের এক নম্বর বোলার প্যাট কামিন্স।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: (চতুর্থ দিন শেষে)
অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস: ৪৯৭/৮ (ডি.)
ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস: (আগের দিন ২০০/৫) ১০৭ ওভারে ৩০১ (স্টোকস ২৬, বেয়ারস্টো ১৭, বাটলার ৪১, আর্চার ১, ব্রড ৫, লিচ ৪*; স্টার্ক ৩/৮০, হ্যাজেলউড ৪/৫৭, কামিন্স ৩/৬০, লায়ন ০/৮৯)
অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংস: ৪২.৫ ওভারে ১৮৬/৬ (ডি.) (ওয়ার্নার ০, হ্যারিস ৬, লাবুশেন ১১, স্মিথ ৮২, হেড ১২, ওয়েড ৩৪, পেইন ২৩*, স্টার্ক ৩*; ব্রড ২/৫৪, আর্চার ৩/৪৫, ওভারটন ০/২২, লিচ ১/৫৮)
ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংস: (লক্ষ্য ৩৮৩) ৭ ওভারে ১৮/২ (বার্নস ০, ডেনলি ১০*, রুট ০, রয় ৮*; কামিন্স ২/৮, হ্যাজেলউড ০/২, লায়ন ০/৫, স্টার্ক ০/৩)।
Comments