এজন্যই কি বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করেছিলেন সাকিব?

১৮.৩ ওভার। সময়ের হিসেবে ৭০ মিনিট। বাংলাদেশের হাতে রয়েছে চার উইকেট। তাই নিয়ে পথটা পাড়ি দিতে হবে। আবার সেখানে পুরোদুস্তর ব্যাটসম্যানও আছেন তিন জন। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান তো সেট হয়েই আছেন। পঞ্চম দিনের উইকেটে কাজটা হয়তো কিছুটা কঠিন। কিন্তু খুব কি কঠিন? তাও আবার ঘরের মাঠে ১৯ বছর ধরে টেস্ট ক্রিকেট খেলা একটি দলের জন্য? কিন্তু বাস্তবে দৃষ্টিতে দেখা গেল, শুধু কঠিনই না, এ যেন অসম্ভব লড়াইয়ের গল্পই ছিল।
আউট হওয়ার পর মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়ছেন সাকিব। ছবি: বিসিবি

১৮.৩ ওভার। সময়ের হিসেবে ৭০ মিনিট। বাংলাদেশের হাতে রয়েছে চার উইকেট। তাই নিয়ে পথটা পাড়ি দিতে হবে। আবার সেখানে পুরোদুস্তর ব্যাটসম্যানও আছেন তিন জন। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান তো সেট হয়েই আছেন। পঞ্চম দিনের উইকেটে কাজটা হয়তো কিছুটা কঠিন। কিন্তু খুব কি কঠিন? তাও আবার ঘরের মাঠে ১৯ বছর ধরে টেস্ট ক্রিকেট খেলা একটি দলের জন্য? কিন্তু বাস্তবে দৃষ্টিতে দেখা গেল, শুধু কঠিনই না, এ যেন অসম্ভব লড়াইয়ের গল্পই ছিল।

আর তখনই উঠে এলো আগের দিনের সংবাদ সম্মেলনের প্রসঙ্গ। যেখানে লাজ-লজ্জা না রেখে সরাসরি প্রার্থনা করেছিলেন বৃষ্টির জন্য। আর কেন করেছিলেন তাই প্রমাণিত হলো। আদতে ১৫ ওভার খেলার মতো যোগ্যতা কিংবা সাহস ছিল না তাদের। সাদা পোশাক ও রঙিন পোশাকে খেলা ক্রিকেটের পার্থক্যই যে পড়তে পারেন না তারা। প্রশ্নবিদ্ধ হলো টাইগারদের টেস্ট খেলার সামর্থ্য নিয়েও। সত্যিই কি এ সংস্করণে খেলার যোগ্যতা তৈরি করতে পেরেছে তারা?

সকাল থেকেই দফায় দফায় বৃষ্টিতে সাকিবের প্রার্থনার প্রায় পুরোটাই পূর্ণ করেছিল ভাগ্যদেবী। শেষ দিকে হয়তো সামর্থ্যের প্রমাণ চেয়েছিলেন সাকিবদের কাছে। মাত্র ৭০ মিনিটের চ্যালেঞ্জ। তখন টাইগারদের জন্য জয় ছিল প্রায় অসম্ভব। ১৮.৩ ওভারে ২৫৫ রান করা হয়তো অনেকটা অসম্ভব টি-টোয়েন্টিতেও। দেখে শুনে কাটিয়ে দেওয়াই শ্রেয় ভাববেন যে কেউ। কিন্তু টাইগারদের মধ্যে সেটা দেখা যায়নি। উইকেটে নেমেই একেক জন তড়িঘড়ি করেছেন রানের জন্য।

সাকিব যে শট করে আউট হয়েছেন তার ব্যাখ্যা কি দিবেন তিনি? উইকেটে সেট হলেও বৃষ্টির কারণে বিরতি পড়েছে। তার উপর তখন রানের কোনো তাড়া ছিল না। বলটিও ছিল অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে। ছেড়ে দিলেই পারতেন। কিন্তু গেলেন কাট করতে। তাতেই ডেকে আনলেন বিপদ। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে সাকিব জানালেন, ৭০ মিনিটের চ্যালেঞ্জে স্নায়ুচাপে ভুগছিলেন। যেটা ভোগেননি দুপুরেও। তাই কাটাতে প্রথম বলটি ভালোভাবে খেলতে চেয়েছিলেন।

অথচ দলের অধিনায়ক সাকিব। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে পুরো বিশ্বেই খেলে থাকেন এ অলরাউন্ডার। হালের টি-টোয়েন্টির ফেরিওয়ালাও বলে থাকেন অনেকে। তিনিই কি না এমন মুহূর্তে স্নায়ুচাপকে জয় করতে পারেননি। সন্দেহাতীতভাবে আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভুগছিলেন তিনি। সেখানে দলের বাকী সবাই কি করে পারবে? তার পরে যারা মাঠে নেমেছেন তাদের তো আর নতুন করে অজুহাত খুঁজতে হবে না।

অন্যদিকে এ স্নায়ুচাপই কতো অনায়াসে সামলে নিল আফগানিস্তান। বৃষ্টির থামার সঙ্গে সঙ্গেই মাঠে নেমে পাইতরা শুরু করে দিয়েছে দলটি। আত্মবিশ্বাসে টগবগে ফুটছিল তারা। প্রতিটি খেলোয়াড়ই বিশ্বাস করেছিল এই ৭০ মিনিটেই জয় নিশ্চিত করতে পারবে তারা। পেরেছেও। কিন্তু মাত্রই তো বছর দুই পার হয়নি সাদা পোশাকে তাদের পথ চলা। সময়ের হিসেব যেমন তেমন, এর মধ্যে খেলেছে মাত্র দুটি টেস্ট।

সেই দলটি সকল স্নায়ুচাপ সামলে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলল দাপটের সঙ্গেই। হয়তো ম্যাচের পঞ্চম দিনে এসে জয় মিলেছে। কিন্তু প্রথম দিন থেকেই তো আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছে দলটি। মাঝে বিচ্ছিন্নভাবে দুই একটি সেশনে রয়েছে টাইগারদের গল্প। অন্যথায় চট্টগ্রাম টেস্টের পুরোটা জুড়েই আফগান রূপকথা। আবার রূপকথা বললেও অন্যায় হয়ে যায় তাদের উপর। কারণ যেভাবে দাপট দেখিয়েছে তারা। জয়টি তাদের প্রাপ্যই ছিল শতভাগ।

Comments

The Daily Star  | English
Pro-Awami League journalist couple arrested

The indiscriminate arrests and murder charges

Reckless and unsubstantiated use of murder charges will only make a farce of the law, not bring justice to those who deserve it.

12h ago