জেতার অবস্থায় থেকে ভারতের কাছে ফাইনালে হারাটা ‘সাইকোলজিক্যাল’
ফাইনালের প্রতিপক্ষ ভারত হলেই যেন ‘জুজুর ভয়’ আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলে বাংলাদেশকে। শিরোপার লড়াইয়ে ভারতীয়দের বিপক্ষে প্রতিবারই হারের তিক্ত স্বাদ নিতে হয়েছে সাকিব আল হাসান-মাশরাফি বিন মর্তুজাদের। মূল দলের পথে হাঁটছে বয়সভিত্তিক দলও। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স তারই প্রমাণ দিচ্ছে। জেতার অবস্থায় থেকেও ফাইনালের মঞ্চে বারবার ভারতের কাছে হারার পেছনে নিজেদের সামর্থ্যের কোনো ঘাটতি দেখছেন না যুব দলের অলরাউন্ডার শামিম হোসেন পাটোয়ারি। বরং তার কাছে গোটা ব্যাপারটাই ‘সাইকোলজিক্যাল’ (মনস্তাত্ত্বিক)।
গেল মাসে ইংল্যান্ডের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলেছিল যুবারা। পুরো আসরে অপরাজিত থাকার পর ফাইনালে ভারতের কাছে হার মানে তারা। আগের দিন যুব এশিয়া কাপের শিরোপাও হাতছাড়া হয় তাদের। শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে ফাইনালে ভারতকে ১০৬ রানে অলআউট করেও জয় পায়নি বাংলাদেশ। হেরে যায় ৫ রানের ব্যবধানে।
ভারতকে অল্প রানে গুটিয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন শামিম। অফ স্পিন বোলিংয়ে জাদু দেখান। তার বোলিং ফিগার ছিল ৬-২-৮-৩! বাঁহাতি পেসার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীও নেন ৩ উইকেট। কিন্তু বোলারদের নৈপুণ্যে পাওয়া সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট হয় ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায়। সেই সঙ্গে আম্পায়ারের একটি সিদ্ধান্তও বাংলাদেশের বিপক্ষে যায়। ফলে ফের রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় যুবাদের।
জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েও তীরে গিয়ে তরী ডোবানোর যে প্রবণতা বাংলাদেশের, সে বিষয়ে রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ১৯ বছর বয়সী শামিম জানান, ‘এটা বলার মতো না। প্রতিবারই এমন হয় যে ভারতের কাছে আমরা জেতা ম্যাচগুলো হেরে যাই। এটা আসলেই অনেক হতাশার বিষয়।’ তিনি যোগ করেন, ‘হয়তো সাইকোলজিক্যাল (মনস্তাত্ত্বিক) কিছু একটা কাজ করে ঐ সময়। তারপরও তো মনে হয়েছে, আমরা ভালো কিছু করতে পারব, ম্যাচটা শেষ করতে পারব। কিন্তু আসলে এটা আর হয় না। এটা আমরা প্রয়োগ করতে পারি না।’
এক পর্যায়ে ৭৮ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশকে টানছিলেন দুই টেলএন্ডার তানজিম হাসান সাকিব ও রাকিবুল হাসান। দলের সংগ্রহ তিন অঙ্কে পৌঁছে দিয়ে লক্ষ্যের কাছাকাছিও নিয়ে যান তারা। কিন্তু তখনই আম্পায়েরের ভুল সিদ্ধান্তে এলবিডাব্লিউ হয়ে মাঠ ছাড়তে হয় সাকিবকে। টিভি রিপ্লেতে পরিষ্কার দেখা যায়, বল তার প্যাডে লাগার আগে ব্যাট ছুঁয়েছিল। গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে বাজে আম্পায়ারিংয়ের শিকার হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন শামিম, ‘আপনারা (দর্শক-সাংবাদিক) সরাসরি খেলা দেখেছেন। আপনারা বুঝতে পেরেছেন ব্যাপারটা। আপনারা আমাদের চাইতেও ভালো দেখেছেন।...ভারতের সঙ্গে খেলা হলেই দুইটা-একটা বাজে আউট দিয়ে খেলাটা শেষ করে দেয় (আম্পায়াররা)।’
চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় ভারতীয় যুবাদের কৃতিত্ব দেন তিনি, ‘ভারত ভালো দল। সবদিক থেকেই ওরা ভালো দল হয়।’ সেই সঙ্গে শিরোপাবঞ্চিত হওয়ায় ভাগ্যকেও দায় দেন শামিম, ‘যদি আগের সিরিজগুলো দেখেন, আমরা অনেক ভালো ক্রিকেট খেলেছি। সবকিছুতেই আমাদের উন্নতি হচ্ছে। এশিয়া কাপেও আমরা ভালো খেলেছি। খারাপ খেলেছি তা না। কিন্তু ম্যাচটি দুর্ভাগ্যবশত হেরে গিয়েছি।’
Comments