আফগানিস্তানকে সঙ্গে নিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ

হারলেও সুযোগ থাকতো। কিন্তু আফগানিস্তানের বিপক্ষে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাসই যে তলানিতে। তাতে ঘরের মাঠে দর্শক হয়ে যাওয়া খুব একটা অবাক হওয়ার কিছুই ছিল না। আশার কথা এমন কিছুই হয়নি। জিম্বাবুয়েকে হারিয়েই কাজটা সেরে রেখেছে বাংলাদেশ দল। তাতে ত্রিদেশীয় ফাইনাল নিশ্চিত হয়েছে। আর বাংলাদেশের জয়ে ফাইনাল নিশ্চিত হয়েছে আফগানিস্তানেরও। স্বাভাবিকভাবেই এতে এক ম্যাচ বিদায় নিতে হচ্ছে জিম্বাবুয়েকে।
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

হারলেও সুযোগ থাকতো। কিন্তু আফগানিস্তানের বিপক্ষে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাসই যে তলানিতে। তাতে ঘরের মাঠে দর্শক হয়ে যাওয়া খুব একটা অবাক হওয়ার কিছুই ছিল না। আশার কথা এমন কিছুই হয়নি। জিম্বাবুয়েকে হারিয়েই কাজটা সেরে রেখেছে বাংলাদেশ দল। তাতে ত্রিদেশীয় ফাইনাল নিশ্চিত হয়েছে। আর বাংলাদেশের জয়ে ফাইনাল নিশ্চিত হয়েছে আফগানিস্তানেরও। স্বাভাবিকভাবেই এতে এক ম্যাচ বিদায় নিতে হচ্ছে জিম্বাবুয়েকে।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার জিম্বাবুয়েকে ৩৯ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নিজের সর্বোচ্চ রানের নতুন রেকর্ড গড়ে টাইগাররা। ৭ উইকেটে ১৭৫ রান তোলে তারা। এর আগে ২০১৩ সালে বুলাওয়েতে ৭ উইকেটে ১৬৮ রান ছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বোচ্চ। শুধু তা-ই নয় জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামেও সর্বোচ্চ রানের নতুন রেকর্ডও গড়েন মাহমুদউল্লাহরা। এর আগে ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কার এ মাঠে ৭ উইকেটে ১৬৬ রান করেছিল টাইগাররা।

তবে সাগরিকায় শুরুটা ভালো ছিল না বাংলাদেশের। টস হেরে যায় দলটি। তাতে অবশ্য খুব ক্ষতি হয়নি। অভিষিক্ত নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে দারুণ জুটি গড়েন লিটন কুমার দাস। প্রথম ওভারটাই যা দেখে খেলেছেন লিটন। এরপর পরিণত হন রুদ্ররূপে। কিন্তু অতি আগ্রাসনও সর্বনাশ হয়েছে তার জন্য। যদিও আউট হয়েছেন নেভিল মাডজিভার দুর্দান্ত এক ক্যাচে। ক্রিকেট ইতিহাসে এমন ক্যাচ আছে খুব কমই। উল্টো দিকে প্রায় ২০ গজ দৌড়ে ক্যাচ লুফেছেন তিনি।

টেস্ট ও ওয়ানডের মতো টি-টোয়েন্টির অভিষেকটাও ভালো হয়নি শান্তর। ফিরেছেন মাত্র ১১ রানেই। আর লিটন দুর্ভাগা হলেও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ছিলেন সৌভাগ্যবান। প্রথম বলেই আউট হয়েছিলেন তিনি। কাইল জার্ভিসের বলে আনাড়ির মতো ব্যাট চালিয়েছিলেন। উইকেটরক্ষকের হাতে যাওয়ার আগে ব্যাটের কানা ছুঁয়েছিল। কিন্তু আবেদনই করেননি জিম্বাবুইয়ানরা। এরপর সহজ রানআউট থেকেও বেঁচেছেন। কিন্তু নিজের সৌভাগ্যকে ধরে রাখতে পারেননি। জিম্বাবুয়ে ক্যাচিং অনুশীলন করে ফিরেছেন ব্যক্তিগত ১০ রানেই।

দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে ফেলা দলটি এরপর ঘুরে দাঁড়ায় মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে। চতুর্থ উইকেটে ৭৮ রানের জুটি গড়েছেন এ দুই ব্যাটসম্যান। দারুণ ব্যাটিং করেছেন মাহমুদউল্লাহ। ৪১ বলে করেছেন ৬২ রান। আর মুশফিক ৩২ রান করলেও ব্যাটিংয়ে ছন্দ ছিল না। বারবার পূর্ব পরিকল্পিত শট খেলতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। জীবনও পেয়েছেন। কিন্তু ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। শেষদিকে দ্রুত রান করার তাড়ায় দ্রুত আরও তিনটি উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৭৫ রান তোলে দলটি।

লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটাই ভালো হয়নি জিম্বাবুয়ের। স্কোরবোর্ডে কোন রান যোগ না করতেই ফিরে যান ব্রান্ডন টেইলর। সে ধারা ছিল পুরো ম্যাচ জুড়েই। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় তারা। এক প্রান্তে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন ক্যারিয়ারের শেষ সিরিজ খেলতে নামা অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। কিন্তু অভিষিক্ত আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের ঘূর্ণিতে পড়েন এলবিডাব্লিউর ফাঁদে। কার্যত তখনই হার দেখতে পায় দলটি। বাকী ছিল কেবল আনুষ্ঠানিকতা।

কিন্তু সে আনুষ্ঠানিকতা খুব দ্রুত হতে দেননি রিচমন্ড মুটুম্বামি। ৬৬ রানে ৭ উইকেট হারানো দলটি যখন একশ রানের আগেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় ভুগছিল তখন ঢাল হয়ে দাঁড়াল তার ব্যাট। ৩২ বলে ৫৪ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন তিনি। ২৭ রানের এক ইনিংসে তাকে সঙ্গ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন জার্ভিসও। অষ্টম উইকেটে ৫৮ রান যোগ করেন তারা। তাতে অবশ্য হারের ব্যবধানই কমেছে। ১৩৬ রানে গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস।

স্বস্তির এ জয়ে নজর কেড়েছেন তরুণ আমিনুল। দারুণ বোলিং করে পেয়েছেন ২টি উইকেট। সবচেয়ে বড় কথা রান দেওয়ায় বেশ কৃপণ ছিলেন তিনি। ৪ ওভারে খরচ করেছেন ১৮ রান। ফেরার ম্যাচে দারুণ বোলিং করেছেন শফিউল ইসলামও। ৩৬ রানের বিনিময়ে ৩টি উইকেট নিয়ে সেরা বোলার তিনিই। শেষ ওভারে ২টি উইকেট মিলেছে মোস্তাফিজুর রহমানেরও।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৭৫/৭ (শান্ত ১১, লিটন ৩৮, সাকিব ১০, মুশফিক ৩২, মাহমুদউল্লাহ ৬২, আফিফ ৭, মোসাদ্দেক ২, সাইফউদ্দিন ৬*, আমিনুল ০*; এনডিলভু ০/৩২ জার্ভিস ৩/৩২, এমপুফু ২/৪২, উইলিয়ামস ০/২৬, বার্ল ১/১৩, মুটম্বোদজি ১/১৭, মাডজিভা ০/১০)।

জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ১৩৬ (টেইলর ০, মাসাকাদজা ২৫, চাকাভা ০, উইলিয়ামস ২, মুটম্বোদজি ১১, বার্ল ১, মুটুম্বামি ৫৪, মাডজিভা ৯, জার্ভিস ২৭, এনডিলভু ২, এমপুফু ০*; সাইফউদ্দিন ১/১৪, সাকিব ১/২৮, শফিউল ৩/৩৬, মোস্তাফিজুর ২/৩৮, আমিনুল ২/১৪)।

ফলাফল: বাংলাদেশ ৩৯ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মাহমুদউল্লাহ (বাংলাদেশ)।

Comments

The Daily Star  | English

Political parties want road map to polls

Leaders of major political parties yesterday asked Chief Adviser Professor Muhammad Yunus for a road map to the reforms and the next general election.

1h ago