ফিফটির চেয়ে সেই সব ইনিংস মূল্যবান মাহমুদউল্লাহর কাছে
একটি ম্যাচ ছাড়া ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে ব্যর্থই ছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাট। শ্রীলঙ্কা সফরেও ব্যর্থ। ওয়ানডের পর টেস্টেও সাফল্য খুঁজে পাননি। মিরপুরে টি-টোয়েন্টিতেও শুরুটা ভালো ছিল না। দুঃসময় যেন ভর করেছিল এ ক্রিকেটারের উপর। তবে অবশেষে দুঃসময়কে পেছনে ফেলে ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত দিলেন তিনি। আফগানদের বিপক্ষে আগের ম্যাচে উইকেটে সেট হয়েও পারেননি। তবে সাগরিকায় এসে ফের জয়ের নায়ক তিনি। আর তাতে যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন এ ক্রিকেটার। তবে হাফসেঞ্চুরির জন্য নয়, দলের জয়ে অবদান রাখতে পেরেই খুশি তিনি।
সময়ের হিসেবে প্রায় দুই বছর আট মাস পর ফের হাফসেঞ্চুরি করলেন মাহমুদউল্লাহ। তবে এর মাঝেও বেশ কিছু ভালো ইনিংস রয়েছে তার। যেমনটা করেছেন শ্রীলঙ্কায় নিদাহাস ট্রফিতে। ফিফটির চেয়ে সেসব ইনিংসকেই এগিয়ে রাখলেন তিনি, 'আমার কাছে মনে হয়েছ, ৫০ রান ব্যাপার না। বড় ব্যাপার হচ্ছে, আমি দলের জন্য কতটা অবদান রাখতে পারলাম। আমি দলের জন্য সবসময় খেলার চেষ্টা করি। আর ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে মনে হয় না দলের কেউ ওরকম চিন্তা করে, বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে। কারণ টি-টোয়েন্টি খেলার ধরনটাই এরকম, এখানে ২০-৩০ রান করেও ম্যাচ জেতানোর অনেক সুযোগ থাকে। ও ওইগুলা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আপনি ম্যাচ জেতাতে পারলে সেটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।'
উইকেটে নেমে প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। আর সে ছক্কাই দারুণ এ ইনিংসের আত্মবিশ্বাস এনে দিয়েছে তাকে। মাহমুদউল্লাহর ভাষায়, 'ইন্টেন্ট ছিল, স্পেশালি যখন ড্রেসিংরুমে ছিলাম আমার ইচ্ছা ছিল সুযোগ পেলে প্রথম বলেই সুযোগ নেব। আমার মনে হয় বোলাররাও আশা করছিল না। আমি শুধু কাউন্টার অ্যাটাক করার চেষ্টা করেছি।'
৬২ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস খেলেছেন মাহমুদউল্লাহ। তার ইনিংসে ভর করে লড়াইয়ের পুঁজি মিলে টাইগারদের। যদিও এর পথটা তৈরি করে দিয়েছিলেন লিটন কুমার দাস। অভিষিক্ত নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে করেন প্রায় হাফসেঞ্চুরির একটি জুটি। টাইগারদের এমন অনেক ইনিংসেই একটি জুটির পর ধ্বংসস্তূপের দেখা মিলেছে। কিন্তু এদিন তা হতে দেননি মাহমুদউল্লাহ। সঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলেন মুশফিকুর রহিমকে। তার সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে করা ৭৮ রানের জুটিই যে পথ দেখিয়েছে বাংলাদেশকে।
এদিন চারের চেয়ে ছক্কা মারার দিকে মনযোগী ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। খেলেছেন পছন্দের প্রায় সব শটই। ডাউন দ্য উইকেটে এসে ছক্কা হাঁকিয়েছেন, ফ্লিক করেও সীমানার ওপারে আছড়ে ফেলেছেন। পুরো ইনিংসে যেন নিজেকে ফিরে পাওয়ার প্রতিচ্ছবি। মাহমুদউল্লাহও বলছেন এমনটাই, ‘উইকেট খুব ভালো ছিল আজকে। আমার কাছে মনে হয়েছে এটা ১৯০-২০০ উইকেট। আমি আমার মুশি যতক্ষণ ব্যাট করছিলাম খুব ভালো মনে হয়েছে উইকেট। আমার মনে হয়েছে, লিটন আর শান্তর জুটিটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আর মুশিও আজকে অনেক ভালো ব্যাট করেছে।’
আর মাহমুদউল্লাহতে ভর করে বাংলাদেশের জয়টাও কম স্বস্তির নয়। সাম্প্রতিক সময়ে যে হার যেন পিছুই ছাড়ছিল না। তাতে এমন একটু দাপুটে কিছুটা হলেও আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দিবে টাইগারদের। পাশাপাশি ঘরের মাঠে দর্শক হওয়ার শঙ্কাও কাটানো গিয়েছে।
Comments