বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে প্রশাসন ভবনে শিক্ষার্থীদের তালা

গোপালগঞ্জে বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিল করে প্রশাসন ভবনে তালা দেয়। ছবি: রাফিউল ইসলাম

গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। এক দফা দাবিতে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে তালা দিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী।

উপাচার্য খোন্দকার মো. নাসিরুদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। নিয়োগ বাণিজ্য, দুর্নীতি ও ছাত্রীদের যৌন হয়রানির মতো অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

সেখান থেকে দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদক জানান, সকাল ৯টার দিকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর থেকে মিছিল শুরু করে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে ভবনের মূল ফটকে তালা দেন।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছিলেন। সেখানে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইন বিভাগের এক ছাত্র বলেন, “শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তদন্ত হয়। কিন্তু উপাচার্য অভিযুক্ত হলে তার কিছুই হয় না।”

তিনি আরও বলেন, গত বছর এই উপাচার্যের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে এসেছিলেন এক নারী। ওই ঘটনার কোনো বিচার হয়নি। উল্টো ওই মুখ বন্ধ করতে অভিযোগকারীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে চতুর্থ শ্রেণির চাকরি দেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আচরণকে ‘স্বৈরাচারী’ আখ্যা দিয়ে ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক ছাত্র বলেন, “এই স্বৈরাচারদের বিরুদ্ধে কিছু বললেই ছাত্র-ছাত্রীদের বহিষ্কার করা হচ্ছে।”

দ্য ডেইলি স্টারের কাছে মন্তব্যকারী শিক্ষার্থীদের কেউই তাদের পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি। তাদের আশঙ্কা পরিচয় প্রকাশিত হলে পরবর্তীদের তাদের সমস্যায় পড়তে হতে পারে।

বশেমুরবিপ্রবি থেকে গত ছয় মাসে সাত শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বহিষ্কৃত ওই শিক্ষার্থীদের ‘অপরাধ’, উপাচার্য ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের অনিয়মের বিরুদ্ধে ফেসবুকে বিরুদ্ধ মত জানিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন তারা। সর্বশেষ ১১ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে শিক্ষকদের নিয়ে স্ট্যাটাস দেওয়ায় আইন বিভাগের ছাত্রী ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে বহিষ্কার করা হয়। তিনি একটি জাতীয় দৈনিকের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক হিসেবে কর্মরত।

বহিষ্কারের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে উপাচার্য বলেছেন, জিনিয়া উপাচার্যের ফেসবুক আইডি হ্যাক করেছেন। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ফেসবুক ও ই-মেইল আইডি হ্যাক করেছেন। তিনি ভর্তি পরীক্ষার ওয়েবসাইট হ্যাক করে পরীক্ষা বানচালের ষড়যন্ত্র করেছেন। জিনিয়া বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন করার কারণেই তাকে উপাচার্যের রোষানলে পড়তে হয়েছে।

সাংবাদিকদের আন্দোলন ও দেশজুড়ে সমালোচনার মুখে গতকাল বুধবার জিনিয়ার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এর পর গত রাত থেকে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।

Comments

The Daily Star  | English

BNP sticks to demand for polls by December

In a meeting with Chief Adviser Prof Muhammad Yunus last night, the BNP restated its demands that the next general election be held by December and the government immediately announce a roadmap to that end.

5h ago