অভিযুক্ত ধর্ষকের সঙ্গে স্কুলছাত্রীর জোরপূর্বক ‘বিয়ে’ দেওয়ার অভিযোগ এসআই’র বিরুদ্ধে

সপ্তম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীর সঙ্গে অভিযুক্ত ধর্ষকের জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে লালমনিরহাট সদর থানার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মাইনুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে লালমনিরহাট সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের রামদাস সুভারবাড় গ্রামে।
Weeding logo
প্রতীকী ছবি। স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

সপ্তম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীর সঙ্গে অভিযুক্ত ধর্ষকের জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে লালমনিরহাট সদর থানার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মাইনুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে লালমনিরহাট সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের রামদাস সুভারবাড় গ্রামে।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর রংপুর রেঞ্জের পুলিশের ডিআইজি, জেলা পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকের কাছে এ সংক্রান্ত লিখিত অভিযোগ করেছেন মেয়েটির বাবা।

অভিযোগে তিনি বলেন, তার মেয়ে একই ইউনিয়নের প্রতিবেশী উমাপতি হরনারায়ণ গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে শাহিন আলম (২৪)-এর কাছে প্রাইভেট পড়তো। এ সুবাদে তাকে প্রেমের জালে আটকে ফেলে শাহিন। এক পর্যায়ে তার সঙ্গে শারীরিক মেলামেশা করে এবং গর্ভধারণের ঘটনা ঘটায়। “গেল ২৫ জুলাই আমার মেয়েকে শহরের একটি ক্লিনিকে নিয়ে জোরপূর্বক গর্ভপাত ঘটালে আমরা বিষয়টি জানতে পারি এবং গ্রাম্য সালিশের নামে টালবাহানা হওয়ায় গেলো ১১ আগস্ট লালমনিরহাট সদর থানায় অভিযুক্ত প্রাইভেট শিক্ষক শাহিনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করি,” তিনি জানান।

“১২ ও ১৪ আগস্ট দুদিন সদর থানার এসআই মাইনুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করেন। কিন্তু, মামলাটি রেকর্ড না নিয়ে তিনি অভিযুক্ত আসামির সঙ্গে মিলে যান,” এমন অভিযোগ করে মেয়ের বাবা আরো জানান, এসআই মাইনুল জোরপূর্বক অভিযুক্ত ধর্ষক শাহিনের সঙ্গে তার মেয়ের বিয়ে দেন।

গত ১৭ আগস্ট প্রতিবেশী ইউনিয়ন মহেন্দ্রনগরের বিয়ের কাজী শহিদুল ইসলামের অফিসে এ বিয়ে হলেও স্কুলছাত্রীর পরিবারকে বিয়ের কাবিননামা দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেন মেয়ের বাবা।

দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, “আমার মেয়েকে এখনো ঘরে তুলে নেয়নি শাহিন। উপরন্তু, গ্রামে প্রচার করছে সে আমার মেয়েকে ডিভোর্স দিয়েছে,” বলে উল্লেখ করেন মেয়েটির বাবা। “সেদিন পুলিশ যদি মামলা রেকর্ড করে আসামিকে গ্রেপ্তার করতো তাহলে আজকের এই দিনটি আমাকে দেখতে হতো না,” এমনটি জানিয়ে তিনি বলেন, তার মেয়েকে জোরপূর্বক অভিযুক্ত ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার জন্য পুলিশের এসআই মাইনুল ইসলামই দায়ী।

নির্যাতনের শিকার স্কুলছাত্রী বলেন, “শাহিন আলম আমাকে হুমকি দিয়ে বলছে- আমি যদি তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিই তাহলে আমার অশ্লীল ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দিবে। আমি তাকে ভালোবেসেছিলাম সত্যি। কিন্তু, শাহিন ভালোবাসার সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমাকে জালে আটকিয়ে সর্বস্ব লুট করে নেয়।”

লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের বিয়ের কাজী শহিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “সদর থানার এসআই মাইনুল এ বিয়ে সম্পর্কে সবকিছু জানে।” কী করে স্কুলছাত্রীর বিয়ে হলো?- এমন প্রশ্ন করলে বিয়ের কাজি তা এড়িয়ে গিয়ে মোবাইলফোন বন্ধ করে দেন।

অভিযুক্ত লালমনিরহাট সদর থানার এসআই মাইনুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তিনি বিষয়টি জানেন না। তাকে ফাইলপত্র ঘেঁটে বলতে হবে বলে জানান। তিনি আর কিছু বলতে রাজি হননি।

লালমনিরহাট সদর থানার ওসি মাহফুজ আলম বলেন, “বুধবার রাতে আমরা মামলাটি রেকর্ড করেছি আর অভিযুক্ত ধর্ষক শাহিন আলমকে গ্রেপ্তারও করেছি।”

লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম রশিদুল হক দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, বিষয়টি তদন্ত করতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং তদন্ত শেষে এসআই মাইনুল দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Teesta floods bury arable land in sand, leaving farmers devastated

40 unions across 13 upazilas in Lalmonirhat, Kurigram, Rangpur, Gaibandha, and Nilphamari are part of the Teesta shoal region

1h ago