যেভাবে খেলে এমন সাফল্য স্মিথের, বিশ্লেষণ করলেন শচীন

অবিশ্বাস্য ফর্মে এবার অ্যাশেজ মাত করেছেন স্টিভেন স্মিথ। কেবল এক ইনিংসেই আউট হয়েছিলেন পঞ্চাশের নিচে। ৪ টেস্টের ৭ ইনিংসে ১১০.৫৭ গড়ে করেন ৭৭৪ রান। এক অ্যাশেজে সবচেয়ে বেশি রান করায় ডন ব্যাডম্যানের রেকর্ড ভাঙারও সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছিলেন এক পর্যায়ে। স্মিথের অতিমানব হয়ে উঠায় অ্যাশেজ ধরে রাখা অস্ট্রেলিয়া। শুধু রান করায় নয়, পুরো অ্যাশেজে স্মিথের ব্যাট করার ধরণও হয়েছে আলোচিত। কীভাবে এত রান পেলেন স্মিথ? দর্শক হিসেবে পুরো সিরিজটি দেখে ভারতীয় কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার বিশ্লেষন করেছেন স্মিথের ব্যাটিং।
Sachin & Smith
ছবি: এএফপি ও টুইটার

অবিশ্বাস্য ফর্মে এবার অ্যাশেজ মাত করেছেন স্টিভেন স্মিথ। কেবল এক ইনিংসেই আউট হয়েছিলেন পঞ্চাশের নিচে। ৪ টেস্টের ৭ ইনিংসে ১১০.৫৭ গড়ে করেন ৭৭৪ রান। এক অ্যাশেজে সবচেয়ে বেশি রান করায় ডন ব্যাডম্যানের রেকর্ড ভাঙারও সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছিলেন এক পর্যায়ে। স্মিথের অতিমানব হয়ে উঠায় অ্যাশেজ ধরে রাখা অস্ট্রেলিয়া। শুধু রান করায় নয়, পুরো অ্যাশেজে স্মিথের ব্যাট করার ধরণও হয়েছে আলোচিত। কীভাবে এত রান পেলেন স্মিথ? দর্শক হিসেবে পুরো সিরিজটি দেখে ভারতীয় কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার বিশ্লেষন করেছেন স্মিথের ব্যাটিং।

ক্রিজে গিয়ে স্মিথকে দেখা গেছে সারাক্ষণ নড়াচড়া করতে। বারবার পায়ের মুভমেন্ট বদলিয়ে চালিয়েছেন ব্যাটিং। চোখ ধাঁধানো শট যেমন খেলেছেন, শরীরকে নানাভাবে ব্যবহার করে প্রচুর ‘অপ্রথাগত’ শট খেলতে দেখা গেছে তাকে। ৭ ইনিংসে এক ডাবল সেঞ্চুরিসহ তিনটা সেঞ্চুরি, আছে তিনটা ফিফটি। কেবল শেষ ইনিংসেই আউট হয়েছিল ২৩ রানে।

বার্মিংহাম ও লর্ডসে প্রথম দুই টেস্টেই স্মিথের ব্যাটিং উঠে যান অন্য উচ্চতায়। তবে লর্ডস টেস্টেই জোফরা আর্চারের বলে আঘাত পেয়ে খেলতে পারেননি তৃতীয় টেস্ট। চোট কাটিয়ে ফিরে বাকি দুই টেস্টেও বইয়েছেন রানের বন্যা।

নিজের টুইটারে এক ভিডিও পোস্ট করে শচীন দিলেন স্মিথের ব্যাটিংয়ের আগাগোড়া ব্যাখ্যা, ‘প্রথম টেস্টে, স্টিভ স্মিথকে স্লিপ কর্ডনে আউট করতে চেয়েছে ইংল্যান্ড। তা বোঝে স্মিথ পুরো লেগ স্টাম্প খোলা রেখে শাফল করে গেছে। অফ স্টাম্পের বাইরের বলগুলো বুদ্ধি করে ছেড়ে সফল হয়েছে সে।’

প্রথম টেস্টের স্মিথের এই কৌশলে দেখে ইংলিশরা দ্বিতীয় টেস্টে তাকে কাবু করতে আঁটে নয়া বুদ্ধি। শচীন মনে করছেন এতেই তৈরি হয়ে যায় স্মিথের আঘাতের ক্ষেত্র,  ‘লর্ডস টেস্টে ইংল্যান্ড লেগ স্লিপ নিয়ে আসে এবং জোফরা আর্চারের বাউন্সার স্মিথকে খুব ভোগাতে থাকে। এটা হচ্ছিল কারণ স্মিথ বলের লাইনে যাচ্ছিল কিন্তু একটু ব্যাকফুটে গিয়ে। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে মাথার পজিশন সামনে রেখে বডির ভারসাম্য করতে হবে। ’

‘এই কারণে যখন আর্চারের শর্ট বলগুলোতে স্মিথ পুল করছিল না, ডিফেন্ড করতে যাচ্ছিল। তখন সে বাজে পজিশনে চলে যায়। এই কারণেই সে আঘাত পেয়েছে। আমি নিশ্চিত এটা নিয়ে ও কাজ করেছে।’

এক টেস্ট পর ফিরে ইংলিশ ফন্দিকে সামলানোর বুদ্ধি নিয়ে নামেন স্মিথ, ‘যদি লেগ স্লিপ থাকে তাহলে তখন সে আড়াআড়ি যাওয়া বন্ধ করছিল, কারণ সে জানত তাকে ওখানেই টার্গেট করা হচ্ছে। বল আকাশে তোলার চেয়ে মাটিতে রাখা বরাবরই কঠিন। কাজেই এভাবে নড়াচড়া করে বলের একদম উপরে যাওয়া সম্ভব না। কিন্তু যদি আপনার পেছনের পা আড়াআড়ি থাকে আর সামনের পা থাকে ঠিক জায়গায়, তখন আপনি সব সময় বলের উপরে থাকতে পারবেন।’

শেষ দুই টেস্টে আর্চারের গোলা যেভাবে সাদামাটা হয়েছে স্মিথের কাছে, তাও বিশ্লেষণ করেছেন টেস্টের সবচেয়ে বেশি রান ও সেঞ্চুরির মালিক শচীন, ‘চতুর্থ ও পঞ্চম টেস্টে যেটা হয়েছে, ও সামনে ঝুঁকে খেলেছে। আর্চার যখনই শর্ট বল দিয়ে ওকে পরীক্ষায় ফেলেছে, সে তখন সামনের কাধ ঝুঁকিয়েছে। আগের কৌশলে সে সমস্যায় পড়ছিল। সে পরে দারুণ তীক্ষ্ণ বুদ্ধিতে এই টেকনিকে খেলেছে।’

‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যা আমি খেয়াল করে দেখলাম। লেগ স্লিপ থাকলে সে তার বাম পাতা নড়াচড়া করছিল না। এই কারণে সে সবসময় তার লেগ স্টাম্প বাঁচিয়ে রাখছিল। এই কারণেই বলছি খুব জটিল কৌশলে খেলেছে কিন্তু দুর্দান্তভাবে গোছানো ছিল ওর মনোজগৎ।’

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

6h ago