ক্রিকেটার নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন ফারুকের

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

দুঃসময় কাটিয়ে উঠতে পারছে না বাংলাদেশ দল। সেই বিশ্বকাপ থেকে শুরু। এখন দুর্বল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জিততে বেশ কষ্ট হয় টাইগারদের। যদিও শেষ ম্যাচটা জিতেছে তারা প্রত্যাশা মতোই। তবে বাংলাদেশ দল যতো না বাজে সময়ের মধ্যে যাচ্ছে তার চেয়ে বেশি অস্থির সময় পার করছেন দলের নির্বাচকরা। কখন কাকে খেলাবেন তা ঠিকমতো বুঝতেই পারছেন না। একের পর এক খেলোয়াড়কে ডেকে আবার বাদ দিচ্ছেন কোন সুযোগ না দিয়েই। আর তাই বর্তমান নির্বাচকদের দায়িত্ববোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাংলাদেশ দলের সাবেক নির্বাচক ও অধিনায়ক ফারুক আহমেদ।

তবে জাতীয় দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স নিয়ে নেতিবাচক কিছু বলেননি ফারুক। দলের উত্থানপতন হওয়াটাই স্বাভাবিক মনে করছেন। কিন্তু নির্বাচকদের কাজটা সঠিকভাবে হচ্ছে না বলেই তোপ দাগিয়েছেন তিনি, 'একটা দলের পারফরম্যান্স ভালো বা খারাপ যাবে এটা খুব স্বাভাবিক একটা প্রক্রিয়া। সেই সাথে আমাদের মাথায় রাখা দরকার অন্য জিনিসগুলো আমরা ঠিকমতো করতে পারছি কিনা। কিছু প্রশ্ন উঠেছে, আমাদের দল নির্বাচন হোক বা যেকোনো কিছু। নির্বাচনের দায়িত্ব এমন কাউকে দিতে হবে যে নিজের একটা দায়বদ্ধতা তৈরি করতে পারে। মানে কেউ যখন সুযোগ পেল তাহলে কেন সুযোগ পেল বা কেউ বাদ পড়লে কেন বাদ পড়ল- এই ব্যাখ্যাটা। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আমরা খুব একটা দেখতে পাই না।'

নির্বাচকদের অস্থিরতার ব্যাখ্যা দিতে খুব বেশি পিছনে যেতে হচ্ছে না ফারুককে। চলতি ত্রিদেশীয় সিরিজের দিকে তাকালেই হয়। শুরুতে ইয়াসিন আরাফাত মিশু, শেখ মেহেদী হাসানকে দলে নিলেন। এক ম্যাচ পর আবার হুট করে দলে এলেন আবু হায়দার রনি। মিরপুর থেকে ঢাকায় আসতে আবার এরা সবাই বাদ। তাও আবার কোন ম্যাচ না খেলেই। নেওয়া হলো আবার নতুন দুটি মুখ। এর যদিও প্রথম ম্যাচেই সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু কে জানে হয়তো দুই ম্যাচ পর আবার তারাও বাদ পড়তে পারেন।

ফারুকের আপত্তিটা এখানেই। একজন খেলোয়াড়কে দলে নেওয়ার পর পর্যাপ্ত সুযোগ না দেওয়াকে অপরাধ হিসেবেই দেখছেন তিনি, 'এটা দলের ওপর দারুণ নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এখন কিন্তু আমাদের মূল ক্রিকেটার আছে ৪-৫ জন। এর বাইরে বলতে পারি না যে ৬-৭ নম্বরে কারা আছে। এটা তরুণদের জন্য বা দলে যারা জায়গা পাচ্ছে না তাদের জন্য ভালো হচ্ছে না। তরুণ কেউ আসলেও এমন পারফর্ম করতে চায় প্রথম ম্যাচ থেকে যে তাকে দলে জায়গা করে নিতে হবে। এটা কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ না। যখন ঘরোয়া থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটা ক্রিকেটার যায়, সেটা কিন্তু বড় পদক্ষেপ। সেখানে আমাদের ধৈর্যের পরিচয় দিতে হবে।'

এমন কার্যক্রমে দলের ভারসাম্যেও সমস্যা হয় বলে মনে করেন সাবেক এ নির্বাচক, 'কিছু ক্রিকেটার আছে এসে মাত্র মানিয়ে নিতে পারে। যেমন মোস্তাফিজ এসেই পারফর্ম করে এক জায়গায় পৌছাতে পেরেছে। আবার অন্য কাউকে সময় দিতে হতে পারে। যদি মনে করা হয় তাকে ওই পজিশনে দরকার তাহলে ৫-৭ ম্যাচ তাকে ওই পজিশনে সুযোগ দিতে হবে। ব্যাক করার জন্য অন্তত নির্বাচক থাকবে। যে বলবে, ওকে এই কারণে নিয়েছি বা নেইনি। ইদানিং দেখা যায় একটা ক্রিকেটারকে এক ম্যাচ খেলিয়ে বাদ দিয়ে দেয়া হয়। এতে পুরো দলের ভারসাম্য নষ্ট হয়।'

এছাড়া খেলোয়াড়দের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আনার মধ্যেও সঠিক প্রক্রিয়া দেখছেন না ফারুক। যে তরুণ যে সংস্করণে ভালো খেলেন তাকে সেখানে না খেলিয়ে অন্য কোন সংস্করণে আনা হচ্ছে বলে দাবী করেন তিনি। তবে এখনি এ সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ দিলেন। আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে এখনই ভাবা দরকার বলে মনে করছেন। উদাহরণ হিসেবে ব্যাবহার করেছেন আফগানিস্তান দলের কথা। টেস্ট সিরিজ শেষ হওয়ার পর টি-টোয়েন্টি দলে সেখান থেকে মাত্র ৩ জন খেলোয়াড়কে ধরে রেখেছে তারা। আর নির্বাচন প্রক্রিয়া সঠিক না হলে ভবিষ্যতে বড় সমস্যায় দল পড়তে পাড়ে বলে মনে করেন  সাবেক এ নির্বাচক।

Comments

The Daily Star  | English

7 colleges to continue operating under UGC until new university formed

Prof AKM Elias, principal of Dhaka College, to be appointed as the administrator

4h ago