চবি শিক্ষক মাইদুলকে গবেষণা ছুটি দিতে ২৭৫ শিক্ষকের বিবৃতি

Maidul Islam CU
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম। ছবি: স্টার ফাইল ফটো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক মাইদুল ইসলামকে বিদেশে গবেষণার জন্য ছুটি দিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭৫ জন শিক্ষক।

গতকাল (১৯ সেপ্টেম্বর) এক যৌথ বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, মাইদুল ইসলামকে বিদেশে গবেষণার জন্য ছুটি দিতে বিশ্ববিদ্যালয় যে বিলম্ব করছে, আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এর আগে ফেসবুকে সামান্য একটি পোস্টকে ঘিরে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন যৌথভাবে আইসিটি আইনে মামলা করে মাইদুলকে কারাগারে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিলো।

এবার অভিযোগ উঠেছে, ছুটির আবেদনপত্রের বিপরীতে প্রয়োজনীয় সভা না ডেকে বিভাগীয় সভাপ্রধান মাইদুলের বিদেশে যাওয়ার সুযোগকে বিঘ্নিত করার অপচেষ্টা করছেন। এ সংক্রান্ত সংবাদ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। বিলম্বের কারণে নেদারল্যান্ডসের লেইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চলতি মাসে সেশন শুরু হয়ে গেলেও তিনি যোগদান করতে পারছেন না।

মাইদুলের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় তিনি তার পক্ষে উচ্চ আদালতের রায় পেয়েছেন এবং সাধারণ নাগরিক ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক হিসেবে তার সব ধরনের অধিকার ভোগ করতে আর কোনো বাধা নেই। উচ্চ আদালতে মামলা স্থগিতের পর রায়ের কপিসহ বিভাগে ছুটির জন্য মাইদুল আবেদন করেন ৪ সেপ্টেম্বর।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী এক্সট্রা অর্ডিনারি ছুটি নিয়ে বিদেশে যাওয়ার আবেদন করার সাত কর্মদিবসের মধ্যে বিভাগীয় প্ল্যানিং কমিটির সভা করে সিদ্ধান্ত দেওয়ার কথা। কিন্তু, তার আবেদনের পর প্রায় দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও প্ল্যানিং কমিটির সভার কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বিভাগীয় চেয়ারপারসন পারভীন সুলতানা অপেক্ষা করছেন রেজিস্ট্রারের অনুমতির জন্য। রেজিস্ট্রার জানিয়েছেন, এটি বিভাগ থেকে উদ্যোগ নেওয়ার বিষয়। এ পর্যায়ে করণীয় কিছু নেই।

আমরা মনে করি, মাইদুল ইসলামকে হয়রানি করার মধ্য দিয়ে বিভাগের চেয়ারপারসন বা বিভাগ তার উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার ন্যায্য অধিকারকে রদ করেছেন। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন ও সংবিধানসম্মত নাগরিক অধিকারের পরিপন্থি।

আমাদের দাবি, অতি দ্রুত মাইদুলের ছুটি অনুমোদনের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে এবং সমাজতত্ত্ব বিভাগের সভাপ্রধান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এবং উপাচার্য তাকে অবিলম্বে ছুটি প্রদানের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী ২৭৫ শিক্ষকের মধ্যে রয়েছেন ড. মো. কামরুল হাসান, অধ্যাপক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; সাঈদ ফেরদৌস, অধ্যাপক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; আনু মুহাম্মদ, অর্থনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; গীতি আরা নাসরীন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; সামিনা লুৎফা, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; ফাহমিদুল হক, অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাকিয়া সুলতানা মুক্তা, সহকারী অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ; আরিফুজ্জামান রাজীব, সহকারী অধ্যাপক, বশেমুরবিপ্রবি, গোপালগঞ্জ; খাদিজা মিতু, সহযোগী অধ্যাপক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়; মাহবুবুল হক ভূঁইয়া, সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়; কাজী অর্ক রহমান, সহকারী অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়; মির্জা তাসলিমা সুলতানা, অধ্যাপক, নৃবিজ্ঞান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; আ-আল মামুন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়; গৌতম রায়, সহকারী অধ্যাপক, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা আরও হলেন সৌভিক রেজা, অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়; রায়হান রাইন, অধ্যাপক, দর্শন বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, মজিবুর রহমান, সহযোগী অধ্যাপক, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; শামস আরা খাঁন, সহকারী অধ্যাপক, ফার্মেসী বিভাগ, বশেমুরবিপ্রবি, গোপালগঞ্জ; কাজী এস. ফরিদ, সহযোগী অধ্যাপক, গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, কামাল চৌধুরী, সহযোগী অধ্যাপক, ক্লিনিকাল সাইকোলজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রমুখ।

আরো পড়ুন:

স্কলারশিপ মিললেও ছুটি মিলছে না

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh asks India to halt border push-ins, cites security concerns

The move follows reports that BSF pushed in around 300 people into Bangladesh between May 7 and May 9

26m ago