রোনালদোকে খাবার দেওয়া সেই মেয়েদের একজনের খোঁজ মিলল
তখন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর বয়স ছিল ১১ বা ১২ বছর। বর্তমানের অর্থ-যশ-খ্যাতি-প্রতিপত্তির কোনো কিছুই তার ছিল না। ছিল কেবল ফুটবলার হওয়ার তীব্র বাসনা। সেজন্য শিশু অবস্থাতেই পরিবার থেকে দূরে থাকতে হতো তাকে। লিসবনের ওই জায়গায় তার মতোই আরও অনেক ক্ষুদে খেলোয়াড়রা থাকত। তিন মাস পরপরই কেবল মাদেইরায় নিজের বাড়িতে যাওয়ার- প্রিয় মুখগুলো দেখার সুযোগ পেতেন রোনালদো। অর্থ সংকট থাকায় সময়টা ছিল ভীষণ কষ্টের। সেই দুঃসময়ে প্রায়ই গভীর রাতে রোনালদো ক্ষুধার তাড়নায় চলে যেতেন লিসবনের ম্যাকডোনাল্ডসে। তার মতো অনেকেই যেতেন। তারা পেছনের দরজায় নক করে চাইতেন বার্গার। সেসময় এদনা নামের সেলসগার্ল ও আরও দুজন মেয়ে তাদেরকে খেতে দিতেন।
কদিন আগে ব্রিটিশ উপস্থাপক পিয়ার্স মরগানের কাছে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তর্কসাপেক্ষে সময়ের সেরা ফুটবলার ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। আইটিভিতে প্রচারিত হওয়া ওই সাক্ষাৎকারে নিজের জীবনের অনেক অজানা অধ্যায় খোলাসা করেন পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী তারকা। কথা বলেন ভবিষ্যৎ লক্ষ্য নিয়ে। আবার শৈশবেই হারানো বাবার একটি ভিডিও দেখে চোখের জলও আটকে রাখতে পারেননি। সেই সঙ্গে এমন তিনজন মেয়ের কথা উল্লেখ করেন, যারা রোনালদোর বর্তমানের সুউচ্চ অবস্থানে যাওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও অবদান রেখেছেন।
রোনালদো সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছেন। পেছনে ফেলে এসেছেন সব কষ্ট। কিন্তু সেইসব স্মৃতি তিনি ভোলেননি, ‘এদনা ও বাকি মেয়ে দুজন অবিশ্বাস্য রকমের ভালো ছিল। আমি তাদের আর কখনও খুঁজে পাইনি। আমি পর্তুগালে বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছি, খোঁজার চেষ্টা করেছি কিন্তু পাইনি।’ তবে হতাশ হননি রোনালদো। সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় তাদের কখনও না কখনও খুঁজে পাওয়ার ইচ্ছার কথা জানান তিনি, ‘তারা ওই ম্যাকডোনাল্ডসটা বন্ধ করে দিয়েছে। তবে আশা করি, এই সাক্ষাৎকার ওই মেয়েদের খুঁজে পেতে সাহায্য করবে। আমি তাদের তুরিনে অথবা লিসবনে আমার সঙ্গে ডিনারে নিমন্ত্রণ করতে চাই। (ওই গুরুত্বপূর্ণ সময়ের সাহায্য করায়) আমি তাদের কিছুটা হলেও ফিরিয়ে দিতে চাই। আমি এটা কখনও ভুলব না।’
সুখবর হলো, রোনালদো যে মেয়েদের সঙ্গে দেখা করার আকুতি পোষণ করেছিলেন, তাদের একজনের খোঁজ মিলেছে বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর)। তার নাম পাউলা লেকা। পর্তুগালের একটি রেডিও স্টেশনের বরাতে ফক্স স্পোর্টস এশিয়া ও মিরর জানিয়েছে, লেকা রোনালদোর আমন্ত্রণ সাদরে গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘তারা রেস্টুরেন্টে আসত এবং যদি বার্গার বেঁচে থাকত, তবে আমাদের ম্যানেজার সেগুলো ওদের দেওয়ার অনুমতি দিতেন। শিশুদের মধ্যে একজন ছিল রোনালদো, যে সবচেয়ে লাজুক ছিল। প্রায় প্রতি রাতেই এটা ঘটত।’
লেকা আরও জানিয়েছেন, ‘আমার স্বামী এটা আগে থেকেই জানত। কারণ মাঝেমাঝে সে আমাকে রাতে রেস্টুরেন্ট থেকে নিয়ে আসতে যেত এবং সেও তাকে (রোনালদো) দেখেছে। অনেক দিন আগের এই ঘটনায় ফিরে যাওয়াটা বেশ মজার। এটা প্রমাণ করে, সে কতটা নম্র। আর লোকে অন্তত এখন এটা ভাবতে পারবে না যে, আমি বানিয়ে বানিয়ে বলেছি।’
Comments