মাশরাফির জীবন-যুদ্ধের গল্প জানাতে মাসাকাদজার অনুরোধ

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

দুই হাঁটুতে সাতটি অস্ত্রোপচার। ছোট বড় মিলিয়ে ১৩বার ছুরিকাঁচির নিচে যাওয়া। মাশরাফির এ জীবন-যুদ্ধের গল্পটা প্রায় সব বাংলাদেশিই জানেন। কিন্তু সব কি আর জানেন? আরও এমন অনেক গল্প, অনেক কষ্টই লুকিয়ে আছে তার মনে। কাছের লোকরা অল্প কিছু জানেন। কিন্তু ক্রিকেট ভক্তদের কাছে প্রায় সবটাই অজানা। সেই গল্পটা মাশরাফিকে বই আকারে লিখতে অনুরোধ করেছেন জিম্বাবুয়ের হয়ে এদিন শেষ ম্যাচ খেলতে নামা অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। 

মাশরাফি ও মাসাকাদজার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকটা প্রায় একই সময়ে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে যখন মাশরাফির অভিষেক হয় তার অল্প কিছু দিন আগে হারারেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অভিষেক হয় মাসাকাদজার। আর সে ম্যাচেই নতুন ইতিহাস গড়েছিলেন তিনি। অভিষেকে সর্বকনিষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে সেঞ্চুরি করেন। পরে সে রেকর্ড অবশ্য ভেঙেছেন মোহাম্মদ আশরাফুল।

বাংলাদেশে অবশ্য প্রথমবার এসেছিলেন ২০০৫ সালে। তখন মাশরাফি দলে নবীন হলেও বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। তখন থেকেই চেনা জানা। এরপর আরও আটবার জাতীয় দলের জার্সি গায়েই বাংলাদেশে এসেছেন মাসাকাদজা। আর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে তো খেলেছেন অনেকবারই। খেলেছেন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগেও (বিপিএল)। টাইগার অধিনায়ক মাশরাফির সঙ্গটা ভালোই পেয়েছেন। আর কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের হয়ে তো একই তাঁবুতে থেকেছেন। সুখদুঃখের অনেক গল্পই নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছেন। তাই মাশরাফি সম্পর্কে খুব ভালো করেই জানেন এ জিম্বাবুইয়ান।

বিদায় বেলায় বাংলাদেশের সুখস্মৃতি হাতড়াতে গিয়ে মাসাকাদজা বললেন, 'ক্লাব ক্রিকেটে মাশরাফির সঙ্গে খেলতে পাড়াটা দারুণ ব্যাপার ছিল। অনেক মানুষই জানে না তার গল্পটা। অনেক মানুষই জানে না সে কিসের মধ্য দিয়ে গিয়েছে। আমার মনে আছে আমি একবার তাকে বলেছি, "শোন তোমার অবশ্যই নিজের জীবন নিয়ে একটা বই লেখা উচিৎ।" তার জীবনের অভিজ্ঞতা অবশ্যই অনেক প্রেরণাদায়ক। সে এমন একজন, লোকজন জানে না সে কি দিয়েছে? সে বাংলাদেশকে কি দিয়েছে এবং বাংলাদেশের ক্রিকেটকে? আমার মনে হয় আমি সৌভাগ্যবান। সত্যিই খুব ভালো সময় যা আমি তার সঙ্গে অতিবাহিত করেছি।'

সাগরিকায় এদিন ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেললেন মাসাকাদজা। ম্যাচ শেষে জানালেন, 'বাংলাদেশ আমার দ্বিতীয় বাড়ি।' আর দ্বিতীয় বাড়িতে অবশ্যই দারুণ কিছু মুহূর্ত রয়েছে তার। বেশ কিছু মুহূর্তের মধ্যে মাশরাফির সঙ্গে অতিবাহিত করা সময়কেই উল্লেখ করলেন জিম্বাবুয়ের এ বিদায়ী অধিনায়ক। তবে কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতাও রয়েছে। জিম্বাবুয়ের হয়ে বাংলাদেশের কাছে প্রথম টেস্টের হারকে সবচেয়ে বাজে অভিজ্ঞতা হিসেবে চিহ্নিত করলেন তিনি, 'তিক্ত অভিজ্ঞতা বলতে গেলে... আমি সে দলের সদস্য যে প্রথমবার বাংলাদেশের কাছে জিম্বাবুয়ের হয়ে টেস্ট হেরেছি। এর আগে জিম্বাবুয়ে শক্তিশালী দলই ছিল। এটা আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে অভিজ্ঞতা।'

Comments

The Daily Star  | English

Please don't resign: An appeal to Prof Yunus

A captain cannot abandon ship, especially when the sea is turbulent

2h ago