এলো বহু কাঙ্ক্ষিত 'মোমেন্টাম'

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

অবশেষে এলো কাঙ্ক্ষিত সে জয়। স্বস্তির জয়। আফগানিস্তানকে হারাতে পারল বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে দলটি যেন টাইগারদের কাছে অধরাই হয়ে উঠছিল। শুধু কি টি-টোয়েন্টি, ঘরের মাঠে তাদের কাছে টেস্ট ম্যাচেও পাত্তাই পায়নি বাংলাদেশ। আর স্বস্তির এ জয়ে মিলেছে কাঙ্ক্ষিত মোমেন্টামও। আর এ মোমেন্টাম দিয়েই আগামীর পথ পাড়ি দিতে চায় বাংলাদেশ। ফাইনাল তো বটেই।

ম্যাচ শেষে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত সংবাদ সম্মেলনেও স্পষ্ট জানালেন কাঙ্ক্ষিত মোমেন্টাম পাওয়ার কথা, 'আসলে এমন ম্যাচ জিতলে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। তার উপর ওদের বিপক্ষে অনেকগুলো ম্যাচ হেরেছি আমরা। এ ম্যাচ অবশ্যই আত্মবিশ্বাস এনে দিবে। এতে আমরা মোমেন্টাম পেলাম। আশা করি এ মোমেন্টাম কাজে লাগিয়ে ফাইনালে ভালো কিছু করব।'

মোসাদ্দেকের কণ্ঠে বারবারই উঠে আসে মোমেন্টামের কথা। যেটা বাংলাদেশ হারিয়েছিল ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের মাঝ পথে। দারুণ শুরু করা দলটির শেষটা ছিল বিবর্ণ। অথচ দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে শুরু করার পর হতাশাগ্রস্ত লোকটিও আশায় বুক বেঁধেছিল টাইগারদের নিয়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব উল্টে পাল্টে যায়। সে ধারায় শ্রীলঙ্কা সফরে তো আরও বিবর্ণ।

ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় তুলে আবার মোমেন্টাম ফেরানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশের শুরুটা হয় উল্টো পথে। টেস্টে অসহায় আত্মসমর্পণ। ফের ত্রিদেশীয় সিরিজের শুরুতেও একই অবস্থা। নানা টানাপোড়নে থাকা দুর্বল জিম্বাবুয়েও চোখ রাঙিয়েছিল প্রথম ম্যাচে। তরুণ আফিফ হোসেন ধ্রুবয় মান রক্ষা। অন্যথায় তখন তো 'জাত গেল, জাত গেল' রব উঠে যেত। এরপর আফগানিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে হারতেই হয়। আত্মবিশ্বাস তখন তলানিতে। মোমেন্টাম তখন দূরের বাতিঘর।

ভাগ্য ফেরাতে টাইগাররা ফিরে আসে সাগরিকায়। বিপর্যস্ত অবস্থায় বহু সুখস্মৃতি দিয়েছে যে মাঠ। এক সময় যাকে ‘পয়া’ মাঠই বলত সবাই। যদিও আফগানিস্তানের কাছে টেস্ট হারে সে নামে কিছুটা হলেও কালি লেপেছে। ব্যকফুটে থাকা দলটি শুরুতেই মুখোমুখি হয় জিম্বাবুয়ের। আর শুরু থেকেই দাপট দেখিয়ে কি দারুণ জয়ই না এনে দিলেন মাহমুদউল্লাহরা। সেদিনের ম্যাচের চিত্রই পাল্টে দিল বাংলাদেশকে। মনে করিয়ে দিল এমন বহুবারই তারা বাংলাদেশের কাছে হেরে মোমেন্টাম দিয়ে গেছে টাইগারদের।

এইতো, ২০১৪ সালে আগে যখন বাংলাদেশ একের পর এক হারে ক্লান্ত, তখনই দেশে ডেকে আনা হয় জিম্বাবুয়েকে। সেবার ওয়ানডে ও টেস্ট দুই সিরিজেই তাদের হোয়াইটওয়াশ করে আত্মবিশ্বাস মিলে বাংলাদেশের। সেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে যায় ২০১৫ বিশ্বকাপে। পায় সর্বোচ্চ সাফল্য। এরপর সে ধারা টিকে ছিল অনেক দিন। মাঝে বিক্ষিপ্ত ভাবে হারলেও জয় কখনোই অধরা হয়ে ওঠেনি। এর আগেও এমন অনেকবারই হয়েছে।

আর শুধু সে ম্যাচেই নয়, পরের ম্যাচে তারা আফগানিস্তানকে হারিয়ে সুবিধা করে দেয় বাংলাদেশকে। জানিয়ে দেয়, টানা জয়ের বিশ্বরেকর্ড যতই করুক, এ দলটি অজেয় কিছু নয়। শুধু মাঠে সেরাটা খেললেই হয়। সঙ্গে আফগানদের আত্মবিশ্বাসে আঘাত ফেলে যায়। আর জিম্বাবুয়ের দেখানো পথে হেঁটেছে বাংলাদেশ। এদিনের শুরুটা খারাপ হলেও গুছিয়ে নিতে খুব একটা সময় নেয়নি তারা। এরপর দারুণ লড়াই করেই জিতেছে দলটি। আর তাতে টাইগারদের আত্মবিশ্বাসের পারদ এখন অনেক উঁচুতে।

আর প্রাপ্ত এ মোমেন্টামকে সহজে হারাতে চান না মোসাদ্দেক। খুবই সতর্ক এ তরুণ, 'টি-টোয়েন্টিতে আসলে কোন কিছুই বলা যায় না। নির্দিষ্ট দিনে যে ভালো খেলবে সেই জিতবে। যে কোন সময় বদলে যেতে পারে মোমেন্টাম। তাই আমাদের সেরাটা দিয়েই লড়তে হবে। আমাদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। এটা কাজে লাগাতে হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

BGMEA wants 3-month window from India to clear pending shipments

The association urges the interim government to send a letter to India seeking the opportunity

20m ago