রোহিঙ্গাদের জন্য আরও ৮৭ মিলিয়ন পাউন্ড সহায়তা ঘোষণা যুক্তরাজ্যের

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক সাহায্য অব্যাহত রাখতে অতিরিক্ত ৮৭ মিলিয়ন পাউন্ডের সহায়তা ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য।
UK envoy
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন (ডানে) এবং বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের দাতাসংস্থা ইউকে এইডের প্রধান জুডিথ হারবার্টসন। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক সাহায্য অব্যাহত রাখতে অতিরিক্ত ৮৭ মিলিয়ন পাউন্ডের সহায়তা ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য।

২০১৭ সালের আগস্ট থেকে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় যুক্তরাজ্যের চলমান সহায়তা এখন বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ালো ২২৬ মিলিয়ন পাউন্ডে।

অতিরিক্ত এ অর্থায়নে রোহিঙ্গাদের খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপদ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন, যৌন সহিংসতার শিকার ব্যক্তিদের সহায়তা ও কাউন্সেলিং প্রদান এবং অসহায় ব্যক্তিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।

এছাড়া, রোহিঙ্গা সংকটের ফলে কক্সবাজারের স্থানীয়দের অর্থনৈতিক ও প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর যে প্রভাব পড়ছে তা প্রশমন তথা কক্সবাজার জেলার উন্নয়নে ২০ মিলিয়ন পাউন্ড বরাদ্দ রয়েছে।

কক্সবাজার জেলার সমগ্র জনগোষ্ঠী যেন আন্তর্জাতিক সহায়তার সুফল লাভ করে তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে যুক্তরাজ্য।

যুক্তরাজ্য সরকারের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক সেক্রেটারি অলক শর্মা বলেন, “রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যে মানবিক সংকটের সম্মুখীন হয়েছিল তার আকার পরিমাপ করা খুব কঠিন। ভয়াবহ নির্যাতনের সম্মুখীন হয়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা তাদের আবাসস্থল ছেড়ে পালিয়ে আসতে বাধ্য হন।”

“এ পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জীবন বাঁচানোর স্বার্থে খাদ্য, নিরাপদ পানি ও আশ্রয়সহ শিক্ষা ও কাউন্সেলিং প্রদানে ইউকে এইড বাংলাদেশ সরকারের সাথে কাজ করেছে,” যোগ করেন তিনি।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন বলেন, “যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মাঝে একটি দৃঢ় ও টেকসই অংশীদারিত্ব বিদ্যমান যা বাংলাদেশের মধ্যম আয়ের দেশ হয়ে ওঠার রূপান্তরের সাথে গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে।”

“রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণ যে অসাধারণ উদারতা এবং মানবতা প্রদর্শন করেছে আমরা ব্যাপকভাবে তার প্রশংসা করি,” যোগ করেন তিনি।

হাইকমিশনার বলেন, “আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত এ সংকটের সমাধান বের করা, যেন রোহিঙ্গারা নিরাপদ ভাবে ও মর্যাদার সাথে স্বেচ্ছায় মিয়ানমার ফিরে যেতে পারে। তাদের ফিরে যাওয়ার জন্য যেন যথাযথ পরিবেশ নিশ্চিত হয় যুক্তরাজ্য সেই ব্যাপারে অঙ্গীকারাবদ্ধ।”

বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের দাতাসংস্থা ইউকে এইডের প্রধান জুডিথ হারবার্টসন বলেন, “এ অতিরিক্ত অনুদান রোহিঙ্গাদের ও রোহিঙ্গা সংকটের কারণে প্রভাবিত কক্সবাজারের স্থানীয় জনগণের জীবনে স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।”

“আমরা বাংলাদেশ সরকার ও কক্সবাজারের জনগণের এমন বিশাল উদারতার ভূয়সী প্রশংসা করি। একই সাথে, আমরা সেই সকল ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা জানাই যারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সহায়তা প্রদানের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন,” যোগ করেন তিনি।

৮৭ মিলিয়ন পাউন্ডে যা হবে: কক্সবাজারের হাজারো অসহায় বাংলাদেশি পরিবারের জন্য ২০ মিলিয়ন পাউন্ডের অধিক সহায়তা; সাড়ে ৪ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ, বিশেষ করে সেসব রোহিঙ্গা নারী ও শিশু যারা যৌন সহিংসতা, অপহরণ ও পাচারের শিকার; ২৭টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিকের মাধ্যমে ৫ লাখের বেশি চিকিৎসা পরামর্শ প্রদান; আড়াই লাখের বেশি শরণার্থী এবং কক্সবাজারের ৫ লাখের বেশি স্থানীয়দের জন্য নিরাপদ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা; এক বছরের জন্য ১ লাখ শরণার্থীর মৌলিক খাদ্য চাহিদা পূরণ এবং খাদ্য সুরক্ষিত রাখার জন্য দেড় লাখ পরিবারকে কন্টেইনার প্রদান এবং স্থানীয় বন উজাড় ঠেকাতে ৩১ হাজার পরিবারকে রান্নার জন্য গ্যাসের সুবিধা প্রদান।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

9h ago