চীনে তো সড়ক দুর্ঘটনার শাস্তি সরাসরি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়: ইলিয়াস কাঞ্চন
গত বছর স্কুল শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সড়ক পরিবহন আইন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিলো। বেশ কিছুটা সময় নিয়ে সেই আইন সংসদে পাশও হয়েছে। এখন পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের চাপে সেই আইন প্রয়োগ করার আগেই সংশোধনের কথা ভাবছে সরকার। নিরাপদ সড়কের দাবিতে অনেক বছর ধরে আন্দোলন করছেন নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। এরকম একটি আইন তাদের বহুদিনের চাওয়া।
বিষয়টি নিয়ে দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনের সঙ্গে আজ (২৬ সেপ্টেম্বর) কথা বলেছেন ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের প্রধান ইলিয়াস কাঞ্চন।
ইলিয়াস কাঞ্চন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “আমিও সংবাদটি শুনলাম। শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে সড়ক পরিবহন আইন করা হলো। পরিবহন সেক্টরের চাপের মুখে সেটিকে যদি দুর্বল করা হয় তাহলে আমি তা দেশবাসীর বিবেচনার কাছেই ছেড়ে দিবো। দেশবাসী যদি এর প্রতিবাদ করেন, ছাত্ররা যদি এর প্রতিবাদ করে, তারা আবার যদি চাপ প্রয়োগ করে, তাহলে কাজ হবে।”
আপনার সংগঠনের পক্ষ থেকে আন্দোলনে যাওয়ার বিষয়ে কোনো কিছু ভাবছেন?- “অবশ্যই, আন্দোলনে যাবো। কালকে এই সংবাদটি দেখার পর থেকে খুব দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে আছি। নিরাপদ সড়কের দাবিতে আমি গত ২৬ বছর ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছি।”
“এই আইনটি ২০১২ সাল থেকে হবে হবে করেও করা হচ্ছে না। ছাত্রদের চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত সেই আইনটি পাশ হলো। এখন যদি তারা (সরকার/পরিবহন মালিক-শ্রমিক) যুক্তি দেখায়- পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে এক ধরনের আইন রয়েছে, তাহলে আমি বলবো- চীনওতো আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ। চীনে তো সড়ক দুর্ঘটনার শাস্তি সরাসরি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।”
“এছাড়াও, ভারতে তো অনেক ধরনের রয়েছে। সেসব আইন কি আমাদের দেশে প্রযোজ্য? আর একেকটা অঞ্চলের মানুষের মানসিকতা একেক রকম। আমাদের দেশের মানুষের আইন মানার প্রবণতা নেই বললেই চলে। ভারতে তো আইন মানার প্রবণতা রয়েছে। অথচ, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কথা বলে আমাদের আইন সংশোধনের কথা বলা হচ্ছে।”
“আমার দাবি ছিলো (দুর্ঘটনার জন্যে দায়ী ব্যক্তির) ১০ বছরের শাস্তি। সেখানে তা কমিয়ে পাঁচ বছর করা হয়েছে। সেই পাঁচ বছরটিকেও যদি পরিবর্তন করে ফেলা হয় তাহলে তো এর প্রতিবাদ করবোই।”
বলা হচ্ছে, পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের স্বার্থও দেখা উচিত।– “মালিক-শ্রমিকের স্বার্থতো এতো বছর দেখা হলো। এতোগুলো বছর তাদের স্বার্থ দেখে দেশের মানুষদের সড়কে পিষ্ট করা হলো। সরকার আর কতো মালিক-শ্রমিকদের স্বার্থ দেখবে? এখন জনগণের স্বার্থ দেখা উচিত।”
“আর এটি জনগণের স্বার্থের বিষয়ও নয়। প্রতিটি নাগরিকের সঠিক আইন-বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। জনগণ যাতে বিচার পায়, যারা সরকারে থাকেন তাদেরকে সেই ব্যবস্থা করতে হবে। কিছু মানুষকে ফেভার করে সারাদেশের মানুষকে ডিসফেভারের মধ্যে রাখা হবে- তা হতে পারে না।”
Comments