'রোহিঙ্গাদের ফেরাতে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে হবে বিশ্ব সম্প্রদায়কে'

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং স্বেচ্ছায় তাদের পৈত্রিক নিবাসে ফিরে যাওয়ার পরিবেশ সৃষ্টিতে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
ছবি: বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং স্বেচ্ছায় তাদের পৈত্রিক নিবাসে ফিরে যাওয়ার পরিবেশ সৃষ্টিতে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রোহিঙ্গা সমস্যাটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা এই সংকটের একটি শান্তিপূর্ণ ও তাৎক্ষণিক সমাধান চাই। মিয়ানমারই এই সমস্যার সৃষ্টি করেছে এবং এর সমাধানও মিয়ানমারেই রয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রী কাউন্সিল অব ফরেন রিলেশনস এ (সিএফআর) বুধবার বিকেলে “এ কনভারসেশন উইথ অনারেবল প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনা” শীর্ষক একটি ইন্টার‍্যাক্টিভ সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রদত্ত ভাষণে একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে সন্ত্রাস এবং চরমপন্থাকে দুটি সামাজিক ব্যাধি আখ্যায়িত করে এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য চার দফা প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

তার প্রস্তাবে রয়েছে-

প্রথমত, সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের যোগান অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, তাদের অর্থের যোগান বন্ধ করতে হবে। তৃতীয়ত, সামাজিক বৈষম্য দূর করতে হবে এবং চতুর্থত, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সমস্যা শান্তিপূর্ণভাবে আলোচনার মাধ্যমে উভয় পক্ষের জন্য সমান সুবিধাজনক পরিস্থিতি নিশ্চিতের মাধ্যমে সমাধান করতে হবে।

মিয়ানমার সরকার একটি পরিকল্পিত নৃশংসতার মাধ্যমে উত্তর রাখাইন রাজ্য থেকে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়কে নিধন শুরু করে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “তারা (রোহিঙ্গা) নৃশংসতা ও সন্ত্রাস থেকে পালিয়েছিল। আমরা মানবিক দিক বিবেচনা করে সীমান্ত খুলে দেই।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য সাধ্যমত সব ধরনের মানবিক সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন, এবং যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা সমস্যার বিষয়ে বাংলাদেশকে সর্বপ্রকার সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছে।

তিনি সবাইকে বাংলাদেশের কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলো পরিদর্শনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, এ সমস্ত শিবির পরিদর্শনে এসে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী এবং স্থানীয় সন্ত্রাসীদের দ্বারা রোহিঙ্গাদের নিধনযজ্ঞের বিভিন্ন নৃশংস ঘটনাবলী শুনলে আপনারা কেঁপে হয়ে উঠবেন।”

“আমি এও বিশ্বাস করি, আপনাদের হৃদয় যন্ত্রণায় দগ্ধ হবে এবং আপনারা শিগগিরই রোহিঙ্গাদের এসব বেদনাদায়ক পরিস্থিতির অবসান চাইবেন,” যোগ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের মানবিক কারণে আশ্রয় প্রদানের ক্ষেত্রে আরেকটি যে বিষয় কাজ করেছে তা হচ্ছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশীদের নিজস্ব অভিজ্ঞতার বিষয়টি। সে সময় বাংলাদেশের প্রায় এক কোটি জনগণ প্রতিবেশী দেশ ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় গ্রহণে বাধ্য হয়েছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, “১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট আমার পিতা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার পরিবারের ১৮ জন সদস্য সহ নৃশংসভাবে হত্যার পর আমি নিজেও শরণার্থী হয়ে পড়েছিলাম।”

তিনি আরও বলেন, “পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কেবলমাত্র আমি এবং আমার ছোট বোন শেখ রেহানা সে সময় বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যাই। প্রায় ছয়টি বছর তৎকালীন স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান আমাদেরকে দেশে ফিরতে দেয়নি। যে কারণে, ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় গ্রহণে বাধ্য হই।”

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

8h ago