সুয়ারেজের জোড়া গোলে পিছিয়ে পড়েও জিতল বার্সা

ছবি: এএফপি

গ্রুপ অব ডেথের লড়াইয়ে ঘরের মাঠে পা হড়কানো মানেই ছিটকে পড়ার বড় শঙ্কা। এদিন ম্যাচের শুরুতে গোল খেয়ে এমন আশঙ্কায় ছিল স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনা। তবে শেষ পর্যন্ত দলকে উদ্ধার করেছেন লুইস সুয়ারেজ। জোড়া গোল করে উল্টো দলকে এনে দিয়েছেন দারুণ এক জয়। তাতে ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টার মিলানকে ২-১ গোলে হারিয়ে জয়ের ধারায় ফিরেছে লিওনেল মেসির দল।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ‘এফ’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছিল বার্সেলোনা। ড্র হয়েছিল প্রথম ম্যাচে ইন্টার-স্লাভিয়া প্রাগের লড়াইও। তবে জার্মান দলটি অবশ্য এদিন স্লাভিয়াকে হারিয়েছে। তাই পয়েন্ট খোয়ালে কিছুটা হলেও সমস্যায় পড়ত বার্সা। কিন্তু এমন কিছু হতে দেননি উরুগুইয়ান তারকা সুয়ারেজ।

ইনজুরি কাটিয়ে প্রথম একাদশে ফিরলেন লিওনেল মেসি। তার উপস্থিতিতে স্বরূপে জ্বলে ওঠে ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা। কিন্তু ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই ন্যু ক্যাম্প স্তব্ধ করেন দেন লাউতারো মার্তিনেজ। মাঝ মাঠে জটলা থেকে আলেক্সিস সানচেজের বাড়ানো বল দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বাঁ প্রান্ত থেকে কোণাকোণি শটে লক্ষ্যভেদ করেন এ আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড।

১৫তম মিনিটে গোল শোধ করার ভালো সুযোগ পেয়েছিলেন আতোঁয়ান গ্রিজমান। সের্জি রোবার্তোর ক্রস থেকে ফাঁকায় হেড নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার হেড বাইরের জাল কাঁপায়। চার মিনিট পর সের্জিও বুসকেতসের শট বারপোস্টের অনেক উপর দিয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ২৫তম মিনিটে মেসির দূরপাল্লার শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন ইন্টার গোলরক্ষক সামির হেন্দানোভিচ।

৩৩তম মিনিটে বড় বাঁচা বেঁচে যায় বার্সেলোনা। আরও একটি গোল প্রায় খেতে বসেছিল স্বাগতিক দলটি। সানচেজের বাড়ানো বলে একেবারে ফাঁকায় শট নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন নিকোলো বারেল্লা। সে মুহূর্তে দারুণ ট্যাকলে সে যাত্রা দলকে রক্ষা করেন নেলসন সেমেদো। চার মিনিট পর তো অবিশ্বাস্য মার্ক-আন্দ্রেস টের স্টেগেন। অ্যান্তনিও কেনদ্রেভার ক্রস থেকে দুর্দান্ত এক হেড দিয়েছিলেন মার্তিনেজ। কিন্তু তার চেয়েও অসাধারণ দক্ষতায় বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে তা ঠেকিয়ে দেন বার্সা গোলরক্ষক।

৪০মিনিটে ডি-বক্সে ঢুকে জোরালো এক শট নিয়েছিলেন স্তেফানো সেনসি। কিন্তু অল্পের জন্য তা লক্ষ্যে থাকেনি। পরের মিনিটে ডি বক্সের অনেক বাইরে থেকে নেওয়া সুয়ারেজের শটে তেমন জোর না থাকায় বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকাতে কোন সমস্যা হয়নি ইন্টার গোলরক্ষক সামিরের।

৪৩তম মিনিটে তো একেবারে ফাঁকায় থেকে হেড দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন সানচেজ। কিন্তু ফাঁকায় থেকেও লক্ষ্যে রাখতে পারেননি বার্সেলোনার সাবেক এ ফরোয়ার্ড। পরের মিনিটে মেসির পাস থেকে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ডান প্রান্ত থেকে ভালো শট নিয়েছিলেন আর্থুর মেলো। কিন্তু অল্পের জন্য বারপোস্টের উপর দিয়ে দিয়ে গেলে হতাশা বাড়ে স্বাগতিকদের।

প্রথমার্ধে সমান তালে লড়াই হলেও দ্বিতীয়ার্ধে প্রায় পুরোটাই ছিল বার্সেলোনার দাপট। সে ধারায় সমতায় ফিরতেও খুব বেশি সময় নেয়নি দলটি। ৫৮তম মিনিটে দারুণ এক গোল দিয়ে সমতা ফেরান সুয়ারেজ। মেসির পাস থেকে আড়াআড়ি দারুণ এক ক্রস দেন বদলী খেলোয়াড় আর্তুরো ভিদাল। আর উড়ন্ত বলে ডি বক্সের বাইরে থেকে দারুণ এক সাইড ভলিতে জাল খুঁজে নেন এ উরুগুইয়ান ফরোয়ার্ড।

সমতায় ফিরে আরও তেতে ওঠে বার্সেলোনা। ৬১ তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর দারুণ সুযোগ ছিল গ্রিজমানের। কিন্তু তার শট বাইরের জাল কাঁপায়। সাত মিনিট পর দূরপাল্লার দারুণ এক শট নিয়েছিলেন বদলী খেলোয়াড় উসমান দেম্বেলে। কিন্তু অল্পের জন্য নিশানা ঠিক রাখতে পারেননি।  

কাঙ্ক্ষিত গোলটি ৮৫ মিনিটে পায় স্বাগতিকরা। দলকে এগিয়ে দেন সেই সুয়ারেজ। অবশ্য এ গোলের মূল অবদানই ছিল মেসির। প্রায় মাঝ মাঠ থেকে একক দক্ষতায় কাটিয়ে ডি-বক্সের সামনে বল দেন সুয়ারেজকে। বল ধরে এগিয়ে বুদ্ধিদীপ্ত শটে ইন্টার গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন এ ফরোয়ার্ড। 

৮৯ মিনিটে গোল পেতে পারতেন মেসিও। দেম্বেলের ক্রস থেকে জোরালো শট নিতে পারেননি। ফলে সহজেই সে বল ধরে ফেলেন ইন্টার গোলরক্ষক সামির। তবে তাতে কোন সমস্যা হয়নি দলটির। স্বস্তির জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে তারা।  

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago