সিসিটিভি ফুটেজ: আবরারকে পাঁজাকোলা করে সিঁড়িতে নেওয়া হয়
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবরার ফাহাদকে ধরাধরি করে শেরে বাংলা হলের বারান্দা দিয়ে সিঁড়ির দিকে নিয়ে যাওয়ার একটি দৃশ্য সম্বলিত সিসিটিভি ফুটেজ দ্য ডেইলি স্টারের হাতে এসেছে। সংগ্রহ করা এই ভিডিওতে আবরারকে পাঁজাকোলা করে নিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে।
হলের সিঁড়ির পাশে যেখানে আবরারের লাশ পাওয়া যায় সেখানে একটি সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল। ওই ক্যামেরাতেই ভিডিওটি ধারণ হয়েছে। এতে তিন জন ছাত্রকে দোতলার সিঁড়ির দিকে আবরারকে তুলে নিয়ে যেতে দেখা যায়। এদের পেছনেই একজনকে হেঁটে যেতে দেখা যায় যার পরে আরও ছয় জন ছিলেন। এসময় আবরার গুরুতর আহত অবস্থায় জীবিত ছিলেন নাকি ইতিমধ্যে মারা গিয়েছিলেন ভিডিও দেখে তা বোঝা যায়নি।
ভোরে সিঁড়ির পাশেই আবরারের লাশ পাওয়া যায়।
ছাত্রদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা ভিডিও ফুটেজটির সত্যতা নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নিহত আবরার ফাহাদ থাকতেন শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে। তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে।
গত (৬ অক্টোবর) রাতে হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে তাকে ডেকে নিয়ে ‘শিবির’ সন্দেহে জেরা করার পর ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প দিয়ে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা আবরারকে পেটান বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান ওই হলের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী।
মারধরের সময় ওই কক্ষে উপস্থিত ছিলেন বুয়েট ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক আশিকুল ইসলাম বিটু। তিনি বলেন, “আবরারকে শিবির সন্দেহে রাত আটটার দিকে ডেকে আনা হয়। সেখানে আমরা তার মোবাইলে ফেসবুক ও মেসেঞ্জার চেক করি। ফেসবুকে বিতর্কিত কিছু পেইজে তার লাইক দেওয়ার প্রমাণ পাই। সে কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগও করেছে। শিবির সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাই।”
“আবরারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বুয়েট ছাত্রলীগের উপ দপ্তর সম্পাদক ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মুজতবা রাফিদ, উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, উপ-আইন সম্পাদক অমিত সাহা। পরবর্তীতে প্রমাণ পাওয়ার পরে চতুর্থ বর্ষের ভাইদের খবর দেওয়া হয়,” যোগ করেন ছাত্রলীগ নেতা।
তিনি আরো জানান, “খবর পেয়ে বুয়েট ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার সেখানে আসেন। একপর্যায়ে আমি রুম থেকে বের হয়ে আসি। এরপর হয়তো ওরা মারধর করে থাকতে পারে। পরে আজ (৭ অক্টোবর) ভোররাত তিনটার দিকে শুনি আবরার মারা গেছে।”
শেরে বাংলা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাফর ইকবাল খান সাংবাদিকদের বলেন, “ডাক্তারের ফোন পেয়ে আমি হলে আসি। এসে দেখি ছেলেটির লাশ পড়ে আছে। ডাক্তার জানান ছেলেটি আর নেই। পরে তাকে পুলিশের সহায়তায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।”
আরও পড়ুন:
শিবিরের সঙ্গে আবরারের সংশ্লিষ্টতা ছিল না: পরিবার
দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করুন: ছাত্রলীগ
মতের পার্থক্যের কারণে কাউকে মেরে ফেলা উচিত না: কাদের
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে আবরারের শেষ ফেসবুক পোস্ট
‘রক্তক্ষরণ ও ব্যথায় আবরার মারা গিয়েছেন’
আবরারের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ বিচার দাবি
Comments