‘কারো হাতে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ জিম্মি থাকতে পারে না’

কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল আদর্শহীন যুব ও ছাত্র সংগঠনের হাতে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ জিম্মি থাকতে পারে না। এই অবস্থায় অতিদ্রুত সংকট থেকে জাতি ও দেশকে রক্ষা করতে সরকারের আশু পদক্ষেপ চেয়েছেন দেশের বিশিষ্টজনেরা।
prof._anisuzzaman
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান (১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৭-১৪ মে ২০২০)। ছবি: স্টার ফাইল ফটো

কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল আদর্শহীন যুব ও ছাত্র সংগঠনের হাতে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ জিম্মি থাকতে পারে না। এই অবস্থায় অতিদ্রুত সংকট থেকে জাতি ও দেশকে রক্ষা করতে সরকারের আশু পদক্ষেপ চেয়েছেন দেশের বিশিষ্টজনেরা। 

বুয়েটে আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষিতে আজ এক লিখিত বিবৃতিতে নিজেদের উগ্বেগের কথা জানান, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী, সৈয়দ হাসান ইমাম, হাসান আজিজুল হক, অনুপম সেন, সরোয়ার আলী, রামেন্দু মজুমদার, ফেরদৌসী মজুমদার, মামুনুর রশীদ, মফিদুল হক ও নাসির উদ্দীন ইউসুফ। 

লিখিত বিবৃতিতে তারা বলেন, “এক গভীর উৎকণ্ঠা ও অসীম বেদনায় নিমজ্জিত আজ পুরো জাতি। বুয়েট শিক্ষায়তনে সহপাঠী আবরার ফাহাদকে একদল ছাত্রলীগ কর্মী কর্তৃক নির্মমভাবে হত্যা করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুবলীগ নামক যুব সংগঠনের সামাজিক অনাচার, মাদক ব্যবসা ও দুর্নীতির অবিশ্বাস্য নিদর্শন আমাদের দারুণভাবে হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে।”

“বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান প্রতিষ্ঠিত ছাত্র ও যুব সংগঠনের এ বিপথগামীতা আমাদের হতাশ ও ব্যথিত করেছে,” বলেও মন্তব্য করেন তারা।

তারা আরও বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনাগুলো প্রমাণ করে রাজনৈতিক দলের আদর্শবিহীন দেউলিয়া চরিত্র। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ তাদের ছাত্র, যুব ও দলীয় কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে। শুধু তাই নয়, কোনো প্রকার আদর্শের ভিত্তিতে দল ও অঙ্গ সংগঠন পরিচালনা না করে শুধু পেশী শক্তি-নির্ভর দল গঠন ও পরিচালনা কী ভয়াবহ পরিণতি আনে তা আজ সবার সামনে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।”

আবরার হত্যার শুধুমাত্র দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মধ্য দিয়ে এই ভয়াবহ সংকট নিরসন হবে না উল্লেখ করে আরও বলেন, “আমরা মনে করি, মানবিক মূল্যবোধের যে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ আজ জাতিকে গ্রাস করেছে, তা থেকে মুক্তি পেতে হলে সরকার, শাসকদল ও সকল রাজনৈতিক দলকে নিজ নিজ দল, অঙ্গ সংগঠন, সরকার ও প্রশাসনের অভ্যন্তরে মানবিক মূল্যবোধ ও সহনশীল-সংস্কৃতির বীজ বপন করতে হবে। বিশেষকরে সরকার ও সরকারি দলকে এ কাজে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।”

“অন্যথায় জাতি এক ভয়াবহ দুর্যোগের মুখোমুখি হবে” বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন এই শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী ও সংস্কৃতি কর্মীরা। তারা বলেন, “কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল আদর্শহীন যুব ও ছাত্র সংগঠনের হাতে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ জিম্মি থাকতে পারে না।”

“আমরা অতিদ্রুত এই সংকট থেকে জাতি ও দেশকে রক্ষা করতে সরকারের আশু পদক্ষেপ প্রত্যাশা করি,” যোগ করেন তারা।

Comments

The Daily Star  | English

Army given magistracy power

The government last night gave magistracy power to commissioned army officers with immediate effect for 60 days in order to improve law and order.

3h ago