‘আসলেই কি দেশের গণমাধ্যম পুরোপুরি স্বাধীন?’

প্রশ্ন, বিচারপতি শেখ হাসান আরিফের
যৌন হয়রানি প্রতিরোধে হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়ন ও গণমাধ্যমের ভূমিকা শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ। ছবি: সংগৃহীত

বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ বলেছেন, ক্যাসিনো বাংলাদেশে অনেক বছর ধরে আছে, কিন্তু সাংবাদিকরা এটা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারেননি। যখন প্রধানমন্ত্রী বললেন ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন তখনই সাংবাদিকরা ঝাঁপিয়ে পড়লেন রিপোর্ট করার জন্য। তাহলে আসলেই কি আমাদের দেশে পুরোপুরি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আছে?

“তার মানে কি আপনাদের মধ্যেও একটা ভয় কাজ করছে? রিপোর্ট করলে হয়ত আমি সমস্যায় পড়ে যাব, হয়ত আমার সম্পাদক সমস্যায় পড়ে যাবে। এরকম একটা পরিস্থিতির মধ্যে একইরকমভাবে যৌন হয়রানিটা ডেভেলপ করছে,” মন্তব্য করেন এই বিচারপতি।

“যৌন হয়রানি প্রতিরোধে হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়ন ও গণমাধ্যমের ভূমিকা” শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিচারপতি আরিফ এসব কথা বলেন। আজ শনিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে এই কর্মশালা হয়।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ইনডেক্স বলছে আমাদের সাংবাদিকদের বা প্রেসের স্বাধীনতা কমে গেছে। সাত/আট ধাপ নেমে গেছে। যদিও আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে প্রতিদিন আমরা গরম গরম বা সেনসেটিভ খবর পাচ্ছি। খেয়াল করে দেখবেন আপনারা সাংবাদিকরা তখনই একটা বিষয়ে রিপোর্ট করেন বা করতে পারেন যখন সেটা আউটবার্স্ট হয়ে যায়। কিন্তু চোখের সামনে আসার আগে ঘটনাগুলো হচ্ছে আপনারা সবাই জানেন কিন্তু প্রকাশ করতে পারেন না এবং প্রকাশ করতে না পারার পেছনে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা আছে। এখানেই গণমাধ্যমের স্বাধীনতার একটা সমস্যা আছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের মারধরের সংস্কৃতির পেছনে র‍্যাগিং ও আদব কায়দা শেখানোর নামে গেস্টরুমে নিয়ে নির্যাতনকে দায়ী করে বিচারপতি আরিফ বলেন, “যখন নির্যাতন করার সংস্কৃতি প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তৈরি হয়েছে তখন শিক্ষকরা কোথায় ছিলেন? আজকে শিক্ষক সমিতি আবরারের ঘটনা নিয়ে মিছিল করছে। আপনারা সেদিন কোথায় ছিলেন?”

এসব ঘটনা নিয়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দিয়ে ব্যবস্থা না নেওয়ার জন্যও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সমালোচনা করেন বিচারপতি। বলেন, বিষয়গুলো নিয়ে পত্রিকায় লেখালেখি হয়েছে। কিন্তু আমরা নীরব, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব, সবাই নীরব। যেই আবরার মারা গেল, যখন প্রধানমন্ত্রী বলল এটার বিচার হতে হবে তখন সবাই ঝাঁপিয়ে পড়ল।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। বক্তব্য রাখেন ফেয়ার ওয়্যার ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ বাবলুর রহমান, জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির পরিচালক তৌহিদা খন্দকার, সহ-সভাপতি জোবায়দা পারভীন, সাধারণ সম্পাদক সীমা জহুর, ল, রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি ওয়াকিল আহমেদ হিরণ প্রমুখ।

Comments

The Daily Star  | English

BGMEA wants 3-month window from India to clear pending shipments

The association urges the interim government to send a letter to India seeking the opportunity

5h ago