জয় না পাওয়ায় হতাশ তবে দারুণ লড়াইয়ে গর্বিত বাংলাদেশ কোচ
একটি বল লাগল বারপোস্টে, আরেকটি একেবারে গোললাইন থেকে শেষ মুহূর্তে ফেরালেন ভারতীয় ডিফেন্ডার আদিল খান। এছাড়া ফরোয়ার্ডদের একের পর এক সহজ সুযোগ মিস তো রয়েছেই। অন্যথায় সল্ট লেকে এদিন বড় জয়ই পেতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ড্র মেনেই মাঠ ছাড়তে হয়েছে জামাল ভূঁইয়াদের। শক্তি, সামর্থ্য ও র্যাঙ্কিংয়ে অনেক এগিয়ে থাকা ভারতের বিপক্ষে দারুণ লড়াইয়ে তাই গর্বিত বাংলাদেশের কোচ জেমি ডে। তবে জয় না পাওয়ায় হতাশও তিনি।
আধুনিক ফুটবল অনেকটাই পরিকল্পনা নির্ভর। প্রতিপক্ষ যত শক্তিশালীই হোক না কেন, নিজেদের পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পারলে বাঘা বাঘা দলকে হারিয়ে দেওয়াও অসম্ভব কিছু না। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) যুব ভারতী ক্রীড়াঙ্গনে এমনই একটি দিন পার করেছে বাংলাদেশ। রক্ষণ জমাট রেখে পাল্টা আক্রমণে কাঁপিয়ে দিয়েছে ভারতকে। নিতান্ত ভাগ্য সঙ্গে ছিল না বলেই জয় পায়নি বাংলাদেশ। তাই হতাশাই ঝরে বাংলাদেশ কোচের কণ্ঠে, ‘আমরা দারুণ খেলেছি। ছেলেরা পরিকল্পনা ভালো বাস্তবায়ন করেছে এবং লিড নেওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে বেশ কিছু সুযোগ সৃষ্টি করেছে। তবে আমি হতাশ শেষ মুহূর্তে সমতা ফেরায়, কারণ আমরা তিন পয়েন্ট পাওয়ার মতো সবকিছুই করেছি।’
বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপের যৌথ বাছাইয়ের ম্যাচের ৪২তম মিনিটে সাদ উদ্দিনের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। সে লিড বাংলাদেশ ধরে রেখেছিল ৮৮তম মিনিট পর্যন্ত। কিন্তু একটি কর্নার থেকে দীর্ঘদেহী আদিলের নিখুঁত হেডেই স্বপ্নভঙ্গ হয় বাংলাদেশের। এর মাঝে বাংলাদেশের সুযোগ ছিল বেশ কিছু। তাই স্বাভাবিকভাবেই আক্ষেপ লুকাতে পারেননি জেমি, ‘ম্যাচের সাত মিনিট বাকি থাকতে সেট পিস থেকে একটা হেডে সমতা ফেরায় আমি খুবই হতাশ। দ্বিতীয়ার্ধে আমরা দুটি গোল থেকে বঞ্চিতও হয়েছি। একটা তো একেবারে গোললাইন থেকে ফিরিয়ে দিল এবং আরেকটি ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। অবশ্য আমরাও একটি গোললাইন থেকে ফিরিয়েছি। দিন শেষে ফলটা খারাপ না, তবে আমরা ম্যাচটা জিততে পারতাম যদি ছেলেরা শেষ সাত মিনিট আটকে রাখতে পারত।’
বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ উপলক্ষে যুব ভারতী ক্রীড়াঙ্গন ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। ৭০ হাজারের বেশি স্বাগতিক সমর্থকদের সামনে জামাল ভূঁইয়ারা লড়াই করেছেন সমান তালে। আবার ভারতের এ দলটি গত পাঁচ বছরে উন্নতি করেছে অনেক। র্যাঙ্কিংয়ে ব্যবধানও গড়েছে বড়। তাই তাদের বিপক্ষে তাদের মাঠে এমন পারফরম্যান্সে গর্বিত বাংলাদেশের কোচ, ‘আমরা ভারতের ৭০ হাজার সমর্থকের সামনে জয়টা প্রত্যাশা করিনি। পরিবেশটা দারুণ ছিল এবং ছেলেদের পারফরম্যান্সে আমি খুবই গর্বিত। আপনি যদি র্যাঙ্কিং দেখেন, তাহলে আমরা তাদের চেয়ে ৮৫ ধাপ (আসলে ৮৩) পিছিয়ে আছি। তাই ভারতের বিপক্ষে তাদের বিশাল সমর্থকদের সামনে ড্র করাও দারুণ। তবে আমরা হতাশ তিনটি পয়েন্ট পাইনি বলে।’
ম্যাচের শুরুতে অবশ্য পেনাল্টিও পেতে পারত বাংলাদেশ। বাঁ প্রান্ত দিয়ে কাটিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে যাওয়া মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে পেছন থেকে ট্যাকল করতে গিয়ে ফেলে দেন ভারতীয় এক ডিফেন্ডার। বল পায়ে লাগাতে না পারায় স্বাভাবিকভাবেই পেনাল্টির বাঁশি বাজানোর কথা ছিল রেফারির। কিন্তু বিষয়টি বেমালুম এড়িয়ে যান সিরিয়ার রেফারি। তবে এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি জেমি।
Comments