রাবি শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত, ৩ ‘ছিনতাইকারী’ গ্রেপ্তার

RU-1.jpg
১৮ অক্টোবর ২০১৯, ছিনতাইকারীর হামলায় এক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করেন রাবি শিক্ষার্থীরা। ছবি: স্টার

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছিনতাইকারীর হামলায় এক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনার তিন সন্দেহভাজন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এর আগে, গতকাল রাত ১১টার দিকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফিরোজ আনাম বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন বলে জানান মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নগরীর তালাইমারি এলাকার জাহিদ আলীর ছেলে রুবেল হোসেন, শিরোইল এলাকার বাকির হোসেনের ছেলে রিফাত হোসেন রাকেশ এবং মির্জাপুর এলাকার খোরশেদের ছেলে পারভেজ।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত পৌনে আটটার দিকে অর্থনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ফিরোজ আনাম তার বান্ধবীকে নিয়ে স্টেডিয়ামের পাশের ফটোকপির দোকানে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখন কয়েকজন যুবক ফিরোজকে পাশের হবিবুর রহমান হল মাঠের দিকে ডেকে নিয়ে যায়। এসময় তার বান্ধবীও এগিয়ে গেলে, তাদের কাছে থাকা ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা।

এসময় কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ফিরোজকে ছুরিকাঘাত করে তারা পালিয়ে যায়। পরে আশেপাশের লোকজন ফিরোজকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। তাকে রামেক হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।

চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ বক্সের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম জানান, ওই শিক্ষার্থীর শারীরিক অবস্থা অনেকটাই স্থিতিশীল এবং তিনি শঙ্কামুক্ত।

তিনি জানান, দুর্বৃত্তরা লোহা জাতীয় ভোঁতা কোনো কিছু দিয়ে ফিরোজের মাথায় আঘাত করেছে। এতে কিছু অংশ থেঁতলে গেছে। ফলে ওই স্থান থেকে রক্ত ঝরছিলো। তাই রক্ত বন্ধের জন্য তার মাথায় থাকা ক্ষতস্থানে সেলাই দিতে হয়েছে।

এদিকে ছুরিকাঘাতের বিষয়টি জানাজানি হলে রাত সাড়ে নয়টার দিকে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেন অর্থনীতি বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী। এসময় সড়কের দুপাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, দিনের পর দিন রাবি ক্যাম্পাসে চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে, অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো ঘটনাতেই কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বাধীনভাবে চলাচলের পরিবেশ ভীতিকর হয়ে উঠছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেয়।

উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন তুলে নেওয়ার ব্যাপারে কথা বলতে গেলে তোপের মুখে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর হুমায়ুন কবীর, একপর্যায়ে তিনি শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হন।

পরবর্তীতে হামলার ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে এবং প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করবে, এমন আশ্বাসে রাত পৌনে ৩টার দিকে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করেন।

রাবি প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, “ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে, সে ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সজাগ থাকবে। প্রয়োজনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে।”

এদিকে, ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করার দাবিতে আজ (১৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

Comments

The Daily Star  | English
Anti-Terrorism Act

Banning party activities: Govt amends anti-terror law

The interim government is set to bring the curtain down on the Awami League as a functioning political party.

7h ago