১১ দফা দাবিতে ধর্মঘটে জাতীয় ক্রিকেটাররা

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বিভিন্ন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অসন্তোষ জানিয়ে সব ধরনের ক্রিকেটীয় কার্যক্রম বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন দেশের শীর্ষ ক্রিকেটাররা। তাদের বক্তব্য- দেশের ক্রিকেট ঠিক পথে নেই। তারা মোট ১১ দফা দাবি পেশ করেছেন। দাবি না মানা পর্যন্ত সব ধরনের ক্রিকেট খেলা, ক্যাম্প ও অনুশীলন থেকে বিরত থাকবেন জাতীয় ক্রিকেটাররা।
bangladesh cricketers

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বিভিন্ন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অসন্তোষ জানিয়ে সব ধরনের ক্রিকেটীয় কার্যক্রম বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন দেশের শীর্ষ ক্রিকেটাররা। তাদের বক্তব্য- দেশের ক্রিকেট ঠিক পথে নেই। তারা মোট ১১ দফা দাবি পেশ করেছেন। দাবি না মানা পর্যন্ত সব ধরনের ক্রিকেট খেলা, ক্যাম্প ও অনুশীলন থেকে বিরত থাকবেন জাতীয় ক্রিকেটাররা।

সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে মিরপুরে একাডেমি মাঠে এক সংবাদ সম্মেলনে ঘরোয়া আসরগুলোর পারিশ্রমিকসহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে নিজেদের ক্ষোভের কথা জানিয়ে সাংবাদিকদের কাছে ১১ দফা দাবি তুলে ধরেছেন সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিক রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদসহ তারকা ক্রিকেটাররা।

ক্রিকেটারদের এই ঘোষণায় আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া জাতীয় ক্রিকেট লিগের তৃতীয় রাউন্ড এবং ২৫ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া জাতীয় দলের ক্যাম্প নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। এর ফলে অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছে ভারতের বিপক্ষে আসন্ন সিরিজও।

তবে সাকিব জানিয়েছেন, যেহেতু অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সামনে বিশ্বকাপ আছে, তাই তাদেরকে এই ধর্মঘটের আওতায় রাখা হচ্ছে না। আর দেশের নারী ক্রিকেটাররাও চাইলে তাদের সঙ্গে যোগ দিতে পারেন।

১১ দফা দাবি জানানো শেষে সাকিব দিয়েছেন ধর্মঘটের ঘোষণা, ‘জাতীয় দল, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারসহ সবাই এই ধর্মঘটের অন্তর্ভুক্ত এবং সেটা আজ থেকে। জাতীয় লিগ থেকে শুরু করে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট বলেন, জাতীয় দলের প্রস্তুতি বলেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বলেন, সবগুলোই এর অন্তর্ভুক্ত।’

‘আলোচনা সাপেক্ষে অবশ্যই সবকিছুর সমাধান হবে। দাবিগুলো যখন মানা হবে তখন আমরা আমরা স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরে যাব।’

তিনি যোগ করেছেন, ‘আমরাও সবাই চাই ক্রিকেটের উন্নতি হোক। এখানে একটা ক্রিকেটার কেউ তিন-চার বছর খেলবে, কেউ দশ বছর আছে। যারা ভবিষ্যতে আসবে, তাদের জন্য আমরা একটা ভালো পরিবেশ রেখে যেতে চাই যেখান থেকে বাংলাদেশের ক্রিকেট সামনে এগিয়ে যাবে।’

ক্রিকেটারদের ১১ দফা দাবি:

১. ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন (কোয়াবের) বর্তমান কমিটিকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। ক্রিকেটারদের সরাসরি ভোটে ঠিক করা হবে নতুন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক।

২. ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের দলবদলের নিয়ম আগের মতো করতে হবে। যে যার পছন্দমতো দলে যাবে। 

৩. এ বছর না হোক, তবে পরের বছর থেকে আগের মতো (ফ্র্যাঞ্চাইজি পদ্ধতিতে) বিপিএল আয়োজন করতে হবে। স্থানীয় ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক বাড়াতে হবে।

৪. প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ম্যাচ ফি ১ লাখ করতে হবে। চুক্তিভুক্ত প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটারদের বেতন ৫০% বাড়াতে হবে। ১২ মাস কোচ-ফিজিও দিতে হবে, প্রতি বিভাগে অনুশীলনের ব্যবস্থা করতে হবে।

৫. আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যে বল দিয়ে খেলা হয়, ঘরোয়া লিগে সেই বল ব্যবহার করতে হবে। দৈনিক ভাতা ১৫০০ টাকায় কিছু হয় না, তা বাড়াতে হবে। এক ভেন্যু থেকে আরেক ভেন্যুতে যাওয়ার জন্য যাতায়াত ভাড়া মাত্র ২৫০০ টাকা। তা বাড়াতে হবে অথবা প্লেন ভাড়া দিতে হবে। হোটেল ভালো হতে হবে, জিম ও সুইমিংপুল সুবিধা থাকতে হবে। 

৬. জাতীয় দলে চুক্তিভুক্ত ক্রিকেটারের সংখ্যা অন্তত ৩০ করতে হবে ও বেতন বাড়াতে হবে।

৭. দেশি সব স্টাফদের বেতন বাড়াতে হবে। কোচ থেকে শুরু করে গ্রাউন্ড স্টাফ, আম্পায়ার- সবার বেতন বাড়াতে হবে।

৮. জাতীয় লিগের পর আগে একটি ওয়ানডে লিগ হতো, সেটি ফিরিয়ে আনতে হবে। বিপিএলের আগে আরেকটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট দিতে হবে।

৯. ঘরোয়া ক্যালেন্ডার চূড়ান্ত হতে হবে। 

১০. ডিপিএলের (ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ) পাওনা টাকা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দিতে হবে।

১১. বিদেশে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ দুটির বেশি খেলা যাবে না, এমন নিয়ম তুলে দিতে হবে। সুযোগ থাকলে সবাই খেলবে।

** এছাড়া ঘরোয়া ক্রিকেটে অনিয়ম, দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। প্রথম বিভাগ, দ্বিতীয় বিভাগ, তৃতীয় বিভাগে ইচ্ছে করেই কোনো দলকে জেতানো বা হারানো হয়। এসব বন্ধ করতে হবে।

ভিডিও:

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

6h ago