ইতিবাচক আলোচনার আভাস

bcb
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

বিসিবি কার্যালয়ের সামনে অলস ভঙ্গিতে পায়চারি করছিলেন ট্রেনার মারিও ভিল্লাভারায়ন। চেনা সাংবাদিক দেখে আমুদে ভদ্রলোকে নিজ থেকেই হাসি মুখে বললেন, ‘নো ক্রিকেটার, নো ট্রেনিং।’ এমনিতে এমন দিনে তাকে ফাঁকা পাওয়া মুশকিল হতো। দুদিন পর থেকে শুরু হওয়ার কথা জাতীয় দলের ক্যাম্প। যেকোনো ক্যাম্প শুরুর আগে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা তার অধীনেই করেন ফিটনেস ট্রেনিং। কিন্তু ক্রিকেটারদের ধর্মঘটের কারণে মারিওর হাতে আপাতত কাজ নেই।

আজ বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকাল থেকেই মিরপুরে দেখা গেল এমন ব্যতিক্রমী দৃশ্য। সবসময় যে মাঠ মুখর থাকে খেলোয়াড়দের বিচরণে, সেখানে সুনসান নীরবতা। তবে অপেক্ষা- মেঘ সরে গিয়ে ঝলমলে রোদ্দুরের।

অন্যান্য যেকোনো দিন মিরপুর একাডেমি মাঠে বা জিমনেশিয়ামে কোনো না কোনো ক্রিকেটার থাকেন-ই। স্বাভাবিকভাবে এদিন দেখা নেই কারও। তবে দুজন ক্রিকেটারকে পাওয়া গেল। আন্দোলনের আওতার মধ্যে না থাকা অনূর্ধ্ব-১৯ দলের এক ক্রিকেটার চালাচ্ছিলেন চোটের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া। গত বিপিএলে ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে খেলা স্পিনার আলিস আল ইসলাম দিতে এসেছেন বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা।

bcb academy
ছবি: একুশ তাপাদার

বিসিবি কার্যালয়েও এদিন আগের দিনের চেয়ে ব্যস্ততা কম। সকাল ১১টায় প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী এসে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের সঙ্গে আড্ডায় যোগ দেন। বোঝান তাদের অবস্থান, ক্রিকেটের ভালোর জন্য কতটা আন্তরিক তারা। আর এই সংকট যে দ্রুতই সমাধানের পথে যাচ্ছে, সেই আভাসও দেন তিনি।

আগের দিন বিসিবি প্রধানের সংবাদ সম্মেলন বল ক্রিকেটারদের কোর্টে ঠেলে দেওয়ার ইঙ্গিত ছিল। ওই সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছিলেন, কোনো ক্রিকেটারকেই ফোনে যোগাযোগ করতে পারছেন না তারা। নিজামউদ্দিন জানান, এরপর রাতে তামিম ইকবালের সঙ্গে ফোনে কথা হয় তার। জাতীয় দলের তারকার কাছে বিসিবির আলোচনায় বসতে চাওয়ার অভিপ্রায়ের কথাও জানান তিনি। তামিম তাকে জানান, বাকিদের সঙ্গে কথা বলে তারা নেবেন সিদ্ধান্ত।

আপাতত খবর, এই আলাপ আলোচনা ইতিবাচক দিকেই মোড় নিতে যাচ্ছে। বিকাল ৫টায় ক্রিকেটারদের সঙ্গে বসতে প্রস্তুত হয়ে আছে বোর্ড। এবার ক্রিকেটারদের পালা। বিসিবির আগের দিনের কঠোর অবস্থানেও কিছুটা নমনীয় হওয়ার আভাস পাওয়া গেছে। বিসিবি চায়, ধর্মঘটের ডাক নিয়ে মাঠ ছেড়ে যাওয়া ক্রিকেটাররা যেন ‘দুয়ার’ বন্ধ না করেন। সিইও নিজামউদ্দিন বলছিলেন, ‘সবই তো অর্থনৈতিক বিষয়। এসব আলোচনায় বসে মিটিয়ে ফেলা কোনো ব্যাপার না।’

bcb academy
ছবি: একুশ তাপাদার

ক্রিকেটাররা যদি এবার বিসিবির ডাকে সাড়া না দেন তাহলে বল আবার নিয়ন্ত্রণে চলে যেতে পারে বিসিবির। আন্দোলনে থাকা ক্রিকেটাররা এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কতটা সাংগঠনিক মুন্সিয়ানা দেখাতে পারেন সবারই কৌতূহল তা নিয়ে।

তবে সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, মাঠের খেলায় কিছু প্রভাব পড়ছেই। আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হতে যাওয়া জাতীয় লিগের তৃতীয় রাউন্ডে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের এমনিতেই খেলার কথা ছিল না (ভারত সফরের প্রস্তুতি ক্যাম্পের কারণে)। ধর্মঘটের কারণে বাকিরাও যাননি খেলার ভেন্যুতে। ফলে আজকের মধ্যে একটা সমাধানে আসা গেলেও দু-একদিন পিছিয়ে যেতে পারে লিগের তৃতীয় রাউন্ড।

Comments

The Daily Star  | English

Govt dissolves NBR as per IMF proposal

An ordinance published last night disbands NBR and creates two new divisions

2h ago