নারায়ণগঞ্জে নারী পাচারকারী চক্রের সদস্য গ্রেপ্তার, ৩ কিশোরী উদ্ধার
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা থেকে নারী পাচারকারী চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার ও তিন কিশোরীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশের দাবি, মধ্যপ্রাচ্যে পাচারের উদ্দেশ্যে ওই তিন কিশোরীকে আটকে রাখা হয়।
গতকাল (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ফারুক সাংবাদিকদের জানান, ওইদিন ভোরে সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি উত্তরপাড়া এলাকার একটি বাসা থেকে তিন কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়। এসময় জেবা বেগম (৪৫) নামে এক নারীকে আটক করা হয়।
আটক জেবা বেগম ঢাকার মুরাদপুর মাদরাসারোড এলাকার ফারুক হোসেনের স্ত্রী। জালকুড়ি এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন তিনি।
উদ্ধারকৃত ভুক্তভোগী নারীরা হলেন- সুনামগঞ্জ টেপিরকোনা এলাকার মৃত ছায়েদ আলীর মেয়ে ময়না আক্তার (১৭), সিলেট দক্ষিণ বিপক (মাসুমবাজার) এলাকার হামিদ আলীর মেয়ে কুটিনা আক্তার (১৯) ও তারই ছোট বোন জাহেদা আক্তার (১৮)।
ওসি আরও জানান, গতকাল বিকালে ময়না আক্তারের বড় বোন নাজমা আক্তার বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এতে আটককৃত জেবাসহ তিনজনের নাম উল্লেখ ও চারজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। ওই মামলায় জেবাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
অপর আসামিরা হলেন- ঢাকার পুরান পল্টন নিরুপম ইন্টারন্যাশনাল নামের ট্রাভেলস কোম্পানির ম্যানেজার মুরাদ হোসেন (৫৪) ও তার সহযোগী শাহাদাত হোসেন (৫৩)।
মামলার বরাত দিয়ে ওসি কামরুল ফারুক জানান, গত ১৮ আগস্ট বিকালে মুন্সীগঞ্জের হাসাইল বানারি এলাকা থেকে ময়না নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় টঙ্গিবাড়ী থানায় একটি জিডি করা হয়। এরপর গত ২৮ অক্টোবর সকালে ময়না মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার অবস্থান বোনকে জানায়। ওইদিন রাতে ময়নার বোন নাজমা আক্তার সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশকে জানালে ভোরে অভিযান চালিয়ে ওই বাড়ি থেকে ময়নাসহ তিন কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আজিজুল হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জেবা জানিয়েছেন যে তিনি নিরুপম ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেলস কোম্পানির হয়ে কাজ করেন। তাদের একটি সঙ্ঘবদ্ধ চক্র রয়েছে। চক্রটি দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অসহায় ও গরীব পরিবারের কিশোরীদের ভালো বেতনে চাকরিসহ নানান প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে আসে। তাদের জেবার ভাড়া বাসায় আটকে রেখে সুযোগ বুঝে মধ্যপ্রাচ্যে পাচার করে দেয়।”
তিনি বলেন, “জেবাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে আজ সকালে আদালতে পাঠানো হবে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। উদ্ধারকৃত কিশোরীদের পরিবারের কাছে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।”
Comments