সামনে চলচ্চিত্রের কঠিন সময়

২০১৯ সাল বাংলা সিনেমার জন্য কি অশনিসংকেত? গত ১০ মাসে মুক্তি পেয়েছে মাত্র ৩৪টি চলচ্চিত্র। অথচ গত বছরে ৫০টি বেশি সিনেমা মুক্তি পেয়েছিলো।
‘ফাগুন হাওয়ায়’ চলচ্চিত্রের পোস্টার।

২০১৯ সাল বাংলা সিনেমার জন্য কি অশনিসংকেত? গত ১০ মাসে মুক্তি পেয়েছে মাত্র ৩৪টি চলচ্চিত্র। অথচ গত বছরে ৫০টি বেশি সিনেমা মুক্তি পেয়েছিলো।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে মাত্র একটি ছবি মুক্তি পায় ‘আই অ্যাম রাজ’ শিরোনামে। চার-পাঁচটি সিনেমা হলে মুক্তি পাওয়া ছবিটি সফলতার মুখ দেখতে পায়নি। তার পরের মাসে মুক্তি পায় ‘আমার প্রেম আমার প্রিয়া’। এই ছবিটি কিছুটা প্রশংসা পেলেও প্রচারণার অভাবে বেশিদূর যেতে পারেনি।

সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া ছবির নাম ‘ডনগিরি’। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে এসে মাত্র ৩৪টি সিনেমা মুক্তির খবর পাওয়া গেছে। মুক্তি পাওয়া ছবিগুলোর মধ্যে একমাত্র শাকিব খান অভিনীত ‘পাসওয়ার্ড’ ব্যবসা সফলতা পেয়েছে।

মুক্তি পাওয়া অন্য ছবিগুলোর মধ্যে ‘ফাগুন হাওয়ায়’, ‘যদি একদিন’, ‘নোলক’ ও ‘সাপলুডু’ প্রশংসিত হয়েছে।

এদিকে সারাদেশে সিনেমা হল বন্ধ হতে হতে এখন ২শ’র নিচে নেমে এসেছে। সর্বশেষ বন্ধ হয়েছে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ‘রাজমণি’ সিনেমা হল। হল বন্ধের পাশাপাশি চলচ্চিত্র নির্মাণের সংখ্যা কমে আসছে আশংকাজনকভাবে।

বেশ কয়েকবছর বন্ধ থাকার পর চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বড় সংগঠন প্রযোজক সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। চলচ্চিত্রের মানুষদের আশা ছিলো নতুন কমিটি হাল ধরবে। কিন্তু, তারা দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যায়নি সিনেমায়।

সদ্য শেষ হওয়া শিল্পী সমিতির নেতারা সিনেমার চেয়ে ব্যক্তি-স্বার্থকেই প্রধান করে দেখছেন বলে অভিযোগ করেছেন চলচ্চিত্রের বেশ কয়েকজন তারকা-শিল্পী।

সিনেমার এমন সংকটময় দিনে লগ্নি করতে আসছেন না কোনো নতুন প্রযোজক। সিনেমার বিভিন্ন সংগঠনের সিন্ডিকেটের কারণে নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছেন পুরাতন লগ্নিকারকরা। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় হিসেবে চলচ্চিত্রের মানুষেরা মনে করছেন সবার এক হওয়া ছাড়া কোনো গতি নেই। তা না হলে আগামীতে চলচ্চিত্রের জন্য কঠিন সময় অপেক্ষা করছে বলে মনে করেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা।

চিত্রনায়ক ফেরদৌস দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনকে বলেন, “সিনেমার এই সংকট থাকবে না যদি ভালোমানের হলের সংখ্যা বাড়ানো হয়। একজন পরিচালক সিনেমা বানানোর পর সেটা ঠিকমতো দেখাতে পারছেন না। সারাদেশে সরকারি-বেসরকারিভাবে সিনেমা হলের সংখ্যা বাড়ানো হলে এই সংকট কেটে যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি। এর ফলে নতুন প্রযোজকরা একটা ছবি বানানোর পর আরেকটা ছবি বানাতে আর আগ্রহী হয়ে উঠছেন না। তাদের উৎসাহিত করতে হবে।”

“সব ধরনের সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে। তাহলে আবার সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে,” যোগ করেন ‘হঠাৎ বৃষ্টি’-খ্যাত অভিনেতা।

ঢাকাই চলচ্চিত্রের শীর্ষ অভিনেতা শাকিব খান দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনকে বলেন, “এফডিসিতে রাজনীতি বাদ দিয়ে বেশি-বেশি সিনেমা বানাতে হবে। তাহলে আর সংকট থাকবে না। সারাদেশে আরও সিনেপ্লেক্স বানাতে হবে। তাহলে বেশি-বেশি সিনেমা মুক্তি পাবে বলে আমার বিশ্বাস।”

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

6h ago