উজ্জ্বলের নায়িকারা

নায়ক উজ্জ্বলকে বলা হতো মেগাস্টার। ১৯৭০ সালে প্রথম অভিনয় করেন ‘বিনিময়’ চলচ্চিত্রে। প্রথম চলচ্চিত্রে নায়িকা হিসেবে পান মিষ্টি মেয়ে কবরীকে। এরপর শাবানা, ববিতা, সুচরিতা, রোজিনা, সুজাতা, শবনমসহ অনেক নায়িকার বিপরীতে অভিনয় করেছেন তিনি। নায়ক জীবনের নায়িকাদের নিয়ে উজ্জ্বল কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে।
Uzzal-Photo.jpg
নায়ক উজ্জ্বল। ছবি: শেখ মেহেদী মোর্শেদ/স্টার

নায়ক উজ্জ্বলকে বলা হতো মেগাস্টার। ১৯৭০ সালে প্রথম অভিনয় করেন ‘বিনিময়’ চলচ্চিত্রে। প্রথম চলচ্চিত্রে নায়িকা হিসেবে পান মিষ্টি মেয়ে কবরীকে। এরপর শাবানা, ববিতা, সুচরিতা, রোজিনা, সুজাতা, শবনমসহ অনেক নায়িকার বিপরীতে অভিনয় করেছেন তিনি। নায়ক জীবনের নায়িকাদের নিয়ে উজ্জ্বল কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে।

কবরী: সুভাষ দও পরিচালিত ‘বিনিময়’ চলচ্চিত্রে উজ্জ্বলের সঙ্গে নায়িকা হিসেবে কবরীকে দেখা যায় ১৯৭০ সালে। সেবছরই ‘বিনিময়’র মহরত হয় এবং একই বছর তা মুক্তিও পায়। ‘বিনিময়’ একটি সুপারহিট চলচ্চিত্র। এটি ছাড়াও কবরীর সঙ্গে উজ্জ্বল আরও অভিনয় করেন নায়ক হিসেবে। চলচ্চিত্রগুলো ছিলো- ‘লালন ফকির’, ‘বলাকা মন’ ও ‘অনুরোধ’। নায়িকা কবরী সম্পর্কে উজ্জ্বল বলেন, “কবরী যখন সুপারহিট নায়িকা তখন তার বিপরীতে নতুন নায়ক হিসেবে সুভাষ দত্তের পরিচালনায় জীবনের প্রথমবার চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করি। প্রথম চলচ্চিত্রে কবরীর মতো জনপ্রিয় অভিনেত্রীকে নায়িকা হিসেবে পাওয়া ওই সময় আমার জন্য বড় বিষয় ছিলো।”

“কেননা, সে সময় কবরীর মতো জনপ্রিয় নায়িকা কেউ ছিলেন না” উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, “নায়িকা হিসেবে তাকে পেয়ে দেখেছি কবরী খুব ‘ঠোঁট-কাটা স্বভাবের’ ছিলেন। স্পষ্ট কথা বলতেন সব সময়। তবে, আমি নতুন হলেও অসম্ভব সহযোগিতা করেছেন। তাকে সব সময় সহযোগিতাপরায়ণ নায়িকা মনে হয়েছে। এজন্যই তিনি মিষ্টি মেয়ে-খ্যাত নায়িকা। আমার নায়িকাও বটে।”

শাবানা: নায়ক জীবনে উজ্জ্বল দ্বিতীয় চলচ্চিত্রে নায়িকা হিসেবে পান শাবানাকে। চলচ্চিত্রটির নাম ‘সমাধান’। খুব ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র ছিলো এটি। এছাড়াও, শাবানাকে নায়িকা হিসেবে পান ‘স্বীকৃতি’, ‘অনুরাগ’, ‘আমির ফকির’, ‘নালিশ’, ‘নসিব’, ‘উসিলা’, ‘লাল কাজল’ চলচ্চিত্রে। চলচ্চিত্রগুলো সে সময়ে সাড়া জাগিয়েছিলো এবং ব্যবসাসফলও হয়েছিলো। নায়িকা শাবানাকে নিয়ে উজ্জ্বল বলেন, “শাবানা আমাদের দেশের অনেক বড় শিল্পী। সহশিল্পী বলি আর নায়িকা বলি, সেই হিসেবেও শাবানা খুবই ইতিবাচক মানুষ ছিলেন। কাজ ছাড়া শাবানা কিছু বুঝতেন না। অভিনয় ছিলো তার ধ্যান। অভিনয় ছিলো তার সাধনা। কবরীর পরপরই শাবানার জনপ্রিয়তা আসে। তাকে বলা হতো ভাগ্যবতী নায়িকা। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা শাবানাকে বলতেন বিউটি কুইন। আমার নায়িকা হিসেবে শাবানা ‘অনুভব’ চলচ্চিত্রটিও করেন। ভীষণ প্রেমের চলচ্চিত্র ছিল ‘অনুভব’। নায়িকা শাবানার কথা আজও মনে পড়ে।”

ববিতা: এরপর উজ্জ্বল নায়িকা হিসেবে পেয়েছিলেন ববিতাকে। অনেকগুলো চলচ্চিত্র করেছেন দুজনে। ‘অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী’, ‘ইয়ে করে বিয়ে’, ‘পায়ে চলার পথ’, ‘শনিবারের চিঠি’, ‘ফকির মজনু শাহ’, ‘অপরাধ’, ‘কারণ’, ‘বীরাঙ্গনা সখিনা’- এসব চলচ্চিত্রে উজ্জ্বলের নায়িকা ছিলেন ববিতা।

নায়িকা ববিতাকে নিয়ে উজ্জ্বল বলেন, “সেই সময়ে শহরকেন্দ্রিক বড় একটি ইমেজ ছিলো ববিতার। পরে অবশ্য সব জায়গায় তার নায়িকা ইমেজ ছড়িয়ে পড়ে। শতভাগ স্মার্ট নায়িকা ইমেজ ছিলো ববিতার। সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্র করার কারণে তাকে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নায়িকাও বলা হতো। ববিতার সঙ্গে আমার সবগুলো চলচ্চিত্র ওই সময়ে সফলতা পায়। ববিতা ছিলেন আমার সমসাময়িক নায়িকা। পরে আমাদের মধ্যে সুন্দর একটা সম্পর্ক গড়ে উঠে। ববিতা শুধু আমার নায়িকা ছিলেন না, ইন্টারন্যাশনাল নায়িকাও ছিলেন। তার ছিলো অসম্ভব বিনয়।”

রোজিনা: উজ্জ্বলের নায়িকা হিসেবে আরও পরে এসে অভিনয় শুরু করেন রোজিনা। তাদের অভিনীত চলচ্চিত্রগুলো হচ্ছে ‘নসিব’, ‘চোর ডাকাত পুলিশ’, ‘বিশাল’, ‘ঘরবাড়ি’। উজ্জ্বল তার নায়ক জীবনে রোজিনাকে নিয়ে যতোগুলো চলচ্চিত্র করেছেন সেসব সুপারহিট হয়েছে। উজ্জ্বল বলেন, “আসলে ভাগ্য এমনই ছিলো। ওই সময়ে আমার কোনো চলচ্চিত্র মন্দ ব্যবসা করেনি। রোজিনাকে নিয়ে বলবো- রোজিনা অনেক সংগ্রাম করে আমাদের চলচ্চিত্রে আসেন। নায়িকা হিসেবে একসময় রোজিনা নিজের অবস্থান করে নেন। তার মধ্যে শেখার বিষয়টি ছিলো খুব প্রবল। সংগ্রাম করেই প্রতিষ্ঠা পাওয়া যায়- তার বড় উদাহরণ রোজিনা। শিল্পীদের সম্মান করতে জানতেন।”

আরও যারা নায়িকা: উজ্জ্বল নায়িকা হিসেবে পান আরও অনেককেই। সেই সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা নাসিমা খানের সঙ্গে নায়ক হিসেবে একটি মাত্র চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন। যার নাম ‘মেঘের পরে মেঘ’। সুচরিতাকে নায়িকা হিসেবে পেয়েছিলেন ‘সমাধি’ চলচ্চিত্রে। ‘বিশাল’ চলচ্চিত্রে নায়িকা ছিলেন শবনম। অঞ্জু ষোষ নায়িকা ছিলেন ‘আমি ওস্তাদ’ চলচ্চিত্রে। অলিভিয়া নায়িকা ছিলেন ‘বে দ্বীন’ চলচ্চিত্রে। সুজাতা নায়িকা ছিলেন ‘লালন ফকির’ চলচ্চিত্রে। নতুনকে নায়িকা হিসেবে পেয়েছিলেন ‘অগ্নি পরীক্ষা’য়।

এছাড়াও, দিতি নায়িকা ছিলেন ‘উসিলা’সহ কয়েকটি চলচ্চিত্রে। দোয়েল নায়িকা ছিলেন ‘নিয়ত’-এ। উজ্জ্বল বলেন, “সব নায়িকার সঙ্গেই আমার সুন্দর সম্পর্ক ছিলো। আমরা কাজ করেছি সততা, ভালোবাসা নিয়ে।”

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

8h ago