তৃতীয় দিনেই জয় পেয়েছে সিলেট ও ঢাকা মেট্রো
জাতীয় ক্রিকেট লিগের চতুর্থ রাউন্ডে দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচে নিজ নিজ ম্যাচে জয় পেয়েছে সিলেট বিভাগ ও ঢাকা মেট্রো। কক্সবাজারে বরিশাল বিভাগকে ইনিংস ও ৩২ রানে হারিয়েছে অলোক কাপালীর সিলেট। আর চট্টগ্রামে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ইনিংস ও ৬৪ রানের জয়ের দেখা পেয়েছে ঢাকা মেট্রো। তবে কক্সবাজারে প্রথম স্তরের ম্যাচে রাজশাহী বিভাগের চেয়ে ১৬৮ রানে এগিয়ে আছে ঢাকা বিভাগ। আর প্রথম স্তরের অপর ম্যাচে মিরপুরে শেষ দিনের রোমাঞ্চকর পরিণতির অপেক্ষায় রংপুর ও খুলনা বিভাগ।
সিলেট বিভাগ বনাম বরিশাল বিভাগ
কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এক উইকেটে ১২ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করে বরিশাল। দিনের প্রথম বলেই আশরাফুলকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন ইবাদত। খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আরেক অপরাজিত ব্যাটসম্যান অধিনায়ক ফজলে মাহমুদ। গড়েনি কোন জুটি। শাহরিয়ার নাফিস ৩২ ও নুরুজ্জামানের ৩৭ রানের ইনিংস খেলে কিছুটা প্রতিরোধ গড়েছিলেন। কিন্তু তা যথেষ্ট হয়নি। ইবাদত ও নাসুম আহমেদের তোপে ইনিংস ব্যবধানেই হারে দলটি। মাত্র ৫ রানের খরচায় ৪টি উইকেট নেন নাসুম। আর প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেট নিয়েছেন ইবাদত।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বরিশাল ১ম ইনিংস: ১৬২
সিলেট ১ম ইনিংস: ৩২২
বরিশাল ২য় ইনিংস: ৪৫.১ ওভারে ১২৮ (আগের দিন ১২/১) (আশরাফুল ২, মাহমুদ ১১, নাফিস ৩২, নুরুজ্জামান ২৫, গাজী ৩৭, সালমান ১২, শামসুল ০, মনির ০, রাব্বি ২, তানভির ০*; ইবাদত ৩/২৮, রাহী ১/৪০, শাহানুর ২/২৫, এনামুল জুনিয়র ০/২৭, নাসুম ৪/৫)।
ফলাফল: সিলেট ইনিংস ও ৩২ রানে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: ইবাদত হোসেন।
ঢাকা মেট্রো বনাম চট্টগ্রাম বিভাগ
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ৩ উইকেটে ৯৬ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করে চট্টগ্রাম। শুরুতেই আগের দিন ৫৫ রানে অপরাজিত থাকা পিনাক এদিন মাত্র ২ রান যোগ করতে পেরেছেন। এরপর অধিনায়ক ইয়াসির আলী পঞ্চম উইকেটে তাসামুল হককে নিয়ে ৪৬ ও ষষ্ঠ উইকেটে নাঈম হাসানকে নিয়ে ৬৬ রানের দুটি জুটি গড়ে লড়াই চালিয়ে যান। তবে শহিদুলের বলে ব্যক্তিগত ৬৬ রানে অধিনায়কের বিদায় হলে কার্যত তখনই হার দেখে চট্টগ্রাম। এরপর আর বেশি দূর এগোয়নি স্বাগতিকদের ইনিংস। ২৯ রানের খরচায় ৪টি উইকেট নিয়েছেন শহিদুল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ঢাকা মেট্রো প্রথম ইনিংস: ১০৮.৪ ওভারে ৪০৩
চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস: ৩০.৫ ওভারে ৯১
চট্টগ্রাম ২য় ইনিংস: (আগের দিন ৯৬/৩) ৮০.২ ওভারে ২৪৮ (সাদিকুর ১১, ইরফান ২, মাহিদুল ১০, পিনাক ৫৭, তাসামুল ৩৯, ইয়াসির ৬৬, নাঈম ২৮, মেহেদী ১২, হাসান ১৬, ইফরান ০, আফ্রিদি ০*; তাসকিন ২/৪৯, শরিফউল্লাহ ২/৫৯, শহিদুল ৪/২৯, আল আমিন ১/১৮, আসিফ ০/৪৮, আজমির ০/৭, সাদমান ০/১, নিহাদুজ্জামান ১/৩৪)।
ফলাফল: ঢাকা মেট্রো ইনিংস ও ৬৪ রানে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: সাদমান ইসলাম।
ঢাকা বিভাগ বনাম রাজশাহী বিভাগ
কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একাডেমী মাঠে ৪ উইকেটে ২৮৪ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করে ঢাকা বিভাগ। সেঞ্চুরির দ্বারে থাকা তাইবুর রহমান ও শুভাগত হোম দুইজনই পৌঁছান ম্যাজিক ফিগারে। তবে এরপর ইনিংস লম্বা করতে পারেননি তারা। তাইবুর ১০২ ও শুভাগত ১০৪ রান করে দুইজন ই শিকার হন ফরহাদ রেজার। এরপর অষ্টম উইকেটে সুমন খানকে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন ১১৩ রানের জুটি গড়ে বিশাল লিড এনে দেন নাদিফ চৌধুরী। তুলে নেন নিজের সেঞ্চুরিও। ১০১ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন তিনি। সুমনও তুলে নেন নিজের হাফসেঞ্চুরি। ৫০ রান আসে তার বতে থেকে। ৭ উইকেটে ৪৭৫ রান করার পর ইনিংস ঘোষণা করে দলটি।
২৪৫ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে রাজশাহী। তৃতীয় দিনে ৭৭ রান তুলতেই হারিয়ে ফেলেছে ৩ উইকেট। তবে এক প্রান্তে দারুণ ব্যাটিং করে ৪১ রানে অপরাজিত আছেন জুনায়েদ সিদ্দিকি। নাজমুল হোসেন শান্ত ১৭ রানে অপরাজিত থাকেন। রাজশাহীর পক্ষে ১৭ রানের খরচায় ২টি উইকেট নিয়েছেন নাজমুল ইসলাম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: (তৃতীয় দিন শেষে)
রাজশাহী বিভাগ ১ম ইনিংস: ২৩০
ঢাকা বিভাগ ১ম ইনিংস: ১৩৬.১ ওভারে ৪৭৫/৭ (ডিঃ) (আগের দিন ২৮৪/৪) (মজিদ ১৬, সাইফ ২৮, জয়রাজ ২১, রকিবুল ২৯, তাইবুর ১০২, শুভাগত ১০৪, নাদিফ ১০১*, নাজমুল ১২, সুমন ৫০*; সানজামুল ৪/১৬২, রেজা ২/৪১, মুক্তার ০/৭৬, সাকলাইন ১/১১১, শান্ত ০/৫৬, সাব্বির রহমান ০/১২, সাব্বির হোসেন ০/৯)।
রাজশাহী ২য় ইনিংস: ৪২ ওভারে ৭৭/৩ (সাব্বির হোসেন ১, শাখির ১৬, জুনায়েদ ৪১*, মিজানুর ০, শান্ত ১৭*; সুমন ০/১৪, শাকিল ১/১১, শুভাগত ০/১০, নাজমুল ২/১৭, তাইবুর ০/৯, জুবায়ের ০/১১, সাইফ ০/৪)।
রংপুর বিভাগ বনাম খুলনা বিভাগ
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৪ উইকেটে ৬৭ রান নিয়ে দিন শুরু করা রংপুর শুরুতেই সাজেদুল ইসলামকে হারায়। এরপর ষষ্ঠ উইকেটে নাসির হোসেন ও আরিফুল হকের ১১০ রানের জুটিতে লড়াই করার মতো লিড পায় দলটি। এ জুটি ভাঙতেই মেহেদী হাসানের ঘূর্ণিতে পড়ে দলটি। ফলে ২১১ রানেই গুটিয়ে যায় রংপুরের দ্বিতীয় ইনিংস। নাসির ৭৬ ও আরিফুল ৫৮ রান করেন। দ্বিতীয় ইনিংসেও ৫ উইকেট নিয়েছেন আব্দুর রাজ্জাক। সবমিলিয়ে ম্যাচ উইকেট পেলেন ১২টি। মেহেদী পেয়েছেন ৩টি উইকেট।
২০৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই জাতীয় দলের ওপেনার ইমরুল কায়েসকে হারায় খুলনা। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ইমরানউজ্জামান ও এনামুল হক বিজয় ৪০ রানের জুটি গড়ে কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন। তবে এ জুটি ভাঙতেই ১৭ রানের ব্যবধানে চার উইকেটে হারিয়ে বড় চাপে পড়ে দলটি। ষষ্ঠ উইকেটে মেহেদী হাসান ও জিয়াউর রহমান অবিচ্ছিন্ন ৬২ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। তৃতীয় দিন শেষে তাদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৩০ রান। মেহেদী ও জিয়া দুইজনই ৩০ রানে অপরাজিত আছেন। রংপুরের পক্ষে ২৭ রানের বিনিময়ে ৪টি উইকেট পেয়েছেন সোহরাওয়ার্দী।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: (তৃতীয় দিন শেষে)
রংপুর ১ম ইনিংস: ২২৪
খুলনা ১ম ইনিংস: ২৩৩
রংপুর ২য় ইনিংস : ৭৬.৫ ওভারে ২১১ (আগের দিন ৬৭/৪) (সাজেদুল ০, নাসির ৭৬, আরিফুল ৫৮, ধীমান ০, রিশাদ ১, রবিউল ৩*, মুকিদুল ৬; হালিম ১/১৭, জিয়াউর ০/১১, রুবেল ১/২৭, রাজ্জাক ৫/৭১, মইনুল ০/৪৯, তুষার ০/০, মেহেদি ৩/৩০।
খুলনা ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ২০৩) ৩৮ ওভারে ১৩০/৫ (ইমরুল ৩, ইমরান ২৫, এনামুল ৩৪, তুষার ০, সোহান ২, মেহেদি ৩০*, জিয়াউর ৩০*; রবিউল ০/২৬, মুকিদুল ১/৩২, রিশাদ ০/৪২, সোহরাওয়ার্দী ৪/২৭)।
Comments