জাবিতে সংহতি সমাবেশ

৬ নভেম্বর ২০১৯, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার পর আন্দোলনকারীর সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ক্যাম্পাসে সমবেত হন। ছবি: স্টার

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার পর আন্দোলনকারীর সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা।

ঘটনাস্থল থেকে আমাদের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা জানান, আজ (৬ নভেম্বর) সংহতি সমাবেশে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদসহ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজীম উদ্দিন খান যোগ দেন।

সমাবেশে জাবির অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শারমিন্দ নিলর্মী বলেন, “প্রত্যেকটা লড়াই সংগ্রামেই শাসকরা হামলা চালিয়ে এসেছে। এই উপাচার্যও তাই করেছেন। এর চেয়ে নিকৃষ্ট কাজ আর হতে পারে না। গতকালের হামলার পর উপাচার্যকে বরখাস্তের জন্যে মাননীয় আচার্যের কাছে আমরা অনুরোধ জানাই।”

একই বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, “আমরা তাকে (উপাচার্য) তদন্ত কমিটি করার দাবি জানিয়েছিলাম। আমরা তিনমাস নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করে এসেছি। তাকে অর্থনৈতিক লেনদেনের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, এটা তাদের দলীয় বৈঠক ছিলো।”

তার মতে, “উপাচার্য মিথ্যাচার করলে তার স্বপদে বহাল থাকাতে পারেন না। তিনি শুধু উপাচার্যের পদে নয় শিক্ষক হিসেবে বহাল থাকার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ।”

নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, “ভিন্নমত পোষণ করায় ছাত্রলীগ হামলা চালিয়েছে। জাবির শিক্ষার্থীরা অতীতেও অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না। এটা দেশের জনগণকে আরেকবার জানিয়ে দেওয়ার সময় এসেছে।”

৬ নভেম্বর ২০১৯, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল-সমাবেশের ওপর কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করেন। ছবি: স্টার


বিশ্ববিদ্যালয়ের অপর এক শিক্ষার্থী তাজরীন ইসলাম তন্বী বলেন, “উপাচার্য হামলার ঘটনাকে আনন্দের দিন হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। যেটা আমাদের জন্য লজ্জার। আমরা ছাত্রীরা গতকাল তালা ভেঙ্গে হলে প্রবেশ করেছি। আবার তালা ভেঙ্গে আন্দোলনে যোগ দিয়েছি। উপাচার্য অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।”

সংহতি সমাবেশে আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে অন্য বক্তারা উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন। তারা আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার নিন্দা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করার পরও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ মিনারে পূর্ব নির্ধারিত সংহতি সমাবেশে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সমবেত হন। সেসময় ছাত্ররা মিছিল নিয়ে ছাত্রীদের হলে সামনে আসেন। তারা ছাত্রীদের নিয়ে মিছিল করে সংহতি সমাবেশে যোগ দেন।

অনির্দিষ্টকালের জন্যে বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার ঘোষণাকে ‘অবৈধ’ আখ্যা দিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। তারা মিছিল-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সমবেত হন।

কর্তৃপক্ষের হল ছাড়ার নির্দেশের প্রেক্ষিতে অধিকাংশ ছাত্রী হল ছেড়েছেন উল্লেখ করে আমাদের সংবাদদাতা আরও জানান যে তবে ছাত্রদের অধিকাংশ এখনো হলে অবস্থান করছেন।

আন্দোলনকারীরা কর্তৃপক্ষের বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ও হল ছাড়ার নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করেছেন।

আরও পড়ুন:

হল না ছাড়লে ব্যবস্থা: জাবি হল প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি

জাবি বন্ধ ঘোষণা, প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল

আমার জন্যে এটা অত্যন্ত আনন্দের একটি দিন: জাবি উপাচার্য

জাবি শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ, আহত ২০

জাবি উপাচার্য এখনও অবরুদ্ধ

জাবি উপাচার্যের বাসভবনে শিক্ষার্থীদের অবরোধ

অডিও ফাঁস: উপাচার্য নিজেই টাকা ভাগ করে দিয়েছেন

জাবি উপাচার্যের অপসারণ দাবি ফখরুলের

ঢাবি সিনেট থেকে অব্যাহতি চেয়ে শোভনের চিঠি

উপাচার্য-ছাত্রলীগ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ ও পক্ষ-বিপক্ষের শিক্ষক ভাবনা

আমরা ‘ন্যায্য পাওনা’ দাবি করেছিলাম: রাব্বানী

মিথ্যা বলেছে ছাত্রলীগ, ‘চ্যালেঞ্জ’ ছুড়লেন জাবি উপাচার্য

আন্দোলনকারীদের ২ শর্ত মেনে নিলো জাবি প্রশাসন

শিক্ষা নয়, জাবির আলোচনার বিষয় ‘২ কোটি টাকা’র ভাগ-বাটোয়ারা

‘২ কোটি টাকা ভাগের সংবাদে শিক্ষক হিসেবে খুব বিব্রত বোধ করি’

জাবি উপাচার্যের সঙ্গে ছাত্রলীগের ‘প্রশ্নবিদ্ধ বৈঠক’, টিআইবির উদ্বেগ

দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর

জাবি ছাত্রলীগের দলীয় কোন্দল ও সংঘর্ষের নেপথ্যে ৪৫০ কোটি টাকার নির্মাণ কাজ

জাবিতে চলমান উন্নয়ন পরিকল্পনার ‘মাস্টারপ্ল্যানে’ গোড়ায় গলদ!

Comments

The Daily Star  | English

Rising remittance provides a breather amid forex crisis

Remittance inflow has continued to rise for the past few months, providing a breather for a country facing multiple challenges, including external payment pressures amid dwindling foreign exchange reserves.

15h ago