বাংলাদেশের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ
শিশিরে ভেজা মাঠে স্পিনাররা বল গ্রিপ করতে পারছিলেন না। মূল পেসার মোস্তাফিজুর রহমান ছিলেন বিবর্ণ। এরমধ্যে হাত ফসকে বেরোয় একাধিক সহজ ক্যাচও। শফিউল ইসলামের এনে দেওয়া দারুণ শুরু তাই ধরে রাখা যায়নি। মাঝের ওভারে অনিয়মিত সৌম্য সরকার পুষিয়ে দিয়েছিলেন, আল-আমিন হোসেন এদিনও ছিলেন বুদ্ধিদীপ্ত। কিন্তু লোকেশ রাহুল আর জীবন পাওয়া শ্রেয়ার আইয়ারের দুই ফিফটিতে দারুণ চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পেয়েছে ভারত।
নাগপুরে সিরিজ নির্ধারনী ম্যাচে আগে ব্যাট পেয়ে ৫ উইকেটে ১৭৪ রান করেছে ভারত। প্রথমবারের মতো ভারতকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিততে তাই বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের সামনে কঠিন পথ।
দিল্লির মতো উইকেট দেখে আগের দিনই আশা বেড়েছিল বাংলাদেশের। এমন উইকেটে শুরুতেই আরও দুটো ব্যাপার নিজেদের পক্ষে আসা চাই। জিততে হবে টস, বোলিং নিয়ে আঘাত হানতে হবে শুরুতেই। দিল্লির মতো এদিন তাও পেল বাংলাদেশ।
টস জিতে বল হাতে নিয়ে শুরুতেই সবচেয়ে বড় বিপদ দূর করলেন শফিউল ইসলাম। দ্বিতীয় ওভারেই ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা শফিউলের ভেতরে ঢোকা বলে ইনসাইড এজ হয়ে খোয়ালেন স্টাম্প।
আরেক পাশে শিখর ধাওয়ান ছিলেন জড়সড়ও, করছিলেন হাঁসফাঁস। নিজের তৃতীয় ওভারে তাকেও ছাঁটেন শফিউল। শফিউলের বলে তুলে মারতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ উঠিয়ে ফেরেন শিখর। ওই ওভারেই শফিউল পেতে পারতেন আরেক সাফল্য। ক্রিজে আসা নতুন ব্যাটসম্যান শ্রেয়াস আইয়ার দুই বল পরই স্কয়ার কাট করতে গিয়ে সহজ ক্যাচ দিয়েছিলেন পয়েন্টে। আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের হাত ফসকে তা বেরিয়ে যায়। পরে শিভব দুভেরও আরেক ক্যা ফসকেছে তার হাত থেকে।
যার মাশুল চড়া দামেই গুনেছে বাংলাদেশ। তৃতীয় উইকেট জুটিতে লোকেশ রাহুল এই আইয়ারকে নিয়েই চালান আক্রমণ। গড়ে উঠে ভীষণ দরকারি এক জুটি। ৩৪ বলেই এই জুটি পেরোয় পঞ্চাশ। মাঝের ওভারে হুট করেই বেড়ে যায় ভারতের রান রেট। ৩৩ বলে ফিফটি করে ফেলেন রাহুল।
শিশিরের কারণে ফিঙ্গার স্পিনারদের বল গ্রিপ করা মুশকিল হয়ে পড়ছিল। তারমধ্যে মোস্তাফিজ প্রথম দুই ওভারে দেদারসে রান বিলানোয় বেড়ে যায় চাপ। অনিয়মিত সৌম্য সরকারকে দিয়ে ওই সময় পুষিয়ে নিচ্ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু শেষ দিকে কি হবে বাড়ছিল শঙ্কা।
তবে এরপরই ব্রেক থ্রো পায় বাংলাদেশ। ত্রয়োদশ ওভারে নিজে বল করতে এসেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। পরে মন বদল করে ডেকে আনেন আল-আমিনকে। এই সিদ্ধান্ত কাজে আসে সঙ্গে সঙ্গেই। বিপদজনক রাহুল ৩৫ বলে ৫২ করে আল-আমিনের ওই ওভারের প্রথম বলেই মিড অফে লিটনের হাতে জমা পড়েন।
কিন্তু শূন্য রানে জীবন পাওয়া আইয়ার ক্রমেই হয়ে উঠেন বিধ্বংসী। আফিফ হোসেনকে টানা তিন ছক্কা মারার পর ২৬ বলে স্পর্শ করেন ফিফটি। সৌম্য নিজের শেষ ওভারে এসে হানেন জোড়া আঘাত। প্রথম বলেই সৌম্যের স্লোয়ারে কাবু হয়ে ফেরেন ঋষভ পান্ত। পঞ্চম বলে আইয়ার ক্যাচ উঠান লং অফে। ততক্ষণে করে ফেলেছেন ৩৩ বলে ৬২। অনিয়মিত সৌম্য চার ওভারের কোটা পূরণ করে ২৯ রান দিয়ে নেন মূল্যবান ২ উইকেট।
আল-আমিন ছিলেন আরও দারুণ। নিজের চার ওভারে মাত্র ২২ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। দুভের ক্যাচ আমিনুল না ফেললে উইকেট পেতে পারতেন আরেকটি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ২০ ওভারে ১৭৪/৫ (রোহিত ২ , শেখর ১৯, রাহুল ৫২, শ্রেয়াস ৬২ , ঋষভ ৬, মানিষ ২১, দুভে ; আল-আমিন ১/২২, শফিউল ২/৩২, মোস্তাফিজ ০/৪২, বিপ্লব ০/২৯, সৌম্য ২/২৯, আফিফ ০/২০ )
Comments