হরভজনদের বাহবা পাওয়ার পরও নাঈমের বড় আক্ষেপ

হতে পারতেন বড় নায়ক, কেড়ে নিতে পারতেন সব আলো। অভাবনীয় কিছু পেতে মোহাম্মদ নাঈম শেখ নিজের কাজটা করেছিলেন ঠিকই। কিন্তু এই তরুণের এনে দেওয়া ভিত হেলায় হারিয়েছেন বাকিরা। ভারতের মতো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে তাদেরই ডেরায় নিজেকে চেনাতে পারার তৃপ্তি আছে ঠিকই। কিন্তু তিনি আক্ষেপে পুড়ছেন আসলে দলের জন্য। দল না জিতলে ব্যক্তিগত সাফল্যের আর কি দাম। তাই ম্যাচ শেষে পাওয়া ভারতের সাবেক তারকাদের অভিনন্দনেও সান্ত্বনা মেলেনি।
Mohammad Naim Shiekh
ছবি: একুশ তাপাদার

হতে পারতেন বড় নায়ক, কেড়ে নিতে পারতেন সব আলো। অভাবনীয় কিছু পেতে মোহাম্মদ নাঈম শেখ নিজের কাজটা করেছিলেন ঠিকই। কিন্তু এই তরুণের এনে দেওয়া ভিত হেলায় হারিয়েছেন বাকিরা। ভারতের মতো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে তাদেরই ডেরায় নিজেকে চেনাতে পারার তৃপ্তি আছে ঠিকই। কিন্তু তিনি আক্ষেপে পুড়ছেন আসলে দলের জন্য। দল না জিতলে ব্যক্তিগত সাফল্যের আর কি দাম। তাই ম্যাচ শেষে পাওয়া ভারতের সাবেক তারকাদের অভিনন্দনেও সান্ত্বনা মেলেনি নাঈমের। 

সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ভারতের দেওয়া ১৭৫ রান তাড়ায় নেমে নাঈম একাই করেন ৪৮ বলে ৮১ রান। আরও দুই তিনজন কিছুটা অবদান রাখলেও এখান থেকে খেলার ফল আসত বাংলাদেশের পক্ষেই। কিন্তু বাকি দশজন মিলে করলেন কেবল আর ৬৩ রান। এরমধ্যে মোহাম্মদ মিঠুনের ২৭ বাদ দিলে নয়জনের সম্মিলিত রান মাত্র ৩৬। জেতার মতো অবস্থায় গিয়ে শেষ ৩৪ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে অবিশ্বাস্যভাবে ম্যাচ হারে বাংলাদেশ।

অথচ এই দলের মধ্যে বয়সে সবচেয়ে তরুণ নাঈম। মাত্র নেমেছিলেন নিজের ক্যারিয়ারের তৃতীয় ম্যাচে। তার চেয়ে অনেক অভিজ্ঞরা ব্যর্থ হওয়ায় ভারতকে হারিয়ে সিরিজ জেতার সম্ভাবনার কবর হয়। টি-টোয়েন্টি সিরিজ শেষে সোমবারই দেশের ফ্লাইট ধরেছেন নাঈম।  তার আগে চোখেমুখে জানিয়ে গেছেন তীব্র আক্ষেপ, ‘আক্ষেপতো অনেক বেশি,  জিততে পারলে জেতা যেতো, অনেক বড় ব্যাপার হতো, অনেক ভালো লাগতো। জিততে পারিনি বলেই খারাপ লাগছে। আর একটা জুটি হলেও হয়তো আমরা জিততে পারতাম।’

১২ রানে দুই উইকেট পড়ে যাওয়ার পর মোহাম্মদ মিঠুনকে এক পাশে নিয়ে ৬১ বলে ৯৮ রানের জুটি গড়েন নাঈম। জুটিতে তিনিই ছিলেন আগ্রাসী। শুরুতে রান পেতে বেশ কিছুটা বেগ পেতে হয় তাকে। প্রথম ১৫ বল থেকে নিতে পেরেছিলেন কেবল ৮ রান। পরে তা পুষিয়েছেন দারুণভাবে। বাকি ৩৩ বলে নিয়েছেন আরও ৭৩ রান।

লেগ স্পিনার যুজভেন্দ্র চেহেলকে টানা তিন চারে শুরু তার সাহসী ব্যাটিং। এরপর ওয়াশিংটন সুন্দর নাঈমের ব্যাটে আছড়ে পড়েন সীমানার ওপারে। একটা সময় মনে হচ্ছিল নিজে সেঞ্চুরি তো পাবেনই, দলও জিতিয়ে আসবেন। কিন্তু হয়নি কিছুই। পেসার শিভম দুভেকে এর আগে খেলছিলেন দারুণ। কিন্তু ভাল এক ইয়র্কারে ফেরত যান, তার বিদায়ে হুড়মুড় করে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশও, ‘আমার কাছে মনে হয় পুরো ইনিংসে ওদের সেরা বল ছিল। আর সেঞ্চুরির জন্য খেলিনাই দল জেতানোর জন্য খেলছিললাম। এই জায়গায় সফল হতে পারিনি, এটা হয়তো খারাপ লাগছে।’

ভারতের বিপক্ষে সিরিজেই অভিষেক হয় নাঈমের। প্রথম ম্যাচে সৌম্য সরকারের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়ার পথে করেছিলেন ২৬ রান। পরের ম্যাচে ৩০ বলে করেন ৩৬। তবে এসব মাঝারি ইনিংস তাকে ঠিক আলোয় আনতে পারছিল না। শেষ ম্যাচে সেসব ছাপিয়ে দেখান নিজের ডাকাবুকো ধরণ।

ভারতের বিপক্ষে এই ইনিংসের পর তারকা তকমা গায়ে লাগা নাঈম দেশে ফিরে আপাতত ইমার্জিং টিম এশিয়া কাপে মন দিবেন। জাতীয় দলে নিজেকে চিনিয়ে বার্তা দিলেও সব জায়গাতেই রাখতে চান ধারাবাহিকতার ছাপ। 

ম্যাচ শেষে সতীর্থদের অভিনন্দন তো পেয়েছেনই। তাকে বাহবা দিতে নিজ থেকে ছুটে এসেছিলেন ধারাভাষ্যের কাজে থাকা হরভজন সিং, ইরফান পাঠানরা। তাতে দগদগে ক্ষতে স্বস্তি মিললে খুব বেশি উপশম হয়নি, 'আমাদের দলের  অনেকে অনেক কিছু বলছে (প্রশংসা), এখানে আমার টিমম্যাট ছাড়াও ওদের কিছু ক্রিকেটার ছিলেন তারাও অভিনন্দন জানিয়েছেন। হারভজন সিং ছিলেন তিনি বলেছেন আমি আর দুই ওভার থাকলে হয়তো ম্যাচ জিততে পারতাম। প্রশংসা করেছে আমার।’

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

5h ago