ছন্দহীন মোস্তাফিজের করণীয় বাতলে দিলেন ইরফান

বাংলাদেশের সেরা বোলিং অস্ত্র মোস্তাফিজুর রহমানের সময়টা মোটেও ভালো যাচ্ছে না। বলা চলে, যাচ্ছেতাই সময় পার করছেন এক সময় প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দেওয়া এই বাঁহাতি। সবশেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভারতের বিপক্ষে পুরোপুরি হতাশ করেছেন কাটার মাস্টার খ্যাত পেসার। তার চেয়েও ভয়ানক ব্যাপার হলো, তার বোলিংয়ে ছিল না কোনো পরিকল্পনা, লাইন-লেংথে ছিল না কোনো ছন্দ। এই কঠিন সময় থেকে উত্তরণের জন্য মোস্তাফিজকে কি কেবল সমর্থন যুগিয়ে যাওয়াটাই যথেষ্ট?
Mustafizur Rahman
মোস্তাফিজুর রহমান। ছবি: বিসিবি

বাংলাদেশের সেরা বোলিং অস্ত্র মোস্তাফিজুর রহমানের সময়টা মোটেও ভালো যাচ্ছে না। বলা চলে, যাচ্ছেতাই সময় পার করছেন এক সময় প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দেওয়া এই বাঁহাতি। সবশেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভারতের বিপক্ষে পুরোপুরি হতাশ করেছেন কাটার মাস্টার খ্যাত পেসার। তার চেয়েও ভয়ানক ব্যাপার হলো, তার বোলিংয়ে ছিল না কোনো পরিকল্পনা, লাইন-লেংথে ছিল না কোনো ছন্দ। এই কঠিন সময় থেকে উত্তরণের জন্য মোস্তাফিজকে কি কেবল সমর্থন যুগিয়ে যাওয়াটাই যথেষ্ট? ভারতের সাবেক পেসার ইরফান পাঠান মনে করছেন, দ্য ফিজের বোলিংয়ের কৌশলেও কিছু পরিবর্তন আনা দরকার।

নাগপুরে সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে উইকেট ছিল মোস্তাফিজের বোলিংয়ের ধরনের সঙ্গে মাননসই। কিন্তু জুতসই উইকেটেও বাজে বল করে দেদার রান দেন মোস্তাফিজ। অথচ একই উইকেটে অন্য দুই বিশেষজ্ঞ পেসার আল-আমিন হোসেন আর শফিউল ইসলাম তো বটেই, অনিয়মিত সৌম্য সরকারও ছিলেন দারুণ। আল-আমিন মাত্র ২২ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ১ উইকেট। শফিউল ৩২ রানে পেয়েছিলেন ২ উইকেট। সৌম্য পঞ্চম বোলারের চাহিদা মিটিয়ে ২৯ রান দিয়ে শিকার করেছিলেন ২ উইকেট। তিনজনই চার ওভার করে বোলিং করেছিলেন। কিন্তু তাদের ভালো বোলিংয়ের ভিড়ে চার ওভারে মোস্তাফিজ দিয়েছিলেন ৪২ রান। পুরো সিরিজে উইকেটশূন্য এই পেসার নাগপুরে প্রচুর আলগা বল দিয়েছেন। বাজে লাইনে করেছেন এক পর এক শর্ট বল।

কেবল শেষ ম্যাচেই নয়। আগের দুই ম্যাচেও চূড়ান্ত হতাশ করেন মোস্তাফিজ। দ্বিতীয় ম্যাচে ৩.৫ ওভার বল করে ৩৫ রান দিয়েছিলেন। প্রথম ম্যাচে পরিস্থিতির কারণে ২ ওভারে ১৫ রান দেওয়ার পর আর বলই হাতে পাননি।

মোস্তাফিজ কেন এমন ধারাবাহিক ছন্দহীন? কীভাবে এই পরিস্থিতি সামলে চেনা রূপে ফিরবেন তিনি? এই দুই জিজ্ঞাসাকে এক বিন্দুতে মিলিয়ে জবাব দিয়েছেন ইরফান। তার দৃষ্টিতে মোস্তাফিজের বোলিংয়ের কৌশলগত দুটি ত্রুটি ধরা পড়েছে। এগুলো নিয়ে কাজ করে শুধরে নিলে ছন্দে ফিরতে পারবেন কাটার মাস্টার, এমন আশাবাদ জানিয়েছেন সাবেক বাঁহাতি ভারতীয় গতি তারকা।

সোমবার (১১ নভেম্বর) গণমাধ্যমের কাছে ইরফান বলেছেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে, আমি বিশ্বাস করি, তাকে ফুলার লেংথে বোলিং করতে হবে। যদি ওর ক্যারিয়ারের দিকে তাকানো যায়, দেখা যাবে, ফুলার লেংথে বোলিং করে ও সবচেয়ে বেশি উইকেট পেয়েছে। ওই লেংথে তার ভ্যারিয়েশনগুলোও খুব কাজে আসে। আরেকটি ব্যাপার খুব গুরুত্বপূর্ণ হলো যে ফলো-থ্রুতে সে ভারসাম্য রাখতে পারছে না, সামনে ঝুঁকে যাচ্ছে। ওর নন-বোলিং আর্ম শরীর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, বিশেষ করে, সে যখন ডেলিভারি দেয়। এটা নিয়ে ওর কাজ করতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে যেন (নন-বোলিং আর্ম) অনুসরণ না করে অর্থাৎ ব্যাটসম্যানের দিকে ঝুঁকে না যায়। যদি ও এটা করতে পারে, বোলিংয়ে ও আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ আনতে পারবে।’

মোস্তাফিজ জোরে বল করার চেষ্টা করছেন বলেও মনে হয়েছে ইরফানের কাছে। তবে তার ভাণ্ডারে যে দক্ষতা ও সামর্থ্য আছে, তাতে খুব বেশি গতিতে বল না করেও সাফল্য পাওয়া সম্ভব বলে জানিয়েছেন এই ভারতীয়, ‘এটা গতির বিষয় না। বিষয়টা হলো সঠিক জায়গায় বল ফেলার।’

উল্লেখ্য, উইকেটবিহীন আর খরুচে সিরিজের পরও মোস্তাফিজের পাশে থাকার কথা আগেই জানিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। বাংলাদেশ অধিনায়ক তৃতীয় টি-টোয়েন্টি শেষে বলেছিলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়, প্রতিটি ক্রিকেটারের জীবনে এ ধরনের সময় আসে, যখন পাঁচ-ছয়টা খেলায় দল যেভাবে চাচ্ছে, হয়তো সেভাবে পারফর্ম করতে পারছে না। আমরা সবাই জানি যে সে চ্যাম্পিয়ন বোলার। ওর কাছ থেকে দল অনেক বেশি প্রত্যাশা করে। অনেক সময় ও হয়তো চাহিদা অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারছে না। তবে আমার মনে হয়, ওকে সমর্থন করা উচিত। যেভাবে ও কষ্ট করছে, কোচের সঙ্গে কথা বলছে, আমার মনে হয়, আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে ওর একটা ম্যাচই যথেষ্ট।’

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

7h ago