সুরের মূর্ছনায় মাতলো শহর
সুরের মূর্ছনায় মেতে উঠলো রাজধানী ঢাকার আর্মি স্টেডিয়াম। কার্তিকের জোছনামাখা রাতে শুরু হওয়া শেকড়লগ্ন গান ও নৃত্যের জমজমাট সমাহার মুগ্ধতা ছড়ায় দর্শক-শ্রোতাদের মনে।
গতকাল (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় শুরু হয় তিনদিনের ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসংগীত উৎসব বা ‘ফোক ফেস্ট ২০১৯’। সান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ও সান কমিউনিকেশনের আয়োজনে মেরিল নিবেদিত এ অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করছে ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড।
স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন প্রায় ৩০ হাজার দর্শক। আয়োজনের শুরুতেই মঞ্চে উঠেন প্রেমা ও ভাবনার নৃত্যদল। ‘আমি রবো না রবো না ঘরে’ গানের সঙ্গে শুরু হয় তাদের নৃত্যের ঝলকানি।
তাদের উপস্থাপনার পরেই মঞ্চে উঠেন জর্জিয়ার শেভেনেবুরেবি। ৭টা ৫০ মিনিটে মঞ্চে উঠেই তারা চিৎকার করে বলে উঠেন ‘হ্যালো বাংলাদেশ’। তাদের চিৎকারে দর্শকসারি থেকেও হই-হুল্লোড় রব উঠে। এরপর শুরু হয় তাদের পরিবেশনা। চমৎকারসব বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে পরিবেশনা করেন তাদের গাওয়া জনপ্রিয় সব গান।
শেভেনেবুরেবির পরিবেশনার পরই শুরু হয় উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা। লোকসংগীত উৎসবের এবারের আসরের উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে এম আবুল কালাম আব্দুল মোমেন এবং তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ।
সেসময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী সৈয়দ মাহবুবুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য দেন সান ফাউন্ডেশন ও সান কমিউনিকেশনের চেয়ারম্যান অঞ্জন চৌধুরী।
অঞ্জন চৌধুরী বলেন, “আমাদের লোকসংগীত আমাদের ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যকে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়ার দায়িত্বও আমাদের। সংগীতের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা থেকেই তিনদিনের এই উৎসবের আয়োজন।”
উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষে মঞ্চে আসেন বাংলা বাউল গানের এক অনন্য শিল্পী, গীতিকার ও সুরকার- শাহ্ আলম সরকার। মঞ্চে উঠেই ‘চিন্তা করো হিন্দু মুসলমান’ গান দিয়ে শুরু হয় তার পরিবেশনা। এরপর একে একে শোনান, ‘বিয়ে করা মানেই জ্যান্ত প্রাণে মরা’, ‘আমি পাগল আপনার জন্য নবী’, ‘আমি যারে ভালোবাসি,’ ‘কাজলের চেয়েও কালো বেশি’, ‘কালার বাঁশীর সুরে মন উদাসী’ এবং ‘আমি তো মরে যাবো চলেই যাবো’।
তারপরেই মঞ্চে আসেন ফোক ফেস্টের প্রথম রাতের মুল আকর্ষণ ভারতের স্বনামধন্য কণ্ঠশিল্পী দালের মেহেন্দি। মঞ্চে উঠেই শুরু করেন ‘না না নারে’ গান দিয়ে। একের পর এক গাইতে থাকেন ‘বোল তারা রা রা’, ‘হো জায়েহি বাল্লে বাল্লে’সহ জনপ্রিয়সহ সব গান। গানের ফাঁকে শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, বাংলাদেশের চিংড়ি, মাছের ঝোলের তরকারি ও আলু ভাজির মজাদার খাবারের প্রতি তার ভালো লাগার কথা।
এরপর বলেন, বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী রুনা লায়লার গানের ভক্ত তিনি। পরে রুনা লায়লার গাওয়া জনপ্রিয় ‘দমাদম মাসকালাদার’ গানটি গেয়ে শোনান।
আজ (১৫ নভেম্বর) উৎসবের দ্বিতীয়দিনে সংগীত পরিবেশনা করবেন বাংলাদেশের কামরুজ্জামান রাব্বি, শফিকুল ইসলাম, মালেক কাওয়াল ও ফকির শাহাবুদ্দিন, পাকিস্তানের হিনা নাসরুল্লাহ এবং মালির হাবিব কইটে ও বামাদা ব্যান্ড।
Comments