সৌম্য-শান্তর আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ভারতকেও সহজে হারাল বাংলাদেশ
ইন্দোরে ভারতের কাছে তিন দিনেই টেস্ট হেরেছে বাংলাদেশ জাতীয় দল। ন্যুনতম প্রতিদ্বন্দ্বিতাটাও করতে পারেনি। এমন দিনে কিছুটা হলেও স্বস্তিদায়ক খবর দিয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দল। সাভারে ইমার্জিং এশিয়া কাপে ভারতের অনূর্ধ্ব-২৩ দলকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছে তারা। ৪৭ বল হাতে রেখেই ভারতকে ৬ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। আর এ জয়ে সেমি-ফাইনালে এক পা দিয়ে রাখল স্বাগতিকরা।
এর আগে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে হংকংয়ের বিপক্ষেও বড় জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে সে ধারা ধরে রাখা ছিল অনেকটাই চ্যালেঞ্জিং। তবে সৌম্য সরকার ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে জয় পেতে কোন বেগ পেতে হয়নি। সহজেই জয় মিলেছে টাইগারদের।
লক্ষ্য তাড়ায় অবশ্য শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। দলীয় ১৫ রানে ব্যক্তিগত ১৪ রান করে সাজঘরে ফিরে যান মোহাম্মদ নাঈম শেখ। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে আরেক ওপেনার সৌম্যর সঙ্গে বাংলাদেশের হাল ধরেন অধিনায়ক শান্ত। গড়েন ১৪৪ রানের দারুণ এক জুটি। মূলত এ জুটিতেই জয়ের ভিত্তিটা পেয়ে যায় বাংলাদেশ। এরপর সৌম্য বিদায় নিলে শান্তর সঙ্গে ৪২ ও আফিফ হোসেনের সঙ্গে ৪১ রানের দুটি জুটি গড়ে দলের জয় প্রায় নিশ্চিত করেন ইয়াসির আলী রাব্বি।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৯৪ রানের ইনিংস খেলেছেন অধিনায়ক শান্ত। ৮৮ বলে ১৪টি চার ও ২টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। সৌম্যর ব্যাট থেকে আসে ৭৩ রান। ৬৮ বলে ৭টি চার ও ৩টি ছক্কায় এ রান করেছেন এ ওপেনার। এছাড়া আফিফের ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ৩৪ রান।
সাভারের বিকেএসপি ব্যাটিং বান্ধব উইকেট। সেখানে দারুণ বোলিং করে ভারতকে ২৪৬ রানে আটকে রেখে কাজটা মূলত এগিয়ে দিয়েছেন বোলাররাই। নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে বড় স্কোর গড়তে দেয়নি সফরকারীদের। টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে শুরুটাও হয় বেশ ভালো। দলীয় ৮৮ রানেই ভারতের প্রথম সারির ৪টি উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। এরপর অবশ্য ভিনায়াক গুপ্তার সঙ্গে আরমান জাফরের দারুণ এক জুটিতে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল ভারত। পঞ্চম উইকেটে স্কোরবোর্ডে ১২৫ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটসম্যান।
তবে ভিনায়াককে ফিরিয়ে এ জুটি ভেঙে বাংলাদেশকে আবার ম্যাচে ফেরান সৌম্য। এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি ভারত। তাদের চেপে ধরে টাইগাররা। শেষ ছয়টি উইকেট তুলে নেয় আর মাত্র ৩৩ রান খরচ করে। যদিও এক প্রান্তে উইকেট তুলে নিতে পারলেও আরেক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন আরমান। করেছেন দারুণ এক সেঞ্চুরিও। এরপর সুমন খানের বলে থামেন তিনি। ৯৮ বলে ৮টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১০৫ রানের ইনিংস খেলেন এ ব্যাটসম্যান। এছাড়া ভিনায়াকের ব্যাট থেকে আসে ৪০ রান।
আগের ম্যাচের মতো এদিনও দারুণ বোলিং করেছেন সুমন। যদিও কিছুটা খরুচে ছিলেন। ৬৪ রান দিয়ে পেয়েছেন ৪টি উইকেট। ৫৩ রান দিয়ে সৌম্যর শিকার ২টি। তবে বেশ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন মেহেদী হাসান। মাত্র ২৬ রান দিয়ে পেয়েছেন ১টি উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত অনূর্ধ্ব-২৩ দল: ৫০ ওভারে ২৪৬ (শরথ ১২, জুয়েল ৩৭, সানবির ২৬, আরমান ১০৫, রাঠোর ০, ভিনায়াক ৪০, চিন্ময় ০, শিভাম ০, শোখেন ১৬, দুবে ৩, দেশাই ০*; হাসান ১/৫১, সুমন ৪/৬৪, টানবির ২/৩৮, সৌম্য ২/৫৩, মেহেদী ১/২৬, আফিফ ০/১৩)।
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দল: ৪২.১ ওভারে ২৫০/৪ (নাঈম ১৪, সৌম্য ৭৩, শান্ত ৯৪, ইয়াসির ২১, আফিফ ৩৪*, জাকির ২; শিভাম ০/৩৮, দুবে ১/৪৪, শোখেন ০/৫২, সানবির ১/৪২, দেশাই ১/৪৯, রাঠোর ১/১৬, ভিনায়েক ০/২)।
ফলাফল: বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দল ৪ উইকেটে জয়ী।
Comments