আজ মিকি মাউসের জন্মদিন
পৃথিবীর কোটি কোটি শিশুর মনোজগতে যে কয়টি চরিত্র গভীরভাবে দাগ কাটে তার মধ্যে রয়েছে কার্টুন চরিত্র মিকি মাউস।
এমন কোনো শিশু কি আদতেই পাওয়া সম্ভব আজকের দিনে যে টেলিভিশন দেখেছে কিন্তু, মিকি মাউস দেখেনি। ছোট শিশু বার্ধক্যে পৌঁছে যাচ্ছে কিন্তু, মিকি মাউস-ই শুধু বুড়ো হয় না। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম মানুষকে নির্মল আনন্দ দিয়ে যাচ্ছে জনপ্রিয় এই কার্টুন চরিত্র।
আজ (১৮ নভেম্বর) বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সেই কার্টুন চরিত্রের জন্মদিন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বেশ মহাসমারোহে পালিত হয় তাদের জন্মদিন।
১৯২৮ সালের এই দিনে পুরো কার্টুন জগতই পাল্টে গিয়েছিলো। কার্টুনের জগতে এসেছিলো একটি ছোট ইঁদুর। স্টিমবোট উইলি নামের একটি শটে তাকে প্রথম দেখতে পাওয়া যায় এবং সেটা ছিলো হাতে আঁকা। ধীরে ধীরে হাতে আঁকা এই কার্টুনে একের পর এক চলমান দৃশ্যের সঙ্গে মিউজিক যোগ হয়৷ ওয়াল্ট ডিজনি ট্রেনে বসেই এঁকে ফেললেন এই ইঁদুর৷ নাম দিলেন মর্টিমার মাউস৷ তার স্ত্রী লিলিয়ান মর্টিমারকে বদলে দিয়ে রাখলেন ‘মিকি’৷ সেই থেকে হয়ে গেল ‘মিকি মাউস’৷
ডিজনির মতে, ১৯২৯ থেকে ১৯৩২ সালের মধ্যেই মিকি মাউসের ফ্যানক্লাবের সদস্য হয় ১০ লাখ শিশু৷ এরপর থেকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম শৈশবের বন্ধু হয়ে উঠলো এই মিকি৷ মিকির বয়স বেড়েছে৷ তাই তার গায়ের গঠনেও পরিবর্তন হয়েছে কিছুটা৷ ভুঁড়ি হয়েছে মিকির৷
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মিকির সাম্রাজ্য ছিনিয়ে নিতে চেয়েছে অনেক কার্টুন চরিত্র। কিন্তু, মিকির কাছে সবই পরাস্ত।
কার্টুন চরিত্র হিসেবে মিকি’র জীবন ১৯৯৪ সালে শেষ হয়ে গেলেও তার প্রভাব বর্তমান জীবনে একটুও কমেনি। রাজনৈতিক জগতে আজও মিকি মাউস বারবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন আন্দোলনের প্রতীক হয়ে ওঠে। যেমন হয়েছিলো ১৯৬৯ সালের প্যারোডি কমিক ‘মিকি মাউস ইন ভিয়েতনাম’-এ।
নির্মল আনন্দ ও সুস্থ বিনোদনের জন্য ছেলে-বুড়ো সবার কাছে মিকি মাউসের চেয়ে বেশি প্রিয় কিছু কি আছে এই পৃথিবীতে? পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে প্রতিদিন এখনো কোটি কোটি মানুষ মিকি মাউস দেখে প্রাণ খুলে হাসে, অপার আনন্দে ভাসে৷
জন্মের সার্থকতা এর চেয়ে বেশি আর কী হতে পারে? মানুষ না হয়েও মানুষের জীবনে এতোটা প্রভাব আর কোন প্রাণী বা চরিত্র কি রাখতে পেরেছে? আমার জানা নেই। রাখলেও সমস্যা নেই। কারণ মিকি মাউস তো মিকি মাউস-ই। তুলনার ঊর্ধ্বে। শুভ জন্মদিন মিকি।
Comments