শৈবাল থেকে পানির ফিল্টার
শৈবাল বা শেওলা, প্রকৃতির এক অবাঞ্ছিত উপকরণ হিসেবেই পরিচিত আমাদের কাছে। বাড়ির দেয়াল-ছাদ থেকে শুরু করে পুকুর, ঝর্না, নদী-নালা, কোথায় নেই শেওলা? কখনো ভেবেছেন শেওলাও হতে পারে আমাদের জীবন রক্ষাকারী? শুনতে অবাক লাগলেও এই অবাঞ্ছিত শেওলাই বাঁচাবে লাখো মানুষের জীবন।
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক ও বিজ্ঞানী শেওলা থেকে উদ্ভাবন করেছেন একধরনের ন্যানোফিল্টার যা পানিকে শতভাগ ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসমুক্ত করতে সক্ষম।
উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিজ্ঞান বিভাগের ন্যানোপ্রযুক্তি ও ফাংশনাল ম্যাটেরিয়ালসের অধ্যাপক আলবার্ট মিহরানিয়ানের নেতৃত্বে তৈরি হয়েছে এই ন্যানো ফিল্টার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল ফিজিক্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের অনারারি প্রফেসর খোন্দকার সিদ্দিক–ই রব্বানী ছিলেন বাংলাদেশে এই ফিল্টার প্রকল্পের সমন্বয়ক।
আর পিথোফোরা নামক দেশীয় এই বিশেষ শৈবাল খুঁজে বের করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞানের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমোজাদ্দেদী আলফেছানী। ফিল্টার কাগজ তৈরি হয়ে আসার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ারা বেগমের নেতৃত্বে পরীক্ষা করা হয় এর কার্যকারিতা। তার সঙ্গে ছিলেন সেন্টার ফর অ্যাডভান্স রিসার্চ ইন সায়েন্সেসের গবেষণা বিজ্ঞানী শারমিন জামান।
আলবার্ট মিহরানিয়ান ও প্রফেসর সিদ্দিক–ই রব্বানীর অনুরোধে আলমোজাদ্দেদী আলফেছানী প্রাথমিকভাবে ক্লেডোফোরা শৈবাল নিয়ে কাজ শুরু করলেও এর বৃদ্ধি অনেক কম হওয়ায় তিনি মিহরানিয়ানকে পিথোফোরা নামক একটি দেশিও শৈবাল নিয়ে কাজ করতে অনুরোধ করেন। পরবর্তীতে সেই পিথোফোরা শৈবাল থেকেই তৈরি হল জীবন রক্ষাকারী ন্যানো ফিল্টার।
এ.সি.এস. পাবলিকেশনের আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক জার্নালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, এই উদ্ভাবন বাংলাদেশের মানুষকে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসমুক্ত পানি দিয়ে বাঁচাতে পারবে লাখো মানুষের প্রাণ।
তবে সাধারণ মানুষের ব্যাবহার উপযোগী করতে এই ফিল্টারকে পাড়ি দিতে হবে আরও খানিকটা পথ। বিস্তারিত দেখুন স্টার লাইভের ভিডিওটিতে।
Comments