বর্ণাঢ্য উৎসবের মাঝে অপ্রস্তুত বাংলাদেশ

গোলাপি বলের টেস্ট ঘিরে কলকাতায় করা হয়েছিল বিপুল আয়োজন। উড়ে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ছিলেন সাবেক তারকা ক্রিকেটাররা। উৎসবের রঙে রাঙানো হয়েছিল পুরো শহর, টেস্ট ক্রিকেটেও ভরপুর ছিল গ্যালারি। এতসব আয়োজনের মাঝে বাংলাদেশ দলকেই লাগল বেমানান। গোলাপি বলে হুট করে নেমে পড়ার অপ্রস্তুত ভাবটা প্রকট হয়েছে ম্যাচ শুরু পর থেকেই। অল্প রানে অলআউট, দুই কনকাশন বদলি মিলিয়ে রীতিমতো ছেড়ে দেয় মা কেঁদে বাঁচি দশা। দিনশেষে যা অবস্থা তাতে এই ম্যাচের চতুর্থ দিনের টিকেটের টাকা ফেরত চাইতে পারেন দর্শকরা।

গোলাপি বলের টেস্ট ঘিরে কলকাতায় করা হয়েছিল বিপুল আয়োজন। উড়ে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ছিলেন সাবেক তারকা ক্রিকেটাররা। উৎসবের রঙে রাঙানো হয়েছিল পুরো শহর, টেস্ট ক্রিকেটেও ভরপুর ছিল গ্যালারি। এতসব আয়োজনের মাঝে বাংলাদেশ দলকেই লাগল বেমানান। গোলাপি বলে হুট করে নেমে পড়ার অপ্রস্তুত ভাবটা প্রকট হয়েছে ম্যাচ শুরু পর থেকেই। অল্প রানে অলআউট, দুই কনকাশন বদলি মিলিয়ে রীতিমতো ছেড়ে দেয় মা কেঁদে বাঁচি দশা।  দিনশেষে যা অবস্থা তাতে এই ম্যাচের চতুর্থ দিনের টিকেটের টাকা ফেরত চাইতে পারেন দর্শকরা।

টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সাহস দেখিয়ে বাংলাদেশ অলআউট ১০৬ রানে। মাত্র ৩০ ওভার স্থায়ী ইনিংস টিকেছে কেবল ১৭৪ মিনিট। ব্যাটসম্যানদের কাঁপাকাঁপি, বারবার পরাস্ত হওয়া, হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়া দেখা গেছে দৃষ্টিকটুভাবে।

ফিল্ডিংয়ে ক্যাচ পড়েছে, ভারতের মতো আগ্রাসন দেখা যায়নি বোলিংয়েও। দিনশেষে তাই  ৩ উইকেটে ১৭৪  রান তুলে তাই ভারত এগিয়ে গেছে ৬৮ রানে। এই প্রথম দিন শেষেই যে কেউ ধারণা করে নিতে পারেন এই ম্যাচের ফল।

বাংলাদেশের পুরো ইনিংস যেন উইকেট পতনের হাইলাইটস। মাত্র তিনজন ব্যাটসম্যান যেতে পেরেছেন তিন অঙ্কে। এরমধ্যে ২৪ করা লিটন দাস আর ১৯ করা নাঈম হাসান মোহাম্মদ শামির বাউন্সারে আঘাত পেয়ে ছিটকে গেছেন ম্যাচ থেকেই। তাদের বদলি হিসেবে নেওয়া হয়েছে মেহেদী হাসান মিরাজ আর তাইজুল ইসলামকে। বোলার নাঈমের বদলি হিসেবে নামা তাইজুল বল করতে পারলেও ব্যাটসম্যান লিটনের বদলি নামা মিরাজ বল করতে পারবেন না। এতে স্কোয়াডে একজন ব্যাটসম্যান বাড়তি না থাকারও মাশুলও দিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এতটাই অপ্রস্তুত যে স্কোয়াডে একজন বিকল্প ব্যাটসম্যান রাখার কথাও ভাবেনি!

কোন রকম প্রস্তুতি ম্যাচের অভিজ্ঞতা ছাড়াই ভারতের দেওয়া গোলাপি বলে টেস্টের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায় বাংলাদেশ। প্রস্তুতি ঘাটতি নিয়ে ক্রিকেটারদের ছিল অস্বস্তি, কোচ জানিয়েছিলেন আক্ষেপ। তার প্রতিফলনই দেখা গেল প্রথম দিনে।

টস জিতে আগে ব্যাট করতে গিয়ে দুই ওপেনার প্রথম ছয় ওভার দেখেশুনেই পার করে দিয়েছিলেন। কিন্তু মুভমেন্ট পেয়ে ক্রমেই ভয়ংকর হয়ে যাওয়া ইশান্ত শর্মাকে সামলাতে পারেননি। ইমরুল কায়েসকে দিয়েই শুরু।  ইশান্তে বারকয়েক পরাস্ত হয়ে, একবার রিভিউ নিয়ে বেঁচেও শেষ রক্ষা হয়নি তার।

মুমিনুল হক কাবু উমেশ যাদবের গতি-মুভমেন্টে। তিনে নামা মুমিনুল, চারে মোহাম্মদ মিঠুন আর পাঁচে নামা মুশফিকুর রহিম ফেরেন কোন রান না করেই। মুমিনুল ক্যাচ দেন স্লিলে। বাকি দুজন আউট হয়েছেন প্রায় একইভাবে। যাদবের বল ভেতরে ঢুকিয়ে বোল্ড মিঠুন, শামির বলে ব্যাট-প্যাডে ফাঁক রেখে দুর্বল রিফ্লেক্সে বোল্ড মুশফিক। পরে মাহমুদউল্লাহ উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেওয়ার আগে করেন মাত্র ৬। ৩৮ রানেই নেই ৫ উইকেট। যার মধ্যে একাই ২৯ রান করে ফেরেন সাদমান ইসলাম।

চরম বিপর্যস্ত অবস্থায় নেমে লিটনই ছিলেন স্বচ্ছন্দ। নেমেই চোখ জুড়ানো বাউন্ডারিতে দিচ্ছিলেন ভরসা। কিন্তু ২১তম ওভারে ঘটে বিপদ। মোহাম্মদ শামির বাউন্সার পুল করতে গিয়ে ব্যাটে নিতে পারেননি। বল সজোরে আঘাত হাতে লিটনের হেলমেটে। মাথায় পাওয়া আঘাতে কিছুক্ষণ মাঠেই চলে চিকিৎসা। পরে উঠে দাঁড়িয়ে পরের বলেই শামির আরেক বাউন্সারে পুল করে সীমানা ছাড়া করেন তিনি।

পরে ইশান্তকেও মারেন চার। মনে হচ্ছিল ঠিকই আছেন তিনি। কিন্তু হুট করে আগের আঘাতে পাওয়া অস্বস্তিতে ভুগতে থাকায় মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। প্রথম সেশনের পর নেওয়া হয় লিটনের কনকাশন বদলি। একইসময় শামির বলেই আঘাত পাওয়া নাঈম খেলা চালিয়ে ১৯ রান করে আউট হন। বাংলাদেশ ফিল্ডিংয়ে নামলে দেখা যায় তিনিও নেই। তার বদলে কনকাশন বদলে তাইজুল ইসলাম।

এক টেস্টে দুজন কনকাশন বদলি, বাইরে থাকা সাইফ হাসানও ভুগছেন আঙুলের চোটে। বদলি ফিল্ডার হিসেবে বাইরে বসে আছেন কেবল মোস্তাফিজুর রহমান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

(প্রথম দিন শেষে)

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস  ১০৬  (সাদমান ২৯, ইমরুল ৪, মুমিনুল ০, মিঠুন ০, মুশফিক ০ , মাহমুদউল্লাহ ৬, লিটন আহত অবসর ২৪, নাঈম ১৯, ইবাদত ১, মিরাজ (কনকাশন বদলি) ৮ , আল-আমিন ১, জায়েদ ০ ; ইশান্ত ৫/২২ , যাদব ৩/২৯ , শামি ২/৩৬, জাদেজা ০/৫ )

ভারত প্রথম ইনিংস:  ৪৬ ওভারে ১৭৪/৩  (মায়াঙ্ক ১৪, রোহিত ২১, পূজারা ৫৫ , কোহলি ব্যাটিং ৫৯*, রাহানে ব্যাটিং ২৩*   ; আল-আমিন ১/৪৯ , রাহি ০/৪০, ইবাদত ২/৬১ , তাইজুল ০/২৩ )

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

4h ago