ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে হেরে গেল বাংলাদেশ

ইমার্জিং এশিয়া কাপের প্রথম দুই আসরের ফাইনালিস্ট পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-২৩ দল। কিন্তু শিরোপার দেখা মেলেনি। মাঝে এক আসর পর ফের ফাইনালে দলটি। অন্যদিকে, প্রথমবারের মতো ফাইনালে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দল। মোড়কটা বয়সভিত্তিক দলের হলেও আদতে জাতীয় দলই বলা চলে। তার উপর আবার নিজেদের মাঠে খেলা। তাই প্রথমবারেই প্রত্যাশাটা ছিল বেশ উঁচুতে। কিন্তু স্বপ্নটা পূরণ হয়নি বাংলাদেশের। গ্রুপ পর্ব ও সেমি-ফাইনালে দারুণ খেললেও ফাইনালে ভেঙে পড়ে দলটি। স্বাগতিক উদীয়মানদের ৭৬ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতে নেয় পাকিস্তান।
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

ইমার্জিং এশিয়া কাপের প্রথম দুই আসরের ফাইনালিস্ট পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-২৩ দল। কিন্তু শিরোপার দেখা মেলেনি। মাঝে এক আসর পর ফের ফাইনালে দলটি। অন্যদিকে, প্রথমবারের মতো ফাইনালে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দল। মোড়কটা বয়সভিত্তিক দলের হলেও আদতে জাতীয় দলই বলা চলে। তার উপর আবার নিজেদের মাঠে খেলা। তাই প্রথমবারেই প্রত্যাশাটা ছিল বেশ উঁচুতে। কিন্তু স্বপ্নটা পূরণ হয়নি বাংলাদেশের। গ্রুপ পর্ব ও সেমি-ফাইনালে দারুণ খেললেও ফাইনালে ভেঙে পড়ে দলটি। স্বাগতিক উদীয়মানদের ৭৭ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতে নেয় পাকিস্তান।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) পাকিস্তানের ছুঁড়ে দেওয়া ৩০২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় একটু বেশিই তাড়া ছিল বাংলাদেশের। বড় লক্ষ্য ছিল বলেই হয়তো। প্রায় প্রতি বলেই মারতে চেয়েছেন দুই ওপেনার। আর জায়গায় দাঁড়িয়ে শট খেলতে গিয়ে খেসারত দিয়েছেন দুজনই। দলীয় ৪১ রানে সাজঘরে ফেরেন তারা। দলীয় ৪১ রানে দুই ওপেনারের বিদায় হয়েছিল পাকিস্তানেরও। পার্থক্য হলো- শুরুর বিপর্যয় সামলে কীভাবে ব্যাটিং করে ইনিংস গড়তে হয় তা দেখিয়ে দিয়েছেন পাকিস্তানের অনভিজ্ঞ তরুণরা। আর জাতীয় দলের জার্সিতে খেলার অভিজ্ঞতা থাকার পরও তা করতে পারেননি বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা।

জাতীয় দলে খেলা ছয় খেলোয়াড় এদিন ছিলেন বাংলাদেশের একাদশে। স্কোয়াডে আছেন আরও দুজন। সৌম্য সরকার এর আগে ২০১৩ সালে প্রথম ইমার্জিং কাপেও খেলেছেন। অভিজ্ঞ এ খেলোয়াড় এবার আসর জুড়ে খেলছিলেনও দারুণ। কিন্তু ফাইনালে দলের প্রয়োজনের দিনে পারলেন না। শুধু তিনিই নন, পারেননি আর কেউই। টানা তৃতীয়বার ইমার্জিং কাপে খেলছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। আফিফ হোসেন ও তানভির ইসলামেরও দ্বিতীয় আসর। তবে পাকিস্তান দলেও যে জাতীয় দলের খেলোয়াড় নেই, তা নয়। মোহাম্মদ হাসনাইন ও খুশদিল শাহ খেলেছেন জাতীয় দলের জার্সিতে। তবে টাইগারদের তুলনায় তা নগণ্যই বলা চলে।

ম্যাচের পার্থক্য আসলে গড়ে দিয়েছে টাইগারদের ক্যাচ মিসই। এদিন ক্যাচ মিস হয়েছে ৪টি। যার ৩টিই করেছেন ইয়াসির আলী রাব্বি। তার একটি আবার রোহাইল নাজিরের। ২৩ রানে জীবন পেয়ে এ ব্যাটসম্যান খেলেছেন ১১৩ রানের ইনিংস। ব্যক্তিগত ৭৮ রানেও তাকে ফেরানোর সুযোগ ছিল। সেবার তার ক্যাচ মিস করেন তানভির। আর সে সুযোগে সেঞ্চুরি তো তুলেছেনই তিনি, গড়েছেন বড় দুটি জুটি। বাংলাদেশের লক্ষ্যটা তাই দাঁড়ায় বেশ বড়ই।

বিপরীতে এদিন দারুণ ফিল্ডিং দিয়েছে পাকিস্তান। সিনিয়র সতীর্থদের ব্যর্থতার পর আফিফ কিছুটা দায়িত্ব নিয়ে খেলছিলেন। এক প্রান্ত আগলে রেখে বাংলাদেশের স্বপ্নটা ধরে রেখেছিলেন। কিন্তু হাফসেঞ্চুরির এক রান আগে দুর্দান্ত এক ক্যাচ ধরে তাকে ফেরান সামিন গুল। হাসনাইনের বাউন্সারে আপার কাট করে দিয়েছিলেন আফিফ। থার্ডম্যান থেকে অনেকটা দৌড়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে ক্যাচ লুফে নেন সামিন। কার্যত তখনই হেরে যায় বাংলাদেশ।

এরপর কিছুটা চেষ্টা করেছিলেন মেহেদী হাসান। ৪২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। কিন্তু তার লড়াই কেবল হারের ব্যবধান কমিয়েছে। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৯ রান করেছেন আফিফ। অধিনায়ক শান্তর ব্যাট থেকে আসে ৪৬ রান। পাকিস্তানের হয়ে ৩২ রানের খরচায় ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন হাসনাইন, এছাড়া খুশদিল ও সাইফ বাটের শিকার ২টি করে উইকেট।

মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে সকালে টস জিতে বাংলাদেশকে প্রাণবন্ত সূচনা এনে দিয়েছিলেন পেসার সুমন খান। দুই ওপেনারকে সাজঘরে ফেরান দলীয় ৪১ রানেই। ভাগ্যও সঙ্গে ছিল। কারণ আউট হওয়ার পর বাহু দেখিয়ে মাঠ ছাড়ছিলেন ওমর ইউসুফ। রিপ্লেতেও দেখা গিয়েছে, বল ব্যাটে নয়, বাহুতে লেগেছিল তার। তবে সুমনের বলটিও ছিল দারুণ। এক্সট্রা বাউন্সের সঙ্গে দারুণ আউট সুইং। আর আরেক ওপেনার হায়দার আলি পুল করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ দেন নাঈম শেখের হাতে।

কিন্তু এরপর আর সে ধারাটা ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। শুরু হয় টাইগারদের সংগ্রাম। আর নাজিরের ক্যাচ নিতে না পারার ব্যর্থতায় সেটা আরও দীর্ঘায়িত হয়। তৃতীয় উইকেটে ইমরান রফিককে নিয়ে ১১৭ রানের জুটি গড়েন নাজির। এ জুটি ভাঙলে সাউদ শাকিলের সঙ্গে আরও একটি দারুণ জুটি গড়েন তিনি। স্কোর বোর্ডে ৮৫ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটসম্যান। তাতেই বড় স্কোরের ভিত পেয়ে যায় পাকিস্তান। শেষ দিকে শাকিল ও খুশদিল ঝড়ো ব্যাটিংয়ে পূর্ণতা এনে দেন। ফলে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩০১ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান।

১১১ বলে দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১১৩ রানের ইনিংস খেলেন নাজির। ১২টি চার ও ৩টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান তিনি। রফিকের ব্যাট থেকে আসে ৬২ রান। এছাড়া অধিনায়ক শাকিল ৪২ রান করেন। বাংলাদেশের পক্ষে ৭৫ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নেন সুমন। ২টি উইকেট পেয়েছেন হাসান মাহমুদ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-২৩ দল: ৫০ ওভারে ৩০১/৬ (ইউসুফ ৪, হায়দার ২৬, নাজির ১১৩, রফিক ৬২, শাকিল ৪২, খুশদিল ২৭, বাট ১৫*, সাইফ ০*; হাসান ২/৫২, সুমন ৩/৭৫, মেহেদী ১/৩৯, সৌম্য ০/৭৬, তানভির ০/৪৩, আফিফ ০/১৫)

বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দল: ৪৩.৩ ওভারে ২২৪ (নাঈম ১৬, সৌম্য ১৫, শান্ত ৪৬, ইয়াসির ২২, আফিফ ৪৯, জাকির ৯, অঙ্কন ৫, মেহেদী ৪২, সুমন ৩, হাসান ৮, তানভির ৫*; সামিন ১/৪৩, হাসনাইন ৩/৩২, বাট ১/২৯, উমর ১/৫২, খুশদিল ২/৩৯, সাইফ ২/২৭)

ফল: পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-২৩ দল ৭৭ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: রোহাইল নাজির (পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-২৩ দল)।

Comments

The Daily Star  | English

S Alam sons: They used fake pay orders even to legalise black money

Ashraful Alam and Asadul Alam Mahir, two sons of controversial businessman Mohammed Saiful Alam, deprived the state of Tk 75 crore in taxes by legalising Tk 500 crore in undisclosed income, documents obtained by The Daily Star have revealed.

1h ago