কলকাতায়ও তিন দিনে ইনিংস হার বাংলাদেশের
ইন্দোরে সিরিজের প্রথম টেস্টে তিন দিনের মধ্যে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। কলকাতায় দ্বিতীয় টেস্টেও পুনরাবৃত্তি হলো একই ঘটনার। ভারতীয় পেসারদের স্যুয়িং আর মুভমেন্টে নাজেহাল হয়ে নিজেদের স্কিলের ঘাটতির প্রকাশ ঘটিয়ে বাংলাদেশ হেরেছে ইনিংস ও ৪৬ রানের বিশাল ব্যবধানে। ফলে দুই ম্যাচের সিরিজে মুমিনুল হকদের হোয়াইটওয়াশ করে তৃপ্তির ঢেকুর তুলেছেন বিরাট কোহলিরা।
রবিবার (২৪ নভেম্বর) ইডেন গার্ডেন্সে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের তৃতীয় দিনে বাংলাদেশের ইনিংস টিকেছে মাত্র ৫২ বল। তারা যোগ করতে পেরেছে ৪৩ রান। হারিয়েছে ৩ উইকেট। হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পাওয়া মাহমুদউল্লাহ আর ব্যাটিং করতে না নামায় ১৯৫ রানে নবম উইকেটের পতন হওয়ার পর শেষ হয়েছে বাংলাদেশের ভোগান্তি।
৫৯ রান নিয়ে খেলতে নামা মুশফিকুর রহিম দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৪ রান করেছেন ৯৬ বল খেলে। তার ইনিংসে ছিল ১৩ চার। এদিন বাংলাদেশের পতন হওয়া সবকটি উইকেট নিয়েছেন উমেশ যাদব। সবমিলিয়ে ৫৩ রানে তার শিকার ৫ উইকেট। ইশান্ত ৪ উইকেট নেন ৫৬ রানে। প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট পেয়েছিলেন তিনি।
ম্যাচের প্রথম দিনে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ইনিংসে মাত্র ৩০.৩ ওভার খেলতে পেরেছিল বাংলাদেশ। গুটিয়ে গিয়েছিল ১০৬ রানে। জবাবে ভারত ৯ উইকেটে ৩৪৭ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে। ২৪১ রানে পিছিয়ে থেকে আবার ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয়েছে ১৯৫ রানে।
বাংলাদেশকে হারিয়ে নতুন রেকর্ডও গড়েছেন কোহলিরা। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো টানা ৭ ম্যাচে জেতার কীর্তি গড়েছে ভারত। রেকর্ডের শেষ নয় এখানেই। এই নিয়ে টানা চার টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে জিতেছে ভারত। বাংলাদেশকে দুবার ইনিংস ব্যবধানে হারানোর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সবশেষ সিরিজের শেষ দুটি ম্যাচেও একই কায়দায় জিতেছিল ভারত। টেস্ট ইতিহাসে টানা চার ম্যাচে ইনিংসে জেতার এটাই প্রথম নজির।
দিনের দশম ডেলিভারিতে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তখনও স্কোরবোর্ডে আগের দিনের সংগ্রহের সঙ্গে যোগ হয়নি কোনো রান। যাদবের লাফিয়ে ওঠা বল থেকে চোখ সরিয়ে নিয়েছিলেন ইবাদত হোসেন। তার ব্যাটের হাতলে লেগে বল চলে যায় উইকেটের পেছনে। তৃতীয় স্লিপে সহজ ক্যাচ নেন ভারত দলনেতা কোহলি।
মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিংয়ে নামার পরিস্থিতি না থাকায় এবং অন্যপ্রান্তে সঙ্গীর অভাবে মুশফিক শুরু থেকেই আগ্রাসী ছিলেন। সেই চেষ্টাতেই উমেশের ডেলিভারি উড়িয়ে মারতে গিয়ে কাভারে রবীন্দ্র জাদেজার হাতে ক্যাচ দেন তিনি। এরপর বাংলাদেশের ইনিংসের সমাপ্তি হওয়াটা ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র।
ভারতকে অপেক্ষা করতে হয়নি বেশিক্ষণ। ইনিংসের ৪২তম ওভারের প্রথম বলে আল-আমিন হোসেনকে উইকেটরক্ষক ঋদ্ধিমান সাহার ক্যাচে পরিণত করেন উমেশ। ৫ চারে ২০ বলে ২১ রান করেন আল-আমিন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৩০.৩ ওভারে ১০৬
ভারত ১ম ইনিংস: ৮৯.৪ ওভারে ৩৪৭/৯ (ইনিংস ঘোষণা)
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: (আগের দিন ১৫২/৬) (সাদমান ০, ইমরুল ৫, মুমিনুল ০, মিঠুন ৬, মুশফিক ৭৪, মাহমুদউল্লাহ ৩৯ (আহত অবসর), মিরাজ ১৫, তাইজুল ১১, ইবাদত ০, আল-আমিন ২১, আবু জায়েদ ২*; ইশান্ত ৪/৫৬, উমেশ ৫/৫৩, শামি ০/৪২, অশ্বিন ০/১৯, জাদেজা ০/৮)
ফল: ভারত ইনিংস ও ৪৬ রানে জয়ী।
সিরিজ: দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয়ী ভারত।
Comments